সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

স্কিল না সার্টিফিকেট? সার্টিফিকেটের দিন কি তাহলে শেষ হয়ে এল ? দেশে এত বেকার কেন ?

  একদিকে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে. অন্যদিকে চাকরিদাতারা বলছেন যোগ্য লোকের অভাব. আসলে বিষয়টা কি?


 বেকার সমস্যা. বিশাল জনগোষ্ঠী, দেশ, বাংলাদেশের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুতর একটা সমস্যা. সমস্যাটা আরো গুরুতর যখন এই বিশাল বেকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষিতের সংখ্যাই বেশি. বিআইডিএস এর এক জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বেকারত্বের হার চৌত্রিশ শতাংশ এবং স্নাতক পর্যায়ে এই হার সাইত্রিশ শতাংশ যুক্ত রাজ্যের প্রভাবশালী সময় কিনা ইকোনমিস্টের কলামেও বলা হয়েছে বর্তমানে বাংলাদেশের সাতচল্লিশ শতাংশ স্নাতকই বেকার. অর্থাৎ প্রতিবছর যদি বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর সহ উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে সারে তিন লাখ মানুষও বের হয় তবে তাদের প্রায় অর্ধেকই থেকে যাবে কর্মহীন।



  কেন এত এত বিএসসি, এমএসসি, বিবিএ, এমবিএ, বিএ, এমএস সার্টিফিকেটধারী উচ্চশিক্ষিত তরুণ তরুণী দিন শেষে বেকার থেকে যাচ্ছে হ্যাঁ এটা সত্য যে চাকরি প্রত্যাশীদের বিপরীতে যথেষ্ট কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আমাদের দেশে নেই. কিন্তু আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষিতদের অনেকেই যখন বেকার তখন প্রতিবেশী দেশ থেকে বহু মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে মোটা টাকা স্যালারিতে কাজ করছে. বাংলাদেশে কর্মনিত বিদেশিদের সংখ্যা কত হতে পারে? জানলে অবাক হবেন দেশের বিভিন্ন কোম্পানি সহ মাল্টি ন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় দশ লাখ বিদেশি এই মুহূর্তে কাজ করছে যাদের বেশিরভাগই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা. তাদের একেকজনের বেতন প্রায় পাঁচ জন বাংলাদেশি কর্মকর্তার বেতনের সমপরিমাণ কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে তার চেয়েও বেশি. কর্মসংস্থানের অভাব আছে সত্য কিন্তু যাও বা আছে সেখানেও কেন আমাদের উচ্চশিক্ষিত বেকার তরুণীরা সুযোগ পাচ্ছে না.


 certificate? নাকি দক্ষতা? যদি বলি শুধুমাত্র দক্ষতা না থাকার কারণেই পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে আমাদেরকে. বাংলাদেশের যুবসমাজ স্কুল কলেজে যে শিক্ষা পাচ্ছে সেটা তাদেরকে কর্ম জীবনের জন্য পরিপূর্ণরূপে তৈরি করতে পারছে না ।



 এর কারণ হিসেবে বলা যায় বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা কারিগরি ও কমিউনিকেশনস এর দক্ষতা এবং কৌশলগত কর্ম ব্যবস্থাপনায় পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশ যেমন ভারত, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, এমনকি ভুটানের চেয়েও অনেক পিছিয়ে রয়েছে. চীনে দুহাজার বিশ সালে প্রকৃত গ্রাজুয়েটের সংখ্যা ছিল বিয়াল্লিশ লাখের সামান্য একটু বেশি. একটু ভেবে দেখলে বোঝা যায় আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষিতের হার চীনের চেয়ে কিন্তু কম নয়. অথচ পার্থক্যটা দেখুন. বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক, বিআইজিডি এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে করা এক জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কম্পিউটার ও ইংরেজি ভাষায় আত্মবিশ্বাসী মাত্র ষোলো শতাংশ । গবেষণার প্রতিবেদন অনুযায়ী মাত্র চোদ্দ শতাংশ তরুণ তরুণী কারিগরি প্রশিক্ষণ পেয়েছে। আবার ওই দক্ষতার মাপকাঠিতে দক্ষ তরুনের হার চব্বিশ শতাংশ অর্থাৎ নারীদের কম্পিউটারে দক্ষতার হার মাত্র দশ শতাংশ. অন্যদিকে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতায় এগিয়ে মাত্র একুশ শতাংশ তরুণ. যেখানে নারীদের এই ভাষাগত দক্ষতার হার মাত্র চোদ্দ শতাংশ. এখানে ছোট্ট করে বলে রাখি skill development এর ওপর বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আছে বাংলাদেশে.             কিন্তু দক্ষ করে তোলার ব্যাপারে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা নিয়েও আছে প্রশ্ন. ডেইলিস্টারের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায় দেশের সত্তর শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করে তাদের চাকরির বাজারের জন্য তৈরিতে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তেমন কোন অবদান নেই. অথবা এই ব্যাপারে তারা নিশ্চিত নন.



