এরিয়া ফিফটি ওয়ান
এটা এক অচেনা জগৎ. এখানে না আছে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক, না আছে কোনো সুইট সাইন. নেই পিচ ছাড়া রাস্তা বা প্রাণের খুব একটা স্পন্দন। এমনকি বাইরের বিশ্বের সংস্কৃতি এবং সমাজের সামান্যতম বিস্তরণও নেই এখানে। এই নিরীহ নির্মম গোপন রহস্য আসলে কি তা জানার সুযোগ হয়েছে বলা চলে খুবই কম । কখনো কখনো বলা হয় এটা এলিয়ান গবেষণাগার. ইউএফও বা আন আইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্স নিয়েও নাকি প্রচুর গবেষণা করা হয়েছে. অনেকে ধারণা করেন যে একবারই স্থানে ঢুকলে আর বের হওয়া যায় না. বাইরের মানুষের কাছে একটা মিথ হয়ে রয়ে গেছে এই অঞ্চল. অন্তত এখনো পর্যন্ত. বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন ও সবচেয়ে রহস্যময় এলাকা এটি. নাম এরিয়া ফিফটি ওয়ান. শুরু থেকেই গোপনীয়তার দুর্ভেদ্য চাদরে মোড়ানো বলে এরিয়া ফিফটি ওয়ান নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে দিনকে দিন । জমাট বাঁধা এই রহস্য থেকেই কালক্রমে জন্ম নিয়েছে বেশ কিছু কন্সপিরেসি থিওরি ।
আমেরিকার নেভা স্টেটের দক্ষিণে লাস ভেগাস থেকে একশো পঞ্চাশ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে পাহাড় গেরা মরুভূমির মধ্যে ঊনত্রিশ লক্ষ একর জায়গা জুড়ে আছে কুখ্যাত এবং বিদ্রুপজনকভাবে সুপরিচিত এই আইকনিক এরিয়া । বহু নামে ডাকা হয় স্থানটিকে ড্রিমল্যান্ড, প্যারাডাইস ব্যাঞ্চ, হোমি বিমান বন্দর আর অবশ্যই area fifty one. চলুন আমাদের আজকের যাত্রা হোক কুখ্যাত ও রোমাঞ্চকর এরিয়া fifty one এর পথে. শুরুটা হোক একদম প্রথম থেকে.
উনিশশো সাতচল্লিশ সালের আটই জুলাই মার্কিন একাধিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় নিউ ম্যাক্সিকোর রোজ ওয়েলের কাছে একটি ইউএফও বা আন আইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে মাটিতে পড়েছে. এবং সেই ইউএফও থেকে এলিয়েনদের পাওয়া গেছে যাদের চোখ বড় বড় এবং শরীর পাতলা. খবর ছড়িয়ে পড়তে ওই অঞ্চল ঘিরে ফেলে মার্কিন সেনা. ওয়াল্টার হুট নামে এক মার্কিন সেনা তার মৃত্যুর আগে এই তথ্য দিয়ে যায়। কিন্তু এই দাবি মিথ্যে বলে উড়িয়ে দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে । মার্কিন সরকারের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয় ওই স্থান মার্কিন সেনাবাহিনীর এবং একটি গ্যাস বেলুনে সেই স্থানে দুর্ঘটনা ঘটেছে এই অঞ্চলে কি ঘটেছিল তা নিয়ে জনসম্মুখে আসা সমস্ত তথ্য নষ্ট করে দেওয়া হয় মার্কিন সরকারের দিক থেকে. মানুষের মাঝে হইচই শুরু হলেও তা থেমে যায় ধীরে ধীরে. Cold war বা শীতল যুদ্ধে তখন রমরমা অবস্থা. সৌভিয়েত ইউনিয়ন আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে চূড়ান্ত উত্তেজনা বিরাজ করছে। সে সময় উপগ্রহের মাধ্যমে নজরদারির প্রযুক্তি ছিল না. এই কাজ করার একটাই রাস্তা ছিল তা হল ছবি তোলার প্রযুক্তি । সম্পূর্ণ নজরদারি বিমানের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা।সাধারণ বিমান দিয়ে এই কাজ করা কোনভাবেই সম্ভব ছিল না. সাথে আরও সমস্যা ছিল সৌভিয়েত ইউনিয়নের বিশাল আয়তন. তাদের রাডার ব্যবস্থাও ছিল যথেষ্ট উন্নত. ফলে সেই রাডার ফাঁকি দিয়ে ছবি তুলে আনা ছিল এক কথায় অসম্ভব. তখনই পরিকল্পনা করা হয় যে এমন একটা বিমান দরকার যে অনেক উঁচু দিয়ে উঠতে পারবে. ফলে রাডারে ধরা পড়বে না. যেকোনো বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ওই উচ্চতায় গিয়ে আঘাত হানতে পারবে না. এরপর এরপর অনেক গবেষণার পর উনিশশো পঞ্চান্ন সালে ইউটিউব গোয়েন্দা বিমান তৈরি করা হয়.
পুরো প্রকল্পটি ছিল কঠোর গোপনীয় ব্যাপার. বিমানটি ইউ দ্বারা নামকরণ করার কারণ হল ইউ দিয়ে বোঝায় ইউটিউটি. অর্থাৎ পরিবহন বিভাগ. সাধারণ কার্গো বিমানের মতোই ছিল দেখতে। এটা যে আসলে গোয়েন্দা বিমান তা এই ইউ এর আড়ালে গোপন রাখা হয়. মার্কিন মিলিটারি অফিসার আইজেন আওয়ার ইউটিউব বিমানের পরীক্ষা ও উন্নয়নের জন্য আদেশ দেন. নতুন এই গুপ্তচর বিমানের পরীক্ষার জন্য মার্কিন এয়ার ফোর্সের একটি টেস্টিং গ্রাউন্ডের প্রয়োজন হয়. যেহেতু ইউটিউব বিমান তাই তাদের প্রয়োজন ছিল লোকালয় থেকে দূরের কোন অঞ্চল. অনেক খোঁজাখুঁজির পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র লোকচক্ষু থেকে দূরে ইউকা উপত্যকায় সিআইএর একটি টপ সিক্রেট প্রোজেক্টের কাছে ষাট বর্গ মাইল অঞ্চল অধিগ্রহণ করে. ইউটিউব স্পাইভ বিমানের পরীক্ষার জন্য এখানে এয়ারবেস প্রতিষ্ঠা করা হয়. যদিও ঘাঁটিটি বিমানবাহিনীর একটা প্রাক্তন এয়ার ফিল্ডে তৈরি করা হয়. যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বোমাবর্ষণের ব্যবহৃত হয়েছিল. লোকমুখে শোনা যায় ইউটিউব এক্স ফিফটিন এবং এ টুয়েলভ মতো নানা প্রকার আধুনিক মার্কিন সামরিক বিমান এখানে নির্মিত হয়. যার মধ্যে A twelve নামক বিমানটি তৈরি করা হয়েছিল উনিশশো পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকের দিকে. এটি রাডারের আওতার বাইরে থেকে ঘন্টায় প্রায় বাইশ মাইল বেগে ওড়ার ক্ষমতা রাখতো. উনিশশো ষাট সালের মাঝে এই বেজ ছয়শো square মাইলেরও বেশি বর্ধিত করা হয়.
নতুন নতুন এয়ারফিল্ড ও বিল্ডিং বানানো হয় এরই মাঝে. পারমাণবিক শক্তি কমিশনের নেভাটা অংশ এই এরিয়ার মাঝে চলে আসলে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়. সাথে চারপাশে ঘেরা দিয়ে প্রতিটা গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়. সাধারণ মানুষের জন্য প্রবেশাধিকার হয় নিষিদ্ধ. জন্ম হয় এরিয়া ফিফটি-ওয়ান. প্রথম প্রথম মার্কিন সরকার এরিয়া fifty one এর কথা অস্বীকার করে গেছে নানা টালবাহানায়. পৃথিবীর মানুষকে আমেরিকা দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছে এরিয়া fifty one হলো তাদের সবচেয়ে সুরক্ষিত সামরিক বিমানঘাঁটি. অবাক করার বিষয় হলো দুহাজার তেরো সালে এসে মার্কিন সরকার স্বীকার করে এরিয়া ফিফটি ওয়ানের কথা । গোপনীয়তার রক্ষার্থে তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্র সরকার এতটাই তৎপর ছিল যার কারণে সরকারি কাগজপত্র বা দলিলে এর সম্পর্কে কোনো তথ্যই রাখেনি তারা । উক্ত স্থানের জন্য নির্দিষ্ট করা বিমান ব্যতীত আকাশসীমায় সামরিক বা বেসামরিক ধরনের বিমান প্রবেশের অনুমতি ছিল না. বলতে গেলে ওই ঘাঁটি নো ফ্লাই জোন হিসেবে অফিসিয়ালি ভাবে ঘোষিত ছিল. এরিয়া ফিফটি ওয়ান এর প্রচণ্ড গোপনীয়তা ও এর অত্যাধুনিক সিকিউরিটি সিস্টেম এমনকি মার্কিন জনগনের মাঝেও সন্দেহের ভান্ডার বপন করে তোলে. তাদের সকল সন্দেহ ছিল খারাপ কিছু হচ্ছে এই অঞ্চলে. সর্বোপরি আমেরিকানরা তাদের রাজ্যের ফ্যান্টাসি যেমন এলিয়ান, ডুমস্টি প্রজেক্ট ইত্যাদি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে. তবে সবচেয়ে যেটাই তাদের মাথা খারাপ করে দেয় তা হলো এলিয়েন. তো এই বীজ আসলে কি? গুপ্তচর বিমানের জন্য একটি ফ্লাই জোন? এলিয়ন জোন নাকি একদম অন্য কিছু. এক সময় আপনি প্রায়ই এরিয়া ফিফটি ওয়ানের কাছাকাছি পর্যন্ত যেতে পারতেন. কিন্তু তবে বিক্ষোভকারীরা সহ অনেক কৌতূহলী নাগরিকেরা পার্শ্ববর্তী পারমাণবিক পরীক্ষার স্থানে বিক্ষোভ করে তাদের গোপনীয়তা নষ্ট করতে থাকে. ফলে উনিশশো চুরাশি সালে এরিয়া ফিফটি ওয়ান ম্যানেজমেন্ট তাদের বেইজের আশেপাশের প্রচুর জমি এয়ার ফোর্সের ঘাটি এবং বন্দুকের পরিসেবা হিসেবে ঘোষণা করে.
কিন্তু এরপরেও দূর থেকে ভেতরটা দেখা যায় এমন এক পাশের পাহাড়ের দুই পয়েন্টে হাইকারদের জন্য যাতায়াত করা সম্ভব ছিল. ফলে সেখানে টেলিভিশন ও নিউজ পেপারের লোকেরা জমায়েত হতে থাকে. কিন্তু এরপর নিস্তব্ধতা. সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়. একদম বাইরের পৃথিবী থেকে আলাদা হয়ে যায় এরিয়া ফিফটি ওয়ান. এরপর বহু বছর এরিয়া ফিফটি ওয়ান সংবাদের শিরোনামে আসেনি. মানুষের মন থেকেও ধীরে ধীরে হারিয়ে যায় একসময়. একদিন হঠাৎই খবর আসে এরিয়া ফিফটি ওয়ানের ওপরের আকাশে আনআইডেন্টিফাইট ফ্লাইং অবজেক্ট বা ইউএফও উঠতে দেখা গেছে. ব্যাস. সমুদ্রের জোয়ারের মতো মানুষের মাঝে ছুটতে থাকে গসিপ. সোর্স কি ছিল তা জানা যায় না অবশ্য. কিন্তু গল্প কি আর থেমে থাকে? আস্তে আস্তে সেই গল্পও হারিয়ে যায়. আবার এই নিড ওয়েস্টার্ন ওয়েস্ট ল্যান্ড একাকী হয়ে যায় দীর্ঘদিনের জন্য. কিন্তু একদিন একজন মানুষ সব কিছু বদলে দেয়। তেরোই নভেম্বর উনিশশো উননব্বই. লাস ভেগাস নেভাদার কেএলএস টিভির নিউজ রিপোর্টার জর্জ ম্যাপ এক অবিশ্বাস্য গল্প শোনান. নয়টি উড়ন্ত সসারি ডিস্ক দেখা গেছে এরিয়া fifty one এর আকাশে. তখন আরেকজন বিজ্ঞানী রবার্ট স্কট লেজার বলেন যে মার্কিন সরকার সেই ইউএফও গুলোর ধ্বংসাবশেষ কব্জা করে প্রযুক্তিগত দিক থেকে অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছিল। তিনি দাবি করেন যে, তিনি area fifty one এর S force section এ কাজ করতেন. সেখানে তিনি কিছু document করেছেন যেগুলো anti গ্র্যাভিটি রিঅ্যাক্ট নিয়ে কাজ করছে। তিনি দাবি করেন তিনি এই document গুলো দেখে যত না অবাক হন তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছেন নয়টি UFO সেখানকার হ্যাঙ্গারে দেখে. এগুলো ওয়ান ওয়ান ফাইভ নামের এক অজানা এলিমেন্ট ব্যবহার করেছে যে এতটাই ভারী যে পৃথিবীতে পাওয়া প্রায় অসম্ভব. অবশ্যই এই এলিমেন্ট বাইরের কোন উৎস থেকে এসেছে যেখানে এমন সুপার হেভি এলিমেন্ট প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত হয়. তিনি আরো বলেন যে মার্কিন সরকারের কাছে এই অঞ্চলে পাঁচশো পাউন্ডেরও বেশি ওয়ান ওয়ান ফাইভ এলিমেন্ট মজুদ আছে. এই এলিমেন্ট প্রচন্ড রেডিও অ্যাক্টিভ এবং যে কোন এলিমেন্টের চেয়ে তা ভারী. অভিকর্ষ আঁকড়ে ধরে এগিয়ে যাবার জন্য এই এলিমেন্ট দারুন কার্যকর. এমনকি এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা এই ভরের কোনো এলিমেন্ট গবেষণাগারেও তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছেন. নেভাদা মরুভূমির এরিয়া ফিফটি ওয়ান অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ কাজ সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী মানুষের জল্পনা কল্পনা করার জন্য এক ববলাজারই যথেষ্ট ছিলেন. তিনি প্রাণের ভয়ে নিজের পরিচয়ে প্রথমে গোপন রাখলেও পরে একের পর এক সাক্ষাৎকার নেওয়া হতে থাকে তার আসল পরিচয়ে। এরিয়া fifty one নিয়ে আরেকটি বোমা ফাটান এই বিজ্ঞানী, তিনি এক টিভি সাক্ষাৎকারে বলেন যে, ঘাটের ভেতরে ভিন গ্রহ বাসীদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া একটি আকাশ যান আছে. দুর্ঘটনায় মৃত এক এলিয়নের শরীর ব্যাবচ্ছেদ করে নাকি জানা গেছে ওই প্রাণীটি এসেছে ক্রিটিক্যাল অফ ফোর নামের এক যৌতিষ্ক থেকে. উচ্চতায় প্রাণীটি সাড়ে তিন ফুট লঙ্ঘিন শীর্ণ শরীর কালো বড় বড় চোখ ।
রাতারাতি সেলিব্রিটি হয়ে যান এই ভদ্রলোক. বলা যায় ইউএফও ও এলিয়ান বিশ্বাসীদের জন্য তিনি ছিলেন এক আশীর্বাদের নাম. পরবর্তীতে লেজার দাবি করেন যে মার্কিন সরকার তার শিক্ষাজীবনের সব নথি মুছে তাকে পাগল সাজাবার চেষ্টা চালাচ্ছে. নব্বই এর দশকের মাঝামাঝি দেখে হঠাৎ করেই সতেরো মিনিটের এক ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছিল । যেখানে দেখা যায় প্রটেকশন স্যুট পরা একদল মানুষ ছোটখাটো একটি এলিয়েনের দেহ নিয়ে গবেষণা করছেন তবে ভিডিওটি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থেকে যায় । তাদের যন্ত্রপাতি নাড়াচাড়ার ধরনটা ছিল বেশ আমার এই রকমের. যা একে ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত করে. মানুষ এরিয়া ফিফটি ওয়ানের কাছাকাছি ক্যাম্প করতে শুরু করে শুধুমাত্র এক ঝলকের জন্য ইউএফও দেখার জন্য. নব্বই দশকের গোড়ার দিকে এই ঘাটি আরো চার হাজার একর জমি এবং পর্বত নিজেদের করে নেয়। ফলে বহিরাগতদের জন্য এরিয়ায় ফিফটি ওয়ান নিষিদ্ধ হয়ে যায় আরও দূরের।
ইউএফও শিকারীদের একনিষ্ঠ আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে ওঠে এই অঞ্চল। পাশের ক্রেজ শহরে তারা একত্রিত হতে শুরু করে আর ভাবতে থাকে what the head is going on there । উনিশশো ছিয়ানব্বই সালে নেবাদা রাজ্যের রুট থ্রী সেভেন ফাইভ এর নাম পরিবর্তন করে এক্সট্রা টেরিস্ট্রিয়াল হাইওয়ে রাখা হয়. কল্পনা এখানেই থেমে থাকে না. টেলিপোর্টের মাধ্যমে পদার্থ ও শক্তি উভয়েরই স্থানান্তর সম্ভব বলে মনে করা হয়. সাইন্স ফিকশনের এই অদ্ভুত বিষয় নিয়ে এরিয়া ফিফটি ওয়ানে কাজ চলছে বলে মনে করেন অনেকে । কেউ কেউ ধোঁয়া দেখেন ওই এলাকাতে, কেউ উড়ন্ত অবাস্তব বস্তু দেখেন. কিন্তু এগুলোর কারণ কি? তা অজানাই থেকে যায়. মজার বিষয় হলো ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসীদের মতে, নীল আর্মস স্ট্রং আদৌ চাঁদে নামেনি নেমেছিলেন এরিয়ার ফিফটি ওয়ানের ঘাঁটিতে। এই চাঞ্চল্যকর ধারণাটির প্রবক্তার ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসী লেখক বিলকেস। উনিশশো চুয়াত্তর সালে তিনি তার win ever win to the moon america's thirty billion dollar swingle. বইটিতে বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন আমেরিকার কোন মহাকাশচারী আদেও চাঁদে নামেননি. রাশিয়ার চাঁদে নামার স্বপ্ন ধূলিসাৎ করতে এটা ছিল পুরোটাই আমেরিকা সরকