সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পেগাসাস স্পাইওয়ার কি ?

গত কিছুদিন ধরেই বিশ্ব রাজনীতি এবং প্রযুক্তি জগৎ এই দুই জায়গাতেই আলোচনার বিষয়বস্তু একটাই। সেটা হচ্ছে পেগাসাস স্পাইওয়ার. বিশ্বজুড়ে নানান দেশের মানবাধিকার কর্মী সাংবাদিক আইনজীবী ও রাজনীতিকদের ফোনের নজরদারি চালানোর ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ইজরায়েলের বেসরকারি কোম্পানি nso গ্রুপের তৈরি করা এই সফটওয়্যার নিয়ে এখন তুমুল তরজা চলছে দুনিয়া জুড়ে । চলুন কথা বলি দুনিয়া ওলট পালট করে দেওয়া স্পাইওয়ার সম্পর্কে ।


পেগাসাস মূলত একটি নজরদারি বিষয়ক সফটওয়্যার । ইজরাইলের সংস্থা এনএসও ই সফটওয়্যার তৈরি করেছে। যা দিয়ে যে কারো মোবাইলে আড়ি পাতা যায়. এটা কিন্তু সাধারণ কোন নজরদারি নয়. আগে ফোনে আড়ি পেতে শুধু দুই প্রান্তের কথাবার্তা শোনা যেত. আর সফটওয়্যারের মাধ্যমে গোটা ফোনটারই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হ্যাকাররা. ফোনের কথাবার্তা WhatsApp এর চ্যাট, ছবি, ফোনে কি কি তথ্য আছে সবই জানা যায়. আরো ভয়ানক ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল যিনি ব্যবহার করছেন তিনি জানতেই পারেন না যে তার ফোন হ্যাক করা হয়েছে. সমস্ত তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর কাছে. কিন্তু কারো ফোনে পেগাসাস software install করতে হলে তো সেই ফোনটাকে আগে হাতের নাগালে পেতে হবে. তাই না? এখানেও মেগাসাস অন্য যে কোনো হ্যাকিং সফটওয়্যারের চাইতে শত গুণ উন্নত. সাধারণ হ্যাকিং সফটওয়্যারের ইমেইল বা অন্য কোন মাধ্যমে হ্যাকরদের তরফ থেকে একটি ওয়েবসাইটের লিঙ্ক পাঠানো হয়. সেই স্প্যাম লিংকে ক্লিক করলেই সফটওয়্যারটি ডাউনলোড হয়ে যায়. পেগাসাসে নতুন যেটা আছে সেটা হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস বা ভিডিও কল করেও এই সফটওয়্যারের যেকোনো ফোনে ইন্সটল করা যায়. ধরুন আপনার WhatsApp এ Unknown নাম্বার থেকে একটা কল এলো. আপনি সেটা রিসিভ করলেন. 

আপনার অজান্তেই ফোনে ইন্সটল হয়ে যাবে এই সফটওয়্যার আপনি জানতেও পারবেন না. ফোনের ভেতরে ভয়ানক এক গুপ্তচরকে নিয়ে ঘুরছেন আপনি. পেগাসাস নামের এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে কি কি করা যায় শুনলে চমকে উঠবেন যে কেউ. প্যাগাসিসের মাধ্যমে আপনার ফোনে রাখা সমস্ত তথ্য ভান্ডার চলে যাবে অন্যের হাতে. আপনার ফোনে ঢুকে হ্যাকাররা কথা রেকর্ড করতে পারবে. জিপিএস ট্র্যাক করে আপনার লোকেশন জেনে নিতে পারবে. গোপনে আপনার ক্যামেরা অন করতে পারবে। ম্যাসেজ করতে পারবে, হোয়াটস্যাপ মেসেজ দেখতে পারবে, সমস্ত পেগাসাস জেনে নিতে পারবে. শুধু তাই নয়, আপনাকে ফাঁসানোর জন্য চাইলে আপনার ফোনে ষড়যন্ত্রমূলক কোন ছবি, ভিডিও কিংবা ফাইলও রেখে দেওয়া যাবে. পরে পুলিশ এসে টুটি চেপে ধরবে আপনার. এই কারণেই পেগাসাস কে বলা হচ্ছে দুনিয়ার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সফটওয়্যার. আপনি হয়তো ভাবছেন আরে আমি তো লাখ টাকা দামের আইফোন ব্যবহার করি. এই ফোনের সিকিউরিটি সিস্টেম খুব শক্তিশালী. তাহলে আপনি বোকার স্বর্গে আছেন. প্যারাসাসের সফটওয়্যারের কাছে অ্যান্ড্রয়েডও যা আইফোনও তা . l 


আইফোনের নিরাপদ সিকিউরিটি সিস্টেম ভাঙতেও এর জুরি নেই. আবার অনেকে ভেবে বসছেন হোয়াটসঅ্যাপ বা টেলিগ্রামের ম্যাসেজ তো পেগাসাস করা. সেন্ডার এবং রিসিভার ছাড়া অন্য কারো পক্ষে সেগুলো পড়া সম্ভব নয়. ভুল. আপনার ফোনে পেকেসাস স্পাইভার ইন্সটল করে দিলে সব WhatsApp বা টেলিগ্রামের ম্যাসেজও অনায়াসে দখল নিতে পারবে হ্যাকাররা. শুধু তাই নয় আপনার অজান্তেই কাউকে মেসেজ পাঠাতেও পারবে মেসেজ রিসিভ করে আপনি দেখার আগে সেটা ডিলিটও করে ফেলতে পারবে. আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে কিভাবে এই অসাধ্য সাধন করে ছোট্ট একটা সফটওয়্যার? আপনাদের একটু অতীতে নিয়ে যাচ্ছি. বেশি দূরে নয়. দু হাজার ষোলো সালে. সে বছরই পেগাসাদের প্রথম দিককার একটি সংস্করণের কথা গবেষকরা জানতে পারেন. সেই সময় নির্দিষ্ট ব্যক্তির ফোনে টেক্সট মেসেজ বা ইমেল পাঠানো হতো. যাতে থাকতো কোন লিঙ্ক. সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই ফোনের দখল নিতো পেগাসাস. কিন্তু সেই সময়ের তুলনায় এনএসও তাদের এই নজরদারির যন্ত্রের অনেক উদ্ভাবন ঘটিয়েছে. এখন লিংকে ক্লিক না করলেও ফোনের দখল নিতে পারে পেগাসাস. আবার সফটওয়্যারের ত্রুটি বা বাগ ব্যবহার করেও এই স্পাইওয়ার ঢুকে পড়তে পারে ফোনে কোনো ত্রুটির কথা হয়তো ফোন প্রস্তুতকারকও জানেন না।

 দু হাজার উনিশ সালে হোয়াটস্যাপ জানিয়েছিল ওই ধরনের ত্রুটির সুযোগ নিয়ে এনএসওর সফটওয়্যার চোদ্দোশো ফোনে ম্যালওয়্যার পাঠিয়েছিল। সেই জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তির ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে শুধু একটি কল করা হতো। আর এই কলের মধ্য দিয়েই পেগাসাসের কোড ফোনে ইনস্টল হয়ে যেত। সাম্প্রতিক সময়ে অ্যাপেলের আই মেসেজ সফটওয়্যারের বাগ ব্যবহার করে স্পাইওয়ার পাঠানো শুরু করে এমএসও. সাধারণত ফোন কেনার সময় ইন্সটল করা থাকে এরকম কোন সফটওয়্যার. যেমন আই মেসেজ অথবা খুব জনপ্রিয় কোনো software যেমন WhatsApp । এসব software এর coding এর খুঁটি খুঁজে বের করে NSO এর মত কোম্পানি গুলো. কারণ তাতে একসঙ্গে বহু ফোনে spy weight সরানোর সুযোগ পাওয়া যায়. এ ধরনের ক্ষেত্রে ফোনের মালিক স্পাইওয়ারবাহী মেসেজে ক্লিক না করলেও তার ফোন অটোমেটিক হ্যাকড হয়ে যায়. ভিক্টিমদের ফোনের ফরেনসিক অ্যানালাইসিস করে দেখা গেছে সাধারণ কৌশলে কাজ না হলে টার্গেটের আশপাশ থেকে কোন ওয়ারলেস ট্রান্সমিশন ব্যবহার করেও নির্দিষ্ট ফোনে পেগাসাস ঢুকিয়ে দেওয়া যায়. একবার ফোনে ঢুকে পড়তে পারলেই এই স্পাইওয়ার প্রায় সব ধরনের তথ্য বা ফাইল কব্জা করার সুযোগ পায়. এসএমএস, এড্রেস বুক, কল হিস্ট্রি, ক্যালেন্ডার, ইমেল এবং ইন্টারনেটের ব্রাউজিং ও হিস্ট্রি সব সে দেখতে পারে. পেগাসাস, যখন কোন আইফোনে সফলভাবে আক্রমণ করে তখন সফটওয়্যারটি ওই ফোনের বা ডিভাইসের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ পাওয়ার পেয়ে যায়. ফোনের মালিক যা করতে পারেন পেগাসাস তার চেয়েও অনেক বেশি কিছু করতে পারে. 



পেগাসাস কারা ব্যবহার করে? অর্থাৎ এর ক্রেতা কারা? এখানে একটা তথ্য জানিয়ে রাখি পেগাসাদের সার্ভিস কিনতে চার কোটি টাকার মতো খরচ হয়. আর প্রতি দশ জনের ফোনে ইন্সটল করতে পাঁচ কোটি টাকা করে গুনতে হয়. প্রশ্ন আসে এমন সফটওয়্যার বানানোর দরকার কি ছিল? কারা কোটি কোটি টাকা খরচ করে এই স্পাইওয়ার ব্যবহার করে. আর কেনই বা করে? কাদের ফোনেই বা আড়ি পাতা হয় এনএসও দাবি করছে তারা পেগাসাস সফটওয়্যার তৈরি করেছে যাতে বিভিন্ন দেশের সরকারি গোয়েন্দা বিভাগ এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এটা ব্যবহার করে জঙ্গি সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে পারে। ম্যাক্সিকো সরকার দাবি করছে যে তারা এই পেগাসাস ব্যবহার করে সেখানকার ড্রাগ লর্ড এলচ্যাপুকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে কিন্তু এটা কেবল মুদ্রার একটা পিঠ এই সফটওয়্যারটার বেশিরভাগ দেশে ব্যবহৃত হয় শুধুমাত্র বিরোধী দলের রাজনীতিবিদ এবং ভিন্ন মতাবলম্বী লোকেদের নজরদারিতে রাখার জন্য। এই পেগাসাস সফটওয়্যারের মাধ্যমেই যেমন ভারত সরকার বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধীর ফোনে আড়ি পেতেছিল বলে জানা গেছে. শুধু রাহুলই নন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, সাংবাদিক অ্যাক্টিভিস্ট এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা সহ প্রায় তিনশো লোকের উপর পেগাসিসের মাধ্যমে নজরদারি চালানোর অভিযোগ আছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে. এদের সবাই সরকারের বিরোধী হিসেবে পরিচিত. অর্থাৎ জনগণের ট্যাক্সের টাকায় সরকারগুলো নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য বিরুদ্ধ মতাবলম্বীদের ওপর স্পাইগিরি চালাচ্ছিল দিনের পর দিন ধরে. এই যে বাংলাদেশে কয়দিন পর পরই ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা ঘটে. 

Facebook এ সেসব নিয়ে মজা করার পাশাপাশি কখনো কি ভেবেছেন? এতে করে যে নাগরিকদের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে. আপনার টাকা খরচ করে যে মানুষের ব্যক্তিগত গোপীনিয়তা লঙ্ঘন হচ্ছে. এই ভাবনা কি এসেছে মাথায়? পেগাসাসের ব্যবহারকারী দেশগুলোর নামের তালিকা এখনো প্রকাশিত হয়নি. কিন্তু সেই তালিকায় যে বাংলাদেশের নাম নেই সেটা কি গ্যারান্টি দিয়ে বলা সম্ভব? বিখ্যাত ইংরেজি দৈনিক গার্ডিয়ান সহ মোট সতেরোটি গণমাধ্যম একত্রিত তদন্ত করে এই পেগাসাস কেলেঙ্কারির ঘটনা সামনে এনেছে. এটা আরো একটা বিরল দৃষ্টান্ত. এর আগে কখনোই একটা ইস্যুর পেছনে এতগুলো মিডিয়া হাউস একসঙ্গে ছোটেনি. এবার ছুটেছে. কারণ গোটা বিষয়টার সঙ্গে পৃথিবীর মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা জড়িত. বলছি না পেগাসাসের মতো সফটওয়্যারের দরকার নেই. মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য এমন স্পাইওয়ার খুবই কার্যকর. কিন্তু নিরাপত্তা দেওয়ার বদলে যদি স্বৈরাচারী শাসকের ক্ষমতার মসনদ রক্ষার কাজে এইসব সফটওয়্যারের বেশি ব্যবহার করা হয়. গোটা ব্যাপারটাতে জড়িয়ে যায় ব্যবসা আর ক্ষমতা ধরে রাখার নোংরা খেলায় । তাহলে সেই স্পাইওয়ার মানুষের উপকারের চেয়ে অপকারটাই বেশি করবে. পেগাসাসের বেলায়ও ঠিক সেটাই ঘটেছে.    


  

মন্তব্যসমূহ

Blog Posts

লুসিড ড্রিম কাকে বলে ? লুসিড ড্রিম কিভাবে দেখতে হয় ?

 স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ করার কথা ভেবেছেন কখনো? নিশ্চয়ই ভাবছেন জেগে জেগে দিবাস্বপ্ন দেখার কথা বলছি না তো? কিন্তু না, রীতিমতো ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্নও নিয়ন্ত্রণের কথাই বলছি, আপনার ইচ্ছামত স্বপ্ন দেখবেন। ইচ্ছা মতো নিয়ন্ত্রণ করবেন। আর পছন্দ না হলে অর্থাৎ দুঃস্বপ্ন দেখা শুরু করলে সেটার গতিপথ পাল্টে দেবেন একেবারে নিমেষে। আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় এটা খুবই সম্ভব একে বলা হয় লুসিভ ড্রিম। লুসিড ড্রিমিং এর সাথে আপনারা অনেকেই হয়তো পরিচিত আছেন। অনেকে পরিচিত থাকলেও হয়তো এটা কেন হচ্ছে বা কিভাবে হচ্ছে তা নিয়ে বেশ দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছে এসবেরই উত্তর মিলবে আজকের এই লিখাতে।   লুসিড ড্রিম অর্থ কি? সহজ বাংলায় অনুবাদ করতে গেলে বলা যায় লুসিড অর্থ পরিষ্কার. অর্থাৎ স্পষ্ট আর dream মানে তো আমরা সবাই জানি যে স্বপ্ন। লুসিড ডিম হলো সেই স্বপ্ন যে আমাদের স্পষ্ট ভাবে মনে থাকে এবং স্বপ্ন চলাকালীন সময়েও আমরা এ উপলব্ধি করতে পারি যে এটি বাস্তব নয় বরং এটি স্বপ্ন কিন্তু শুধুমাত্র আক্ষরিক অর্থ দিয়ে লুসিড ড্রিম ব্যাখ্যা করলে ভুল হবে একটু অন্যভাবে বলা যাক ।  মনে করুন স্বপ্নে আপনি কি পাহাড়ের উপর থেকে দ্রুত গ...

ন্যানো টেকনোলজি কিভাবে কাজ করে ?

  যদি বলি আপনার চোখ দেখতে পারে না এমন গভীর ও প্রায় অনাবিষ্কৃত একটা পৃথিবী আছে. হয়তো বলতে পারেন যে মহাবিশ্বে কত গ্রহই তো আছে? সব খোঁজ কি আমরা পেয়েছি? কিন্তু যদি বলি আমাদের এই পৃথিবীর ভেতরে আরো একটি জগত আছে এবং যে জগৎ ছড়িয়ে আছে আমাদের গোটা বিশ্ব জুড়ে. এইবার হয়তো নড়েচড়ে বসবেন. হ্যাঁ আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে এমন এক রাজ্য যে আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না. এটাকে বলা হয় অণুবীক্ষণিক বিশ্ব. এই অণুবীক্ষণই বিশ্ব প্রচন্ড আকর্ষণীয় ও চমকে দেওয়ার মতো. কি কি ঘটছে এখানে তা আমার আপনার কল্পনারও বাইরে. এটা যেন কোনো ভিন গ্রহ বাসীদের রাজ্য. সম্ভাবনার দুয়ার খুলে রাখা আছে এই অণুবীক্ষণিক বা nano বিশ্বে.  ন্যানো কি ন্যানো হলো পরিমাপের একক। এক মিটারের একশো কোটি ভাগের এক ভাগ হচ্ছে এক ন্যানো। আর ন্যানো টেকনোলজি হলো বিজ্ঞানের এই অতি ক্ষুদ্র স্তরে একটা কিছু তৈরী করা আসলে শুধু তৈরি করা না. ন্যানোমিটার স্কেলে পরিবর্তন, পরিবর্তন, ধ্বংস বা সৃষ্টি সম্পর্কিত টেকনোলজিকেই ন্যানো টেকনোলজি বলে. অর্থাৎ ন্যানোমিটার স্কেলে পরিমিত যেকোনো বিষয়ে বহুমাত্রিক টেকনোলজিকে ন্যানো প্রযুক্তি বা ন্যানো টেকনোলজি বলা যে...

স্টকহোম সিন্ড্রম কি ? স্টকহোম সিন্ড্রম কেন হয় ?

ধরুন আপনাকে কেউ অপহরণ করল. আটকে রাখল অজানা কোন জায়গায়. কিংবা জিম্মি করল কোন বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য. হয়তো আপনাকে মেরে ফেলাটাই অপহরণকারীদের লক্ষ্য. পুলিশ আপনার খোঁজ পাচ্ছে না. এদিকে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় অস্থির হয়ে আছে আপনার স্বজনরা. এক পা দুই সপ্তাহ পার হয়ে হয়তো আপনাকে উদ্ধার করা হল. এই কয়েকটা দিন আপনি সূর্যের আলো দেখেননি. বন্দি অবস্থায় এক একটা ঘন্টাকেই আপনার কাছে মনে হয়েছে এক একটা মাসের মতো লম্বা. মুক্তির পর অপহরণকারীদের প্রতি কেমন অনুভূতি কাজ করবে আপনার? হাতের কাছে পেলেই তাদেরকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করবে তাই না? কিন্তু সেটা না করে বাড়ি ফেরার পর আপনি যদি সেই অপহরণকারীদের প্রশংসা শুরু করেন? তাহলে লোকজন আপনার দিকে কুঁচকে তাকাবে বৈকি? আপনি যদি অপরাধের তদন্তে পুলিশকে ঠিকমতো সাহায্য না করেন, আপনাকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটাই কিন্তু স্বাভাবিক. তার চেয়েও অবাক করার মতো ব্যাপার. কখন ঘটবে জানেন? যখন আদালতে গিয়ে আপনি বলবেন. আপনাকে যারা অপহরণ করেছিল তাদের প্রতি আসলে আপনার কোন অভিযোগ নেই. আপনি তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করতে চান. কি ভাবছেন? এমন পাগলামি আপনি কেন করবেন? পাগলামি বলুন আর যাই বলুন. ...

মিনিমালিজম কি ? কিভাবে মিনিমালিস্ট হওয়া যায় ?

মিনিমামলিজম এই ধারণাটি বিগত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং এর যথেষ্ট কারণও আছে. এই পুরো ব্যাপারটা কি? সেটাকে সঙ্গায়িত করা যায় এভাবে যে,  মিনিমালিজম হচ্ছে যা আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সেগুলোকে ধারণ করা এবং বাকি সব কিছু যা আমাদের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে নেয় সেগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করা।   অর্থাৎ কোন কোন বিষয়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন জিনিসগুলোকে আমাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা থাকা এবং বাকি সব ত্যাগ  করে দেয়. সেগুলো নিয়েই জীবন ধারণ করা. কিন্তু এমন সংজ্ঞায়ন সত্ত্বেও minimalism কোন ধরাবাধা জীবন ব্যবস্থা নয় বা মিনিমালিস্ট হতে হলে কোন নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলতে হবে এরকমটিও কিন্তু নয়. মিনিমালিস্ট লাইফ স্টাইল এমন একটি বিষয় যা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য স্বতন্ত্র। এক্ষেত্রে মূল বিষয়টি হচ্ছে সত্যিকার অর্থে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা নিয়ে সেই অনুযায়ী জীবন ধারণ করা. প্রিয় দর্শক চলুন দেখি মিনিমালিজম কিভাবে আপনার জীবনধারা বদলে দিতে পারে।  মিনিমালিস্ট জীবন অবশ...

সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান কি ?

সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান দু হাজার বারো সালের চৌঠা জানুয়ারি। ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ ডট ফোর চ্যান ডট কম নামের ওয়েবসাইটের বুলেটিন বোর্ডে ছবি সহ একটি ম্যাসেজ পোস্ট করা হয়. ওয়েবসাইটের নীতিমালা অনুযায়ী ছবি প্রকাশকারীর নাম পরিচয় গোপন রাখা হয়. অজ্ঞাত পোস্ট করি সেই ছবিতে ব্যবহারকারীদের চিত্রের মাঝেই লুকানো একটি বার্তা উন্মোচন করার জন্য চ্যালেঞ্জ জানান. সেই মেসেজটিতে লেখা ছিল হ্যালো আমরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের খুঁজছি তাদের খোঁজার জন্য আমরা একটা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি । এই ছবিতে একটা মেসেজ লুকানো আছে এটাকে খুঁজে বের করো । এটাই তোমাদের আমাদের কাছে নিয়ে আসবে. আমরা সেসব স্বল্প সংখ্যক ব্যক্তিকে দেখার অপেক্ষায় আছি যারা এটি সম্পূর্ণ করতে পারবে. Good luck । আর নিচে ছিল একটি কোড থ্রি থ্রি জিরো ওয়ান. পুরো ইন্টারনেট দুনিয়া তোলপাড় হয়ে গেল যেন হঠাৎ করে. পৃথিবীর সেরা হ্যাকার এবং কোড সমাধানকারীরা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা প্রমানের জন্য এই পরীক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়লো আর এই রহস্যময় ধাঁধার নাম দেওয়া হলো সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান।  সিকাডা অর্থ মত বা ঘুগরি পোকা. ছবি পোস্ট করার কিছুক্ষণের মাঝেই গ...

সারোগেসি কি ?

সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান ধারণ করা নিয়ে এখনো বহু বিতর্ক আছে. শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বেই এই পদ্ধতি নিয়ে তর্ক বিতর্কের শেষ নেই.  এটার আইনি প্রক্রিয়াও জটিল। কারণ এটি একেক রাষ্ট্রে. শারোগেসি আইন একেক রকম. নারী মা হবেন প্রাকৃতিক নিয়ম সমাজ এমনটাই দেখতে অভ্যস্ত. কিন্তু কোন কারণে মা হবার ক্ষমতা না থাকলে তাকে পরিবার ও আশপাশ থেকে যে পরিমাণ কটু কথা শুনতে হয় তা সাধারণ মানুষের ধারণারও বাইরে.   সরোগেসি বিষয়টি কি? চিকিৎসা শাস্ত্রের অগ্রগতি এমন মায়েদের সামনে এনেছে যারা গর্ভ ভাড়া দিয়ে নিজে বাঁচেন অন্যদের মাতৃ সুখ দেন । একজন নারীর গর্ভে অন্য দম্পতির সন্তান ধারণের পদ্ধতিকে সারোগেসি বলা হয়.সারোগেসির এই  পদ্ধতি বেশ দীর্ঘকালীন. আইভিএফ পদ্ধতিতে স্ত্রী ও পুরুষের ডিম্বাণু শুক্রাণু দেহের বাইরে নিষিক্ত করে তা নারীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়. কিন্তু এখানেও জটিলতা. কেন? সে বিষয়ে পরে আসছি. বাংলাদেশ সহ বহু দেশই এই সারোগেসি একরকম ভাবে নিষিদ্ধ. সুতরাং বিষয় টি  সংবেদনশীল. এমনকি বেশিরভাগ ধর্মেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা. চলুন কথা বলি সারোগেসি মাদার সম্পর্কে। আইভিএফ বা টেস্ট টি...

কিভাবে লিমিটলেস হওয়া যায় ? লিমিটলেস আসলে কিভাবে কাজ করে ?

এনজিটিপিল,  এটা এমন এক পিল যা আপনাকে করবে আল্ট্রা ফোকাসড. দেবে দুর্দান্ত মোটিভেশন. বের করে আনবে আপনার সর্বোচ্চ সম্ভাবনা. আপনি হয়ে উঠবেন আনস্টপল. বাস্তবতা পাবে প্রতিটি স্বপ্ন. কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এমন কোন পিলের অস্তিত্ব নেই. ফলাফল আপনি আটকে আছেন একটি খাদে. সারাক্ষণ ক্লান্তি নিয়ে হয়ে উঠছেন আনপ্রোডাক্টিভ. নষ্ট হচ্ছে ক্রিয়েটিভিটি. সময় গড়িয়ে যায়. ঋতুর পরিবর্তন ঘটে. কিন্তু আপনি ডুবে থাকেন এক হতাশায় যাতে আপনি দিন দিন পিছিয়ে পরছেন. আপনি যা যা এতদিন অর্জন করবেন ভেবেছিলেন তা কিছুই আপনি অর্জন করতে পারেননি । নিজেকে সান্তনা দিচ্ছেন আগামীকাল হবে ভিন্ন। কিন্তু তা কখনোই হয়ে ওঠে না এখন যদি আপনাকে বলি কোনো জাদুকরী পিলের সাহায্যে নয় বাস্তবিক লিমিটলেস হয়ে ওঠা সম্ভব।  একদম প্রমাণিত পদ্ধতিতে যা একেবারে ফ্রিতে ব্যবহার করা সম্ভব.  তো আছেন তো শেষ পর্যন্ত ?  Limit less হওয়ার যাত্রায় ।  স্টেপ ওয়ান : এনার্জি--  মাত্র কয়েক মাস আগে আমি নিজেও আপনার মতো কর্মশক্তিহীন অনুভব করতাম. সামান্য কাজেই আসতো অবসন্নতা, গেয়ে ধরতো ক্লান্তি একদিন হঠাৎ টের পেলাম আমি নিজেই নিজের energy নি...

রেট রেস কি ?

      আপনি ঠিক কখন ইঁদুর দৌড়ে যোগ দিয়েছেন এটা হিসাব করা কঠিন. কিন্তু নিশ্চিত থাকুন আপনি এই দৌড়ে আছেন. ক্লাস eight এ পড়ার সময়ের কথা মনে আছে? সামনে বৃত্তি পরীক্ষা পাটিগণিত বীজগণিতের অংক প্যাঁচ লাগাচ্ছে বিজ্ঞানের জটিল সব সূত্র ভোরে ওঠে প্রাইভেট টিউটরের বাসায় ছোটা রাত জেগে পড়াশোনা. বয়সের তুলনায় অনেক বেশি কর্ম ব্যস্ত একটা সময় নিশ্চয়ই কাটিয়েছেন তখন? আমরা সবাই কাটিয়েছি. সেই সময় নিশ্চয়ই অভিভাবক বলেছে এই তো আর কটা দিন. বৃত্তি পরীক্ষা শেষ হলেই জীবন শান্তি আর শান্তি. জীবনের নানা এপিসোডে আপনি এই কথাগুলো শুনেছেন অনেকবার অনেকের মুখে. এসএসসি পরীক্ষাটা দাও, কলেজে উঠলেই তো স্বাধীনতা. একবার ভার্সেটিতে উঠতে পারলেই জীবন হবে আনন্দে ভরপুর. একবার জব লাইফে ঢোকো. নিজের টাকায় আয়েশ করার মজাই অন্যরকম. শুনেছেন না এসব?  বয়স ঘড়ির ত্রিশের প্রান্তে দাঁড়িয়ে হিসেবগুলো মেলাতে পারেন কি? কি মনে হয়? এই এপিসোডগুলোর কোনোটা পার হবার সময় জীবন খানিকটা হলেও সহজ হয়েছে? সুন্দর হয়েছে? হয়নি, হবেও না, মিথ্যা একটা মরীচিকার আশায় আমরা ছুটেছি ঠিকই আমাদের ছোটানো হয়েছে, কিন্তু হিসাব মেলেনি ছুটত...

ডাচ ডিজিজ কি ? অর্থনীতি কিভাবে রোগে ভুগতে পারে ?

সো হোয়াট দ্য হেল দিস ডাচ ডিজিজ? ডাচ ডিজিজ শব্দটা শুনলে আপনার স্বাভাবিক ভাবেই মনে হবে এটা কোন রোগের নাম । হ্যাঁ এটা একটা রোগ. তবে মানুষের নয়. কোন প্রাণীরও নয়. তাহলে? এটা মূলত অর্থনীতির একটা সিন্ড্রোম. কিন্তু অর্থনীতির টার্মের সঙ্গে ডিজিজ কথাটা যুক্ত হল কেন? ডাচ বা নেদারল্যান্ড দেশটারই বা কি ভূমিকা এতে?  না এটা বুঝতে আপনাকে অর্থনীতির ছাত্র হতে হবে না ।কিন্তু বিষয়টা বেশ মজার দু হাজার সতেরো সালে বুকিং ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত ডাচ ডিজিজ এন্ড ইকোনমিক ইলনেস ইজি টু ক্যাচ ডিফিকাল্ট টু কিওর শিরোনামের আর্টিকেলের শুরুতেই বলা হয়ে ছিল- what a persistantly low oil price, dose to oil richan prises like what a long cold winter dust to people একথার তাৎপর্য কি?  সহজ বাংলায় বুঝিয়ে বলা যায় যদি বিশ্ববাজারে ক্রমাগতভাবে তেলের দাম কমতে থাকে তখন তেল সমৃদ্ধ তেলের ওপর ভাবে নির্ভরশীল দেশগুলোর অর্থনীতি নানান সমস্যায় ভুগতে পারে. এখানে তেল একটা রূপক মাত্র. তেলের জায়গায় চাল, ডাল, লবণ, চিনি যেকোনো কিছুই হতে পারে. হতে পারে কোন শিল্প যেমন টেক্সটাইল গার্মেন্টস বা ইনফরমেশন টেকনোলজিও. মূল বিষয়টা হচ্ছে...