 আবার তাদের পাঠ্যসূচি একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কতটা সহায়ক এমন প্রশ্নেও পঁচাত্তর শতাংশ শিক্ষার্থীর মতামত নেতিবাচক । এছাড়াও দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমন অনেক বিভাগ আছে যেগুলোর জন্য আক্ষরিক অর্থে কোন চাকরির ব্যবস্থাই নেই. যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার কারিকুলাম বা ল্যাব ফেসিলিটি আপডেট হচ্ছে না. অথচ যুক্তরাষ্ট্রের রকগার স্কুল অফ ম্যানেজমেন্ট এন্ড লেবার রিলেশনসের অধ্যাপক বিল ক্যাশেল মতে, সব প্রতিষ্ঠানে ভবিষ্যতের চাহিদার কথা চিন্তা করে প্রযুক্তিগত দক্ষতার দিকে মনোযোগী হচ্ছে. আর এসব দক্ষতা অর্জনের জন্য সার্টিফিকেট নয়. অধ্যাবসায় ও উদ্যোগ প্রয়োজন. সময়ের সঙ্গে বদলাচ্ছে চাকরির বাজার. বদলাচ্ছে প্রয়োজনীয় দক্ষতা.


 world economic forum এর মতে আগামী দশকের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী এক বিলিয়নেরও বেশি চাকরি অর্থাৎ বিশ্ব চাকরি বাজারে প্রায় এক তৃতীয়াংশই প্রযুক্তির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে । সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে,  বাইশ সালের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো যে প্রযুক্তিগত দক্ষতাগুলোকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে তার শীর্ষে রয়েছে বিগ অ্যানালিটিকস মেশিন লার্নিং, ক্লাউড কম্পিউটিং ইত্যাদি আর এর কোনোটি সেভাবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শেখার কোনো ব্যবস্থা এখনো নেই । কেননা কর্মক্ষেত্রের চাহিদার কথা ভেবে শিক্ষা কার্যক্রমের যে পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয়নি. 



আগামী দশ বছরে কোন শিল্পগুলোই মানুষ দরকার হবে এবং কি ধরনের দক্ষতা আমাদের প্রয়োজন পরবে? এখানে  অটোমেশানের কথা মাথায় রাখা হচ্ছে কিনা, অটোমেশিন নিয়ে আমরা আলাদা পর্ব তৈরী করবো. সার্টিফিকেট কি তাহলে শুধুই সামাজিক মর্যাদা? না এটা একটা আত্মপরিচয়. একটা সময় ডিগ্রি বা সার্টিফিকেশনকে নিজেকে প্রমান করার লাইসেন্স মনে করা হলো.


 কেউ কেউ ভাবতো শুধু ডিগ্রী বা সার্টিফিকেশন থাকলেই যেকোনো নিয়োগ কর্তা আপনাকে বিবেচনা করবে. এখন আর সেটা দেখা যায় না. বরং আপনার প্রয়োজনীয় দক্ষতা না থাকলে আপনি কিছুই করতে পারবেন না. মজার বিষয় হচ্ছে বিশ্বব্যাপী প্রায় সাতান্ন দশমিক পাঁচ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রীধারীদের চাকরি জীবনে তাদের পড়াশোনার বিষয় কোনো কাজেই আসে না লিংকিং এর সিও যেক উইনার বলেছেন চাকরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রাসঙ্গিক দক্ষতা । সেক্ষেত্রে আপনি কিভাবে আপনার দক্ষতা অর্জন করেছেন? তা কিন্তু বিবেচ্য বিষয় নয়. এই তো কয়েক বছর আগে, এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছিল যে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপেল কম্পিউটার ইনকপোরেটেডে যারা নিয়োগ পেয়েছেন  তাদের মধ্যে পঞ্চাশ শতাংশ কর্মীরই স্নাতক ডিগ্রি নেই । শুধু অ্যাপেল নয় নিউয়র্গ টাইমস কে দিয়ে এক সাক্ষাৎকারে গুগলের মানবসম্পদ বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট লাজলু বক বলেন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি ছাড়া গুগুল কর্মীর সংখ্যা ধীরে ধীরে পাচ্ছে। গুগলের কিছু টিমে চোদ্দ শতাংশ কর্মীর প্রাতিষ্ঠানিক কোন ডিগ্রি নেই.



 তবে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম এখন আগের চেয়ে অনেক আপডেটেড. তাঁরাও নিয়মিত চেষ্টা করে যাচ্ছে একাডেমিক শিক্ষার বাইরে গিয়ে. নিজেকে দক্ষ করে তোলার।  তাদের কেউ কেউ ভার্সিটি শেষ করার পর নিজে নিজে চেষ্টা করে আবার কেউ কেউ নিজে নিজে চেষ্টা করে সুবিধা করতে না পারলে শরণাপন্ন হয় বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে । বাংলাদেশের মতো একটি দেশ যে দেশে যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা নেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে স্কুল ডেভেলপমেন্টের তেমন কোনো সুযোগ নেই সেখানে বিভিন্ন আই টি ইনস্টিটিউতের মতো স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে আজ শেষ করতে চলেছি আমরা তার আগে বিশ্বের বড়ো বড়ো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের দিকে তাকানো যাক বেশ কয়েকটি বিশ্ব বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এই ড্রপ আউটের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন যেমন মাইক্রোসফ্টের বিল গেটস , ফেসবুকের মার্ক জাকার্গবার্গ , টুইটারের জ্যাক Dorsey, ডেলের মাইকেল দেল, উবারের ট্রেভিস, হোয়াটসঅ্যাপের জেন কাম।  অতএব তাদের কাছ থেকে কেন ডিগ্রী খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয় সেটা খুব সহজেই অনুমান করা যায়। অর্থাৎ আগামী দিনে দেখা যাবে তারাই ভালো জব পাচ্ছে যাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা আছে সেক্ষেত্রে কার কতগুলো ডিগ্রি আছে সেটা কিন্তু মোটেও বিবেচিত হবে না।   


 

মন্তব্যসমূহ

Blog Posts

মানসিকতার কয় টা দিক ? Personalities theory কী ?

     আপনি মানুষের সামনে খুব হাসিখুশি থাকেন বলেই মানুষ আপনাকে ভেবে নিল. আহ মানুষটা কি ভিল দরিয়া? মানুষটা খুব মিশুক. এক্সট্রোভার্ট।   কিন্তু আপনি আসলে ভেতরে ভেতরে উপলব্ধি করেন মানুষ আপনাকে যা ভাবে তা আপনি নন মানুষের সামনে হয়তো কোনোরকমে মানিয়ে নেন।  কিন্তু এত হাঙ্গামা আসলে আপনার পছন্দ নয় । আপনি আসলে নিজের ভুবনে থাকতেই বেশি পছন্দ করেন নিজস্ব সার্কেলে । কিন্তু এমন কিন্তু এমনটা কেন? কিছু মানুষের ভেতরে দৈত সত্তা খুব বেশি কাজ করে. মনের ভেতর আর বাইরের উপস্থাপনার একটা দ্বন্দ্ব চলতেই থাকে. মানুষ আপনাকে যতটা introvert ভাবে মনে করে. কি ভাব? আপনি তেমন নাও হতে পারেন । আপনিও জোৎস্ই জায়গা পেলে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে এক্সপ্রেস করতে পারেন । এই যে দইতো একটা বৈচিত্র নিয়ে মানুষ বেঁচে আছে এটাকে তাহলে কি বলা যাবে? এই ধরণের মানুষগুলো আসলে এক্সট্রোভার্ট  আবার পুরোপুরি ইন্ট্রোভার্ট ও না ।  তারা মাঝামাঝি একটা অবস্থানে থাকে. এই মানুষগুলোকে বলা হয় হ্যান্ডবিভার. মজার ব্যাপার হল প্রচলিত একটা ধারণা আছে যে এক্সট্রোভার্টরা সেলস কমিউনিকেশানে খুব ভালো হয়. কিন্তু গবেষণায়...

এরিয়া ফিফটি one কি ?

এরিয়া ফিফটি ওয়ান  এটা এক অচেনা জগৎ. এখানে না আছে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক, না আছে কোনো সুইট সাইন. নেই পিচ ছাড়া রাস্তা বা প্রাণের খুব একটা স্পন্দন। এমনকি বাইরের বিশ্বের সংস্কৃতি এবং সমাজের সামান্যতম বিস্তরণও নেই এখানে। এই নিরীহ নির্মম গোপন রহস্য আসলে কি তা জানার সুযোগ হয়েছে বলা চলে খুবই কম । কখনো কখনো বলা হয় এটা এলিয়ান গবেষণাগার. ইউএফও বা আন আইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্স নিয়েও নাকি প্রচুর গবেষণা করা হয়েছে. অনেকে ধারণা করেন যে একবারই স্থানে ঢুকলে আর বের হওয়া যায় না. বাইরের মানুষের কাছে একটা মিথ হয়ে রয়ে গেছে এই অঞ্চল. অন্তত এখনো পর্যন্ত. বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন ও সবচেয়ে রহস্যময় এলাকা এটি. নাম এরিয়া ফিফটি ওয়ান. শুরু থেকেই গোপনীয়তার দুর্ভেদ্য চাদরে মোড়ানো বলে এরিয়া ফিফটি ওয়ান নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে দিনকে দিন । জমাট বাঁধা এই রহস্য থেকেই কালক্রমে জন্ম নিয়েছে বেশ কিছু কন্সপিরেসি থিওরি ।  আমেরিকার নেভা স্টেটের দক্ষিণে লাস ভেগাস থেকে একশো পঞ্চাশ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে পাহাড় গেরা মরুভূমির মধ্যে ঊনত্রিশ লক্ষ একর জায়গা জুড়ে আছে কুখ্যাত এবং বিদ্রুপজনক...

শিক্ষা শ্রম কি ? কিভাবে বের হতে পারা যায় এই অসুস্থ জগৎ থেকে ?

     এইতো কয়েকদিন আগের কথা. বিশ্বসেরা all rounder সাকিব আল হাসান সাংবাদিক উৎপল সুটের কাছে একটা ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন. পঞ্চপাণ্ডব  সহ আরো কিছু বিষয় সোজাসাপ্টা মন্তব্যের কারণে সেই সাক্ষাৎকার নিয়ে বেশ বিতর্ক হলো কিন্তু ক্রিকেট ও আলোচনা বা বিতর্কিত আলাপের বাইরেও সাকিব সেই সাক্ষাৎকারে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বলেছিলেন যেটা নিয়ে বিন্দুমাত্র আলোচনা হয়নি । পরিবার আমেরিকাতেই স্থায়ী হবে এমন আভাস দিয়ে সাকিব বলেছিলেন বাংলাদেশে থাকার সময় স্কুলে যাওয়ার আগে আমার বড় মেয়ে অ্যালাইনা ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন কাঁদতো. অথচ আমেরিকায় এক ডাক দেওয়ার আগেই নিজে উঠে চোখ বন্ধ করে নিজে ব্রাশ করে স্কুলের জন্য রেডি হয়ে যায়. এর থেকে ভালো আমার জন্য আর কি হতে পারে?  সাকিব কেন নিজেকে একমাত্র পাণ্ডব বলে দাবি করেছেন সাকিবের বক্তব্যে অন্যান্য সিনিয়র প্লেয়ারদের অসম্মান করা হয়েছে কিনা এসবের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু কিন্তু এই কয়েকটা লাইনে লুকিয়ে আছে । স্কুল জায়গাটা কেন পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়সের একটা বাচ্চা মেয়ের কাছে বিভীষিকার নাম হয়ে উঠবে.  এই গল্পটা শুধু এলাইনার নয়. এ...

ন্যানো টেকনোলজি কিভাবে কাজ করে ?

  যদি বলি আপনার চোখ দেখতে পারে না এমন গভীর ও প্রায় অনাবিষ্কৃত একটা পৃথিবী আছে. হয়তো বলতে পারেন যে মহাবিশ্বে কত গ্রহই তো আছে? সব খোঁজ কি আমরা পেয়েছি? কিন্তু যদি বলি আমাদের এই পৃথিবীর ভেতরে আরো একটি জগত আছে এবং যে জগৎ ছড়িয়ে আছে আমাদের গোটা বিশ্ব জুড়ে. এইবার হয়তো নড়েচড়ে বসবেন. হ্যাঁ আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে এমন এক রাজ্য যে আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না. এটাকে বলা হয় অণুবীক্ষণিক বিশ্ব. এই অণুবীক্ষণই বিশ্ব প্রচন্ড আকর্ষণীয় ও চমকে দেওয়ার মতো. কি কি ঘটছে এখানে তা আমার আপনার কল্পনারও বাইরে. এটা যেন কোনো ভিন গ্রহ বাসীদের রাজ্য. সম্ভাবনার দুয়ার খুলে রাখা আছে এই অণুবীক্ষণিক বা nano বিশ্বে.  ন্যানো কি ন্যানো হলো পরিমাপের একক। এক মিটারের একশো কোটি ভাগের এক ভাগ হচ্ছে এক ন্যানো। আর ন্যানো টেকনোলজি হলো বিজ্ঞানের এই অতি ক্ষুদ্র স্তরে একটা কিছু তৈরী করা আসলে শুধু তৈরি করা না. ন্যানোমিটার স্কেলে পরিবর্তন, পরিবর্তন, ধ্বংস বা সৃষ্টি সম্পর্কিত টেকনোলজিকেই ন্যানো টেকনোলজি বলে. অর্থাৎ ন্যানোমিটার স্কেলে পরিমিত যেকোনো বিষয়ে বহুমাত্রিক টেকনোলজিকে ন্যানো প্রযুক্তি বা ন্যানো টেকনোলজি বলা যে...

চীন কে ঠেকাতে আমেরিকার মহা পরিকল্পনা ? ইন্দো প্যাসিফিক ইকোনমিক ফেমোওয়ার্ক কি ?

  ইন্দো প্যাসিফিক ইকোনমিক ফেমোওয়ার্ক ফর পোস্ট প্রায়োরিটি বা সংক্ষেপে আইপিডিএফ অনেক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে এটিই হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বহুপাক্ষিক অর্থনৈতিক উদ্যোগ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পলিটিক্যাল ইকোনমিক বাজারে এই ধারণাটা খুব জোরালোভাবে আলোচিত হচ্ছে ।  জাপানে ইন্দো প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেম ওয়ার্ক নামে নতুন এই অর্থনৈতিক উয্যোগের ঘোষণার সময় জো বাইডেন খুব জোরে স্বরেই বললেন আমরা এর মাধ্যমে একুশ শতকের অর্থনীতির নতুন ধারা রচনা করতে যাচ্ছি ।  প্রশ্ন হচ্ছে ইন্দো প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেম ওয়ার্ক  বিষয়টা কি?  আগে কিছু বিষয় সম্পর্কে একটু ধারণা নেওয়া প্রয়োজন এটা খুব নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় এই অর্থনৈতিক উদ্যোগের কর্ণধার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র । তাই পুরো বিষয়টি বুঝতে হলে আমাদের ইন্ডো প্যাসিফিক অঞ্চল এবং এই অঞ্চলকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব বুঝতে হবে.  প্রথমত বোঝা দরকার বৈশিক রাজনীতির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবটা কি? যুক্তরাষ্ট্র, বিশ্ব রাজনীতিতে নিজেকে সুপার পাওয়ার হিসেবে দেখতে চায়.  মার্কিনীরা সবসময় চেষ্টা করে তার চেয়ে শক্তিশালী দেশের উত্থ...

দেযা ভু এফেক্ট কি ?

আচ্ছা এমনটা হয়েছে যে একদম নতুন কোনো জায়গায় প্রবল বৃষ্টিতে একটা ছাউনিতে আপনি আশ্রয় নিয়েছেন অথবা ধরুন কোথাও ট্যুরে গিয়ে আপনি আয়েশ করে বসে চা হাতে নিয়ে বই পড়ছেন । হঠাৎ আপনার মনে হলো এই জায়গায় আপনি আগেও ঠিক একইভাবে আটকে ছিলেন বৃষ্টিতে বা একই জায়গায় বসে চা হাতে বই পড়ছিলেন । অথচ বাস্তবে আপনি আগে কখনো এমন কিছু করেছেন বলে কিছুতেই মনে পড়ছে না কিন্তু ঘটনাগুলো এতটাই পরিচিত যে আপনি প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন মনে করার জন্য। হ্যাঁ এটাই দেযা ভু এফেক্ট ।  দেযা ভু এফেক্ট আমাদের সবার সাথেই কম বেশি হরহামেশাই ঘটে থাকে । ফরাসি এই শব্দের প্রথম প্রবর্তন করেন দার্শনিক এমএল বোরাক । যার অর্থ ইতিপূর্বে ঘটে গিয়েছে । এটি এমন একটি অনুভূতি যা থেকে মনে হতে পারে বর্তমানে ঘটতে থাকা কোন ঘটনা এর আগেও একই ভাবে অতীতে ঘটেছে। গবেষকদের মতে মোট জনসংখ্যার প্রায় সত্তর শতাংশের সাথে দেযা ভু এফেক্ট নিয়মিত ঘটে। অন্যান্য বয়সের তুলনায় পনেরো থেকে পঁচিশ বছর বয়সের মানুষের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে সবচেয়ে বেশি। না, এটি কোন রোগ নয় । একদম সুস্থ মানুষের সাথেও নিয়মিত এমন অভিজ্ঞতা ঘটতে পারে যারা অনেক বেশি ভ্রমণ করেন...

চীন কিভাবে সুপার পাওয়ার হয়ে উঠল ? চীন কিভাবে বিশ্ব অর্থনীতির জায়ান্ট হল ?

   সালটা উনিশশো আটানব্বই. বিশ্ব বানিজ্য সংস্থার সদস্য পদের জন্য আবেদন করে চীন।  তাদের জন্য বিষয়টা ঠিক এতটা সহজ ছিল না।  কারণ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ তখন চীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়. এর অবশ্য কারণও ছিল. চীনা কোম্পানিগুলো বিখ্যাত ব্র্যান্ডের রিপ্লিকা ছাড়া আর কিছুই নয় বা নকলপূর্ণ বানায় এই বদনামে ছেয়ে গেছে তখন চারিদিক. চীন সরকার এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয় না.  সেই সময় চীনের পক্ষে দাঁড়িয়ে সেই দেশগুলোর রাগ ভাঙিয়েছিলেন তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিটন কিন্তু ক্লিটন যদি জানতেন বছর বিশেকের মধ্যেই বৈশিক অর্থনীতিতে তার দেশকে পেছনে ফেলে সুপার জায়ান্ট হবার দূরে এগিয়ে যাবে চীন। এই কাজটা হয়তো তিনি করতেন না কখনো. সেই সময় আমেরিকার অর্থনীতি ছিল নয় ট্রিলিয়ন ডলারের. আর চীনের অর্থনীতির মূল্যবান ছিল মাত্র এক ট্রিলিয়ন ডলার. নয় গুণ পিছিয়ে থাকা একটা দেশের সঙ্গে কোন প্রতিযোগিতাই নেই. এমনটাই হয়তো ভেবেছিলেন ক্লিটন। কিন্তু সেটা যে কত বড় ভুল ধারণা ছিল. সেটা এখন আমেরিকানরা জানে হাড়ে হাড়ে. ছোট্ট একটা ডেটা দিয়ে শুরু করা যাক. দু হাজার বিশ সা...

বাংলাদেশ কি তবে শ্রীলংকা হতে যাচ্ছে ? বাংলাদেশ কি তাহলে দেউলিয়া হবার পথে ?

শ্রীলংকার সরকার অবশেষে জানিয়ে দিয়েছে বিপুল পরিমান বিদেশি ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা তাদের নেই অর্থাৎ নিজেদের দেউলিয়া হিসাবে ঘোষণা করতে বাধ্য হলো দেশটি । এটা অবশ্য বোঝাই যাচ্ছিলো গত কয়েকদিনের প্রেক্ষাপট দেখে ধারণা করা যাচ্ছিলো দেউলিয়া ঘোষণা করা ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা খোলা নেই শ্রীলংকার সামনে । তবে শ্রীলঙ্কার এই দুরাবস্থায় বাংলাদেশের নাগরিকদের অনেকেই বেশ চিন্তিত। বিপুল পরিমান বিদেশি ঋণের ভারে জর্জরিত হওয়াটা শ্রীলংকার আজকের অবস্থার একটা বড়ো কারণ। অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মকান্ড চালাতে বাংলাদেশকেও প্রচুর বৈদেশিক ঋণ নিতে হচ্ছে. এখানে দুর্নীতি আছে আছে মুদ্রাস্ফীতি , জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে. আর তাই সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক আছে. আজ থেকে কয়েক বছর পর বাংলাদেশের অবস্থাও শ্রীলংকার মতো হবে না তো? তার আগে আমরা ব্যাখ্যা করবো শ্রীলঙ্কার বর্তমান দুরাবস্থার কারণগুলো নিয়ে. জটিল কোনো রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক আলোচনা নয়. খুব সাদামাটা ভাবে আমরা বোঝানোর চেষ্টা করবো পুরো বিষয়টি. তাহলে শুরু করা যাক.  শ্রীলঙ্কায় গত কিছুদিন ধরেই জ্বালানি তেলের সংকট চলছে দারুণভাবে. রান্নার গ্যাসের অভাব. ভ...

মিনিমালিজম কি ? কিভাবে মিনিমালিস্ট হওয়া যায় ?

মিনিমামলিজম এই ধারণাটি বিগত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং এর যথেষ্ট কারণও আছে. এই পুরো ব্যাপারটা কি? সেটাকে সঙ্গায়িত করা যায় এভাবে যে,  মিনিমালিজম হচ্ছে যা আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সেগুলোকে ধারণ করা এবং বাকি সব কিছু যা আমাদের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে নেয় সেগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করা।   অর্থাৎ কোন কোন বিষয়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন জিনিসগুলোকে আমাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা থাকা এবং বাকি সব ত্যাগ  করে দেয়. সেগুলো নিয়েই জীবন ধারণ করা. কিন্তু এমন সংজ্ঞায়ন সত্ত্বেও minimalism কোন ধরাবাধা জীবন ব্যবস্থা নয় বা মিনিমালিস্ট হতে হলে কোন নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলতে হবে এরকমটিও কিন্তু নয়. মিনিমালিস্ট লাইফ স্টাইল এমন একটি বিষয় যা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য স্বতন্ত্র। এক্ষেত্রে মূল বিষয়টি হচ্ছে সত্যিকার অর্থে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা নিয়ে সেই অনুযায়ী জীবন ধারণ করা. প্রিয় দর্শক চলুন দেখি মিনিমালিজম কিভাবে আপনার জীবনধারা বদলে দিতে পারে।  মিনিমালিস্ট জীবন অবশ...