সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাংলাদেশ কি তবে শ্রীলংকা হতে যাচ্ছে ? বাংলাদেশ কি তাহলে দেউলিয়া হবার পথে ?


শ্রীলংকার সরকার অবশেষে জানিয়ে দিয়েছে বিপুল পরিমান বিদেশি ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা তাদের নেই অর্থাৎ নিজেদের দেউলিয়া হিসাবে ঘোষণা করতে বাধ্য হলো দেশটি । এটা অবশ্য বোঝাই যাচ্ছিলো গত কয়েকদিনের প্রেক্ষাপট দেখে ধারণা করা যাচ্ছিলো দেউলিয়া ঘোষণা করা ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা খোলা নেই শ্রীলংকার সামনে । তবে শ্রীলঙ্কার এই দুরাবস্থায় বাংলাদেশের নাগরিকদের অনেকেই বেশ চিন্তিত। বিপুল পরিমান বিদেশি ঋণের ভারে জর্জরিত হওয়াটা শ্রীলংকার আজকের অবস্থার একটা বড়ো কারণ। অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মকান্ড চালাতে বাংলাদেশকেও প্রচুর বৈদেশিক ঋণ নিতে হচ্ছে. এখানে দুর্নীতি আছে আছে মুদ্রাস্ফীতি , জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে. আর তাই সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক আছে. আজ থেকে কয়েক বছর পর বাংলাদেশের অবস্থাও শ্রীলংকার মতো হবে না তো?



তার আগে আমরা ব্যাখ্যা করবো শ্রীলঙ্কার বর্তমান দুরাবস্থার কারণগুলো নিয়ে. জটিল কোনো রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক আলোচনা নয়. খুব সাদামাটা ভাবে আমরা বোঝানোর চেষ্টা করবো পুরো বিষয়টি. তাহলে শুরু করা যাক.



 শ্রীলঙ্কায় গত কিছুদিন ধরেই জ্বালানি তেলের সংকট চলছে দারুণভাবে. রান্নার গ্যাসের অভাব. ভয়ঙ্কর খাদ্য সংকটও দেখা দিয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে. দিনের বেশিরভাগ সময় থাকছে না বিদ্যুৎ. কাগজের অভাবে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা ও সংবাদপত্র প্রকাশনা. অভাব দেখা দিয়েছে কেরোসিন কিংবা পেট্রোলের বাজারেও. শ্রীলঙ্কা এমন একটি দ্বীপ রাষ্ট্র যেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই আমদানি করতে হয়. যেমন LPG গ্যাস, পেট্রোল, ডিজেল কিন্তু এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় টাকা দেশটির কোষাগারে নেই. কারণ তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে গেছে. বিদেশি ঋণের ভারে জর্জরিত দেশটি পারছে না ঋণের কিস্তিও শোধ করতে. বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সংকট বেসামাল করে তুলেছে দেশটির অর্থনীতিকে. এই সংকট আর আকাশ ছোঁয়া দ্রব্যমূল্য তৈরি করেছে গণ অসন্তোষ. প্রেসিডেন্টের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীর সাথে হয়েছে তাদের সংঘর্ষ. কলম্বোর রাস্তায় কারফিউ জারি করা হয়েছে. উনিশশো-আটচল্লিশ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পর গত চুয়াত্তর বছরের ইতিহাসে এতটা খারাপ অবস্থায় দেশটি কখনো পড়েনি । এক সময়ের দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে অগ্রসর দেশ শ্রীলংকার এই মরণ দশা কেন?




 শ্রীলংকার আয়ের একটা বড় অংশ আসে পর্যটন থেকে. আয়তনে ছোটো হলেও প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের চেয়ে টুরিস্ট ডেসিনেশন হিসেবে শ্রীলঙ্কা অনেক বেশি জনপ্রিয়. দু হাজার উনিশ সালে শুধু এই খাত থেকে শ্রীলঙ্কার আয় ছিল বারো বিলিয়ন ডলারেরও বেশি. শ্রীলংকায় অজস্র মানুষ পর্যটন সংক্রান্ত নানা ব্যবসা এবং চাকরির সাথে যুক্ত ছিল. সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল. কিন্তু বিপত্তিটা বাধ্য দু-হাজার-বিশ সালে. করোনার আগমনে গোটা পৃথিবী ঘরবন্দি হয় পরল. বন্ধ হয়ে গেল বিমান চলাচল. দুর্যোগ নেমে এলো শ্রীলঙ্কার ট্যুরিস্ট সেক্টরে. মহামারীর কারণে রেমিটেন্সের পরিমাণ নেমে এলো প্রায় শূন্যের কোঠায়. শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি একটা বড়সড় ধাক্কা খেলো. সেই ধাক্কার রেশ আর কখনোই কাটিয়ে উঠতে পারেনি এই দেশটি.


 দুহাজার উনিশ সালের ইস্টার সানডের অনুষ্ঠানে কলম্বোয় বোমা হামলা করে জঙ্গিরা. কয়েকশো মানুষ নিহত হয় সেই হামলায়. যাদের বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক. বিদেশি পর্যটকদের কাছে যে শ্রীলঙ্কা ছিল নিরাপদ এক গন্তব্য সেই ধারণাটা বদলে যায় সেই হামলার পর. তবে ইস্টার সানডে হামলা বা করোনাকে যদি একমাত্র কারণ ভাবেন শ্রীলংকার এই দুরাবস্থার তাহলে কিন্তু আপনার ভুল হবে । অনেক বছর ধরেই বৈদেশিক ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে আছে শ্রীলংকা । বিশেষ করে বিগত পনেরো বছরে শ্রীলংকা বেশ কিছু ব্যয়বহুল ও উচ্চাবিলাসী প্রকল্প হাতে নিয়েছে যার অধিকাংশই অপ্রয়োজনীয় এবং অর্থনৈতিকভাবে অলাভজনক হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে টাকা তো খরচ হচ্ছেই কিন্তু কাজে লাগছে না কোনো । উদাহরণ স্বরূপ হামান্ড টোটা সমুদ্র বন্দর ও বিমানবন্দরের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। এসব প্রকল্প বৈদেশিক ঋণের বোঝা বাড়ানো ছাড়া আর কিছুই বয়ে আনতে পারেনি এই দেশটির অর্থনীতির জন্য. শ্রীলঙ্কার আজকের অবস্থার পেছনে সরকারের ভুল নীতিতে চলাটাকেও দায়ী করতে হবে. অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ ও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের প্রতি উদাসীনতা । যেমন শ্রীলঙ্কায় প্রতি বছর বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে আট শতাংশ হারে কিন্তু দু হাজার চোদ্দ সাল থেকে দেশটি কোনো নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্যোগ নেয় নি। বিদ্যুৎ সংকট এখন মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে পরেছে। অপরিকল্পিত মেগা প্রজেক্ট শ্রীলংকার উন্নয়নের প্রতীক না হয়ে হয়েছে গলার কাঁটা। বিদেশে কাজ করা বহু শ্রীলংকার মানুষের চাকরি চলে গেছে করোনার সময়। কাজের পরিসরও কমেছে। কমেছে শ্রীলংকার রেমিট্যান্স আয়ের পরিমাণও কিন্তু রাজা পাক্সের সরকার এসবের দিকে নজর দেয়নি বিন্দুমাত্র।



 দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও নেয়নি যথাযথ কোনো ব্যবস্থা বাড়ায়নি বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ । পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে সংস্কারের নামে চরম গাফিলতি করেছে শ্রীলংকার সরকার. স্বাধীনতার পর থেকেই শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ঋণ নির্ভর. কিন্তু বর্তমান সময়ের মতো ঋণের বোঝা শ্রীলঙ্কার ঘাড়ে কখনোই চেপে বসেনি. এমনকি গৃহযুদ্ধের সময়ও নয়. বর্তমানে শ্রীলংকার ঋণের হার জিডিপির একশো-উনিশ শতাংশ. বিগত দেড় দশকে ধীরে ধীরে ঋণের ভারে জর্জরিত হয়েছে দেশটি । আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের তথ্য বলছে ঋণের দায়ে পরিশোধ হিসেবে চলতি বছর শ্রীলঙ্কাকে সব মিলিয়ে পাঁচশো কোটি ডলার পরিশোধ দেওয়ার কথা । অথচ এখন শ্রীলংকার হাতেই আছে মাত্র দুশো একত্রিশ কোটি ডলারের সমপরিমাণ  বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ. সুতরাং ঋণ পরিশোধ তো দূরের কথা দৈনন্দিন কাজ চালাতেই নতুন করে আরো ঋণ নিতে হচ্ছে দেশটিকে. অন্যদিকে বৈদেশিক বিনিয়োগও কমেছে গত দুই বছরে. প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপাক্সে জেতার জন্য vat ও tax কমানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন. স্বাভাবিকভাবে তার এই ঘোষণা তাকে নির্বাচনী বৈতরণী পার করে আনতে সাহায্য করেছিল. ফলে সরকারের রাজস্ব আয় আগের তুলনায় পঁচিশ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়. যা শ্রীলংকাকে অধিক বৈদেশিক ঋণ নিতে বাধ্য করে.




 আর একটা ভুল শ্রীলঙ্কা করেছে. সেটা হচ্ছে কৃষি খাতের রাতারাতি অর্গানিক ফার্মিং চালুর হঠকারী সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন. বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের চাপ কমাতে রাসায়নিক সার আমদানি নিষিদ্ধ করেন. নিষিদ্ধ হয় কৃষিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার. ফলশ্রুতিতে শ্রীলঙ্কায় খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমে যায়. বেড়ে যায় খাদ্য দ্রব্যের দাম. শ্রীলংকার সরকার কোনদিক বিবেচনা না করে এক ডলারের মূল্যবান দুইশো-তিন শ্রীলংকার মুদ্রায় বেঁধে দিয়েছিল. অথচ বাজারে এখন এক ডলার বিক্রি হচ্ছে দুশো-চল্লিশ থেকে দুশো-ছেষট্টি শ্রীলংকার মুদ্রায়. এখন সেটা প্রায় তিনশো ছুঁয়েছে. ফলে অধিকাংশ মানুষ বেশি রোজগারের আশায় কালোবাজারে বিদেশী মুদ্রা ভাঙিয়েছেন. শ্রীলঙ্কার মুদ্রার স্ফীতি এখন এমন ভয়াবহ অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যে সেখানে চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে আড়াইশো থেকে তিনশো টাকায়.  বারো লিটারের এলপিজি সিলিন্ডার গ্যাসের জন্য তিন হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে দেশের নাগরিকদের. টাকা হাতে নিয়ে বসে আছে তারা. কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত পণ্যটি.



বাংলাদেশ কি কখনো শ্রীলঙ্কার পরিণতি বরণ করতে পারে?


 আলোচনার সুবিধার্থে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার অর্থনীতির তুলনামূলক অবস্থা সম্পর্কে একটা ধারণা থাকা আপনার জন্য খুবই প্রয়োজন. শ্রীলংকার মোট ঋণ তেত্রিশ বিলিয়ন ডলার. যেহেতু দেশটির মোট জনসংখ্যা দুই কোটি বিশ লাখ. সেই হিসেবে শ্রীলংকার মাথাপিছু ঋণের পরিমান ষোলশো পঞ্চাশ মার্কিন ডলার. অন্যদিকে বাংলাদেশের মোট ঋণ ঊনপঞ্চাশ দশমিক চার পাঁচ বিলিয়ন ডলার. আর যেহেতু বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ষোল কোটি তিরানব্বই লাখ. সেই হিসেবে মাথাপিছু ঋণের পরিমান দুশো বিরানব্বই দশমিক এক এক ডলার . বাংলাদেশের চেয়ে শ্রীলংকার মাথাপিছু ঋণের পরিমান প্রায় ছয় গুণ বেশি. করোনা মহামারীতে শ্রীলঙ্কার রেমিটেন্স পৌঁছেছে তলানিতে. দু হাজার বিশ একুশ অর্থ বছরে দেশটির রেমিটেন্স ছিল আট দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার. অন্যদিকে ওই অর্থ বছরে বাংলাদেশের রেমিটেন্স ছিল চব্বিশ দশমিক সাত আট বিলিয়ন ডলার. যা শ্রীলংকার চেয়ে প্রায় তিনগুন বেশি. ঋণ পরিশোধের দায়ের দিক থেকেও বিপজ্জনক অবস্থানে নেই বাংলাদেশ. অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে ঋণের হার এখন জিডিপির আটত্রিশ শতাংশ. গত জুন পর্যন্ত হিসাবে বাংলাদেশের মোট দেনার পরিমাণ ছিল এগারো লাখ চুয়াল্লিশ হাজার দুশো সাতানব্বই কোটি টাকা. এর প্রায় সাতত্রিশ শতাংশ এসেছে বিদেশি উৎস থেকে. পরিমান চার লাখ বিশ হাজার তিনশো আটান্ন কোটি টাকা. বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের হার জিডিপির তেরো শতাংশ. সুতরাং আপাতত চিন্তিত হবার তেমন একটা কারণ নেই বলেই মনে হচ্ছে. কেননা আইএমএফের হিসেবে এই হার পঞ্চান্ন শতাংশের বেশি মানেই হচ্ছে মহা বিপদ.




 তবে শ্রীলংকার উদাহরণ থেকে এখন থেকেই কয়েকটা ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সতর্ক হতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা. রপ্তানি আয় কমে যাওয়াকে বিশেষজ্ঞরা এই সংকটের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন. বর্তমানে শ্রীলংকার রপ্তানি আয় আট দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার যেখানে বাংলাদেশের রপ্তানিয় আটত্রিশ দশমিক সাত পাঁচ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে শ্রীলংকার প্রায় পাঁচ গুণ বেশি । মার্চ দু হাজার বাইশ পর্যন্ত শ্রীলংকার রিজার্ভের পরিমান দুই বিলিয়ন ডলার যেখানে বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমান চুয়াল্লিশ দশমিক চার বিলিয়ন ডলার. বর্তমানে বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ শ্রীলংকার চেয়ে প্রায় বাইশ গুণ বেশি আছে. অর্গানিক কৃষি চালুর কারণে শ্রীলংকার কৃষিজ উৎপাদন কমেছে. কিন্তু বাংলাদেশ ক্রমশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠছে. বিদেশি  ঋণ নিয়ে নির্মিত শ্রীলংকার উন্নয়ন প্রকল্প গুলো সে দেশের মানুষের কোনো কাজে আসছে না । কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল সরাসরি পাচ্ছে এদেশের মানুষ পদ্মা সেতু , লেবুখালী সেতু দক্ষিণাঞ্চলের চেহারা পাল্টে দেবে আগামী কয়েক বছরে পাহারা বন্দর, রুপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে নির্মিত ট্যানেল, সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা কক্সবাজার বাজার রেলওয়ে প্রকল্প কিংবা কক্সবাজার বাজার বিমানবন্দরের মতো প্রকল্প গুলো দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে এ কথা মোটামুটি নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়.



 করোনা কালে শ্রীলঙ্কার কর্মীরা কাজ হারিয়ে বিদেশ থেকে ফিরে এসেছেন নিজ দেশে. অথচ বাংলাদেশে ঘটেছে উল্টোটা. করোনাকালে আমাদের রেমিটেন্স হাই রেকর্ড করেছে. বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পগুলো জনবান্ধব, যুগোপযোগী ও টেকসই হলেও কিছু ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে এখন থেকে। ভবিষ্যতের কোনো অবকাঠামোগত প্রকল্প গ্রহণের আগে প্রকল্পটির প্রয়োজনীয়তা, জনকল্যাণ এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে. বর্তমানে বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণের হার IMF এর ঘোষিত বিপদসীমার বেশ নিচে. সুতরাং এই মুহূর্তে ঋণ পরিশোধের দায়ের দিক থেকে বাংলাদেশ নিরাপদ অবস্থানেই রয়ছে. তবে শ্রীলংকা থেকে বাংলাদেশ বেশ কিছু বিষয় শিক্ষা নিতে পারে. দু হাজার ছাব্বিশ সালে স্বল্পনত দেশ থেকে বেরিয় যাওয়ার পর বাংলাদেশ আর কম সুদে ঋণ পাবে না. বেশি সুদে ঋণ নিয়ে বাড়বে দায়. তাই এখন থেকেই ঋণের দায় নিয়ে সতর্ক হতে হবে. পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতির কারণে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম. নাগরিক জীবনে যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে. এই বিষয়গুলোর দিকে একটু দৃষ্টি দিতে হবে খুব জলদি. বাংলাদেশে এখন বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে ব্যয় অনেক বেশি. এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে. আমদানি ব্যয় আরো বাড়লে রিজার্ভেও টান পড়বে. এতে রিজার্ভের অর্থ অবকাঠামো প্রকল্পে খরচ করার সুযোগ কমে যাবে অনেকটাই. সব মিলিয়ে তখন অর্থনীতির ওপরেও বাড়বে চাপ. এ কারণে বড় প্রকল্পে অর্থ ব্যয়, দায় পরিশোধ ও সমষ্টিক অর্থনীতির সুযোগ নিয়ে সতর্ক থাকার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা. এই সতর্কতা ছিল না বলেই আজ এই সীমাহীন বিপদে পড়েছে শ্রীলঙ্কা. তবে সবকিছু আমলে নিয়েও বাংলাদেশের জিডিপির পরিমাণ রপ্তানি আয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেমিটেন্স সহ অর্থনীতির অন্যান্য সূচক বিবেচনায়  একথা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে আপাত দৃষ্টিতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হওয়ার মতো সম্ভাবনা রয়েছে খুবই কম. শ্রীলংকার নাগরিকেরা তাদের সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত এবং করোনার বলি হয়েছেন  যেটি আমাদের দেশে ঘটার আপাতত কোনো সম্ভাবনা নেই. তবে মন্ত্রী মিনিস্টার রা যেভাবে টাকা পাচার করতেছেন দেশ থেকে সেক্ষেত্রে যেকোনো সময় বদলে যেতে পারে দেশের চেহারা । মুখ থুবড়ে পড়তে পারে অর্থনীতি। খুব দ্রুত গতিতে ই দেউলিয়া হতে পারে বাংলাদেশ । সেটা সময়ই বলে দেবে ।


 

মন্তব্যসমূহ

Blog Posts

মানসিকতার কয় টা দিক ? Personalities theory কী ?

     আপনি মানুষের সামনে খুব হাসিখুশি থাকেন বলেই মানুষ আপনাকে ভেবে নিল. আহ মানুষটা কি ভিল দরিয়া? মানুষটা খুব মিশুক. এক্সট্রোভার্ট।   কিন্তু আপনি আসলে ভেতরে ভেতরে উপলব্ধি করেন মানুষ আপনাকে যা ভাবে তা আপনি নন মানুষের সামনে হয়তো কোনোরকমে মানিয়ে নেন।  কিন্তু এত হাঙ্গামা আসলে আপনার পছন্দ নয় । আপনি আসলে নিজের ভুবনে থাকতেই বেশি পছন্দ করেন নিজস্ব সার্কেলে । কিন্তু এমন কিন্তু এমনটা কেন? কিছু মানুষের ভেতরে দৈত সত্তা খুব বেশি কাজ করে. মনের ভেতর আর বাইরের উপস্থাপনার একটা দ্বন্দ্ব চলতেই থাকে. মানুষ আপনাকে যতটা introvert ভাবে মনে করে. কি ভাব? আপনি তেমন নাও হতে পারেন । আপনিও জোৎস্ই জায়গা পেলে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে এক্সপ্রেস করতে পারেন । এই যে দইতো একটা বৈচিত্র নিয়ে মানুষ বেঁচে আছে এটাকে তাহলে কি বলা যাবে? এই ধরণের মানুষগুলো আসলে এক্সট্রোভার্ট  আবার পুরোপুরি ইন্ট্রোভার্ট ও না ।  তারা মাঝামাঝি একটা অবস্থানে থাকে. এই মানুষগুলোকে বলা হয় হ্যান্ডবিভার. মজার ব্যাপার হল প্রচলিত একটা ধারণা আছে যে এক্সট্রোভার্টরা সেলস কমিউনিকেশানে খুব ভালো হয়. কিন্তু গবেষণায়...

এরিয়া ফিফটি one কি ?

এরিয়া ফিফটি ওয়ান  এটা এক অচেনা জগৎ. এখানে না আছে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক, না আছে কোনো সুইট সাইন. নেই পিচ ছাড়া রাস্তা বা প্রাণের খুব একটা স্পন্দন। এমনকি বাইরের বিশ্বের সংস্কৃতি এবং সমাজের সামান্যতম বিস্তরণও নেই এখানে। এই নিরীহ নির্মম গোপন রহস্য আসলে কি তা জানার সুযোগ হয়েছে বলা চলে খুবই কম । কখনো কখনো বলা হয় এটা এলিয়ান গবেষণাগার. ইউএফও বা আন আইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্স নিয়েও নাকি প্রচুর গবেষণা করা হয়েছে. অনেকে ধারণা করেন যে একবারই স্থানে ঢুকলে আর বের হওয়া যায় না. বাইরের মানুষের কাছে একটা মিথ হয়ে রয়ে গেছে এই অঞ্চল. অন্তত এখনো পর্যন্ত. বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন ও সবচেয়ে রহস্যময় এলাকা এটি. নাম এরিয়া ফিফটি ওয়ান. শুরু থেকেই গোপনীয়তার দুর্ভেদ্য চাদরে মোড়ানো বলে এরিয়া ফিফটি ওয়ান নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে দিনকে দিন । জমাট বাঁধা এই রহস্য থেকেই কালক্রমে জন্ম নিয়েছে বেশ কিছু কন্সপিরেসি থিওরি ।  আমেরিকার নেভা স্টেটের দক্ষিণে লাস ভেগাস থেকে একশো পঞ্চাশ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে পাহাড় গেরা মরুভূমির মধ্যে ঊনত্রিশ লক্ষ একর জায়গা জুড়ে আছে কুখ্যাত এবং বিদ্রুপজনক...

শিক্ষা শ্রম কি ? কিভাবে বের হতে পারা যায় এই অসুস্থ জগৎ থেকে ?

     এইতো কয়েকদিন আগের কথা. বিশ্বসেরা all rounder সাকিব আল হাসান সাংবাদিক উৎপল সুটের কাছে একটা ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন. পঞ্চপাণ্ডব  সহ আরো কিছু বিষয় সোজাসাপ্টা মন্তব্যের কারণে সেই সাক্ষাৎকার নিয়ে বেশ বিতর্ক হলো কিন্তু ক্রিকেট ও আলোচনা বা বিতর্কিত আলাপের বাইরেও সাকিব সেই সাক্ষাৎকারে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বলেছিলেন যেটা নিয়ে বিন্দুমাত্র আলোচনা হয়নি । পরিবার আমেরিকাতেই স্থায়ী হবে এমন আভাস দিয়ে সাকিব বলেছিলেন বাংলাদেশে থাকার সময় স্কুলে যাওয়ার আগে আমার বড় মেয়ে অ্যালাইনা ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন কাঁদতো. অথচ আমেরিকায় এক ডাক দেওয়ার আগেই নিজে উঠে চোখ বন্ধ করে নিজে ব্রাশ করে স্কুলের জন্য রেডি হয়ে যায়. এর থেকে ভালো আমার জন্য আর কি হতে পারে?  সাকিব কেন নিজেকে একমাত্র পাণ্ডব বলে দাবি করেছেন সাকিবের বক্তব্যে অন্যান্য সিনিয়র প্লেয়ারদের অসম্মান করা হয়েছে কিনা এসবের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু কিন্তু এই কয়েকটা লাইনে লুকিয়ে আছে । স্কুল জায়গাটা কেন পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়সের একটা বাচ্চা মেয়ের কাছে বিভীষিকার নাম হয়ে উঠবে.  এই গল্পটা শুধু এলাইনার নয়. এ...

ন্যানো টেকনোলজি কিভাবে কাজ করে ?

  যদি বলি আপনার চোখ দেখতে পারে না এমন গভীর ও প্রায় অনাবিষ্কৃত একটা পৃথিবী আছে. হয়তো বলতে পারেন যে মহাবিশ্বে কত গ্রহই তো আছে? সব খোঁজ কি আমরা পেয়েছি? কিন্তু যদি বলি আমাদের এই পৃথিবীর ভেতরে আরো একটি জগত আছে এবং যে জগৎ ছড়িয়ে আছে আমাদের গোটা বিশ্ব জুড়ে. এইবার হয়তো নড়েচড়ে বসবেন. হ্যাঁ আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে এমন এক রাজ্য যে আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না. এটাকে বলা হয় অণুবীক্ষণিক বিশ্ব. এই অণুবীক্ষণই বিশ্ব প্রচন্ড আকর্ষণীয় ও চমকে দেওয়ার মতো. কি কি ঘটছে এখানে তা আমার আপনার কল্পনারও বাইরে. এটা যেন কোনো ভিন গ্রহ বাসীদের রাজ্য. সম্ভাবনার দুয়ার খুলে রাখা আছে এই অণুবীক্ষণিক বা nano বিশ্বে.  ন্যানো কি ন্যানো হলো পরিমাপের একক। এক মিটারের একশো কোটি ভাগের এক ভাগ হচ্ছে এক ন্যানো। আর ন্যানো টেকনোলজি হলো বিজ্ঞানের এই অতি ক্ষুদ্র স্তরে একটা কিছু তৈরী করা আসলে শুধু তৈরি করা না. ন্যানোমিটার স্কেলে পরিবর্তন, পরিবর্তন, ধ্বংস বা সৃষ্টি সম্পর্কিত টেকনোলজিকেই ন্যানো টেকনোলজি বলে. অর্থাৎ ন্যানোমিটার স্কেলে পরিমিত যেকোনো বিষয়ে বহুমাত্রিক টেকনোলজিকে ন্যানো প্রযুক্তি বা ন্যানো টেকনোলজি বলা যে...

স্কিল না সার্টিফিকেট? সার্টিফিকেটের দিন কি তাহলে শেষ হয়ে এল ? দেশে এত বেকার কেন ?

  একদিকে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে. অন্যদিকে চাকরিদাতারা বলছেন যোগ্য লোকের অভাব. আসলে বিষয়টা কি?  বেকার সমস্যা. বিশাল জনগোষ্ঠী, দেশ, বাংলাদেশের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুতর একটা সমস্যা. সমস্যাটা আরো গুরুতর যখন এই বিশাল বেকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষিতের সংখ্যাই বেশি. বিআইডিএস এর এক জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বেকারত্বের হার চৌত্রিশ শতাংশ এবং স্নাতক পর্যায়ে এই হার সাইত্রিশ শতাংশ যুক্ত রাজ্যের প্রভাবশালী সময় কিনা ইকোনমিস্টের কলামেও বলা হয়েছে বর্তমানে বাংলাদেশের সাতচল্লিশ শতাংশ স্নাতকই বেকার. অর্থাৎ প্রতিবছর যদি বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর সহ উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে সারে তিন লাখ মানুষও বের হয় তবে তাদের প্রায় অর্ধেকই থেকে যাবে কর্মহীন।   কেন এত এত বিএসসি, এমএসসি, বিবিএ, এমবিএ, বিএ, এমএস সার্টিফিকেটধারী উচ্চশিক্ষিত তরুণ তরুণী দিন শেষে বেকার থেকে যাচ্ছে হ্যাঁ এটা সত্য যে চাকরি প্রত্যাশীদের বিপরীতে যথেষ্ট কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আমাদের দেশে নেই. কিন্তু আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষিতদের অনেকেই যখন বেকার তখন প্...

চীন কে ঠেকাতে আমেরিকার মহা পরিকল্পনা ? ইন্দো প্যাসিফিক ইকোনমিক ফেমোওয়ার্ক কি ?

  ইন্দো প্যাসিফিক ইকোনমিক ফেমোওয়ার্ক ফর পোস্ট প্রায়োরিটি বা সংক্ষেপে আইপিডিএফ অনেক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে এটিই হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বহুপাক্ষিক অর্থনৈতিক উদ্যোগ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পলিটিক্যাল ইকোনমিক বাজারে এই ধারণাটা খুব জোরালোভাবে আলোচিত হচ্ছে ।  জাপানে ইন্দো প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেম ওয়ার্ক নামে নতুন এই অর্থনৈতিক উয্যোগের ঘোষণার সময় জো বাইডেন খুব জোরে স্বরেই বললেন আমরা এর মাধ্যমে একুশ শতকের অর্থনীতির নতুন ধারা রচনা করতে যাচ্ছি ।  প্রশ্ন হচ্ছে ইন্দো প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেম ওয়ার্ক  বিষয়টা কি?  আগে কিছু বিষয় সম্পর্কে একটু ধারণা নেওয়া প্রয়োজন এটা খুব নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় এই অর্থনৈতিক উদ্যোগের কর্ণধার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র । তাই পুরো বিষয়টি বুঝতে হলে আমাদের ইন্ডো প্যাসিফিক অঞ্চল এবং এই অঞ্চলকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব বুঝতে হবে.  প্রথমত বোঝা দরকার বৈশিক রাজনীতির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবটা কি? যুক্তরাষ্ট্র, বিশ্ব রাজনীতিতে নিজেকে সুপার পাওয়ার হিসেবে দেখতে চায়.  মার্কিনীরা সবসময় চেষ্টা করে তার চেয়ে শক্তিশালী দেশের উত্থ...

দেযা ভু এফেক্ট কি ?

আচ্ছা এমনটা হয়েছে যে একদম নতুন কোনো জায়গায় প্রবল বৃষ্টিতে একটা ছাউনিতে আপনি আশ্রয় নিয়েছেন অথবা ধরুন কোথাও ট্যুরে গিয়ে আপনি আয়েশ করে বসে চা হাতে নিয়ে বই পড়ছেন । হঠাৎ আপনার মনে হলো এই জায়গায় আপনি আগেও ঠিক একইভাবে আটকে ছিলেন বৃষ্টিতে বা একই জায়গায় বসে চা হাতে বই পড়ছিলেন । অথচ বাস্তবে আপনি আগে কখনো এমন কিছু করেছেন বলে কিছুতেই মনে পড়ছে না কিন্তু ঘটনাগুলো এতটাই পরিচিত যে আপনি প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন মনে করার জন্য। হ্যাঁ এটাই দেযা ভু এফেক্ট ।  দেযা ভু এফেক্ট আমাদের সবার সাথেই কম বেশি হরহামেশাই ঘটে থাকে । ফরাসি এই শব্দের প্রথম প্রবর্তন করেন দার্শনিক এমএল বোরাক । যার অর্থ ইতিপূর্বে ঘটে গিয়েছে । এটি এমন একটি অনুভূতি যা থেকে মনে হতে পারে বর্তমানে ঘটতে থাকা কোন ঘটনা এর আগেও একই ভাবে অতীতে ঘটেছে। গবেষকদের মতে মোট জনসংখ্যার প্রায় সত্তর শতাংশের সাথে দেযা ভু এফেক্ট নিয়মিত ঘটে। অন্যান্য বয়সের তুলনায় পনেরো থেকে পঁচিশ বছর বয়সের মানুষের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে সবচেয়ে বেশি। না, এটি কোন রোগ নয় । একদম সুস্থ মানুষের সাথেও নিয়মিত এমন অভিজ্ঞতা ঘটতে পারে যারা অনেক বেশি ভ্রমণ করেন...

চীন কিভাবে সুপার পাওয়ার হয়ে উঠল ? চীন কিভাবে বিশ্ব অর্থনীতির জায়ান্ট হল ?

   সালটা উনিশশো আটানব্বই. বিশ্ব বানিজ্য সংস্থার সদস্য পদের জন্য আবেদন করে চীন।  তাদের জন্য বিষয়টা ঠিক এতটা সহজ ছিল না।  কারণ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ তখন চীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়. এর অবশ্য কারণও ছিল. চীনা কোম্পানিগুলো বিখ্যাত ব্র্যান্ডের রিপ্লিকা ছাড়া আর কিছুই নয় বা নকলপূর্ণ বানায় এই বদনামে ছেয়ে গেছে তখন চারিদিক. চীন সরকার এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয় না.  সেই সময় চীনের পক্ষে দাঁড়িয়ে সেই দেশগুলোর রাগ ভাঙিয়েছিলেন তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিটন কিন্তু ক্লিটন যদি জানতেন বছর বিশেকের মধ্যেই বৈশিক অর্থনীতিতে তার দেশকে পেছনে ফেলে সুপার জায়ান্ট হবার দূরে এগিয়ে যাবে চীন। এই কাজটা হয়তো তিনি করতেন না কখনো. সেই সময় আমেরিকার অর্থনীতি ছিল নয় ট্রিলিয়ন ডলারের. আর চীনের অর্থনীতির মূল্যবান ছিল মাত্র এক ট্রিলিয়ন ডলার. নয় গুণ পিছিয়ে থাকা একটা দেশের সঙ্গে কোন প্রতিযোগিতাই নেই. এমনটাই হয়তো ভেবেছিলেন ক্লিটন। কিন্তু সেটা যে কত বড় ভুল ধারণা ছিল. সেটা এখন আমেরিকানরা জানে হাড়ে হাড়ে. ছোট্ট একটা ডেটা দিয়ে শুরু করা যাক. দু হাজার বিশ সা...

মিনিমালিজম কি ? কিভাবে মিনিমালিস্ট হওয়া যায় ?

মিনিমামলিজম এই ধারণাটি বিগত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং এর যথেষ্ট কারণও আছে. এই পুরো ব্যাপারটা কি? সেটাকে সঙ্গায়িত করা যায় এভাবে যে,  মিনিমালিজম হচ্ছে যা আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সেগুলোকে ধারণ করা এবং বাকি সব কিছু যা আমাদের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে নেয় সেগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করা।   অর্থাৎ কোন কোন বিষয়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন জিনিসগুলোকে আমাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা থাকা এবং বাকি সব ত্যাগ  করে দেয়. সেগুলো নিয়েই জীবন ধারণ করা. কিন্তু এমন সংজ্ঞায়ন সত্ত্বেও minimalism কোন ধরাবাধা জীবন ব্যবস্থা নয় বা মিনিমালিস্ট হতে হলে কোন নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলতে হবে এরকমটিও কিন্তু নয়. মিনিমালিস্ট লাইফ স্টাইল এমন একটি বিষয় যা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য স্বতন্ত্র। এক্ষেত্রে মূল বিষয়টি হচ্ছে সত্যিকার অর্থে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা নিয়ে সেই অনুযায়ী জীবন ধারণ করা. প্রিয় দর্শক চলুন দেখি মিনিমালিজম কিভাবে আপনার জীবনধারা বদলে দিতে পারে।  মিনিমালিস্ট জীবন অবশ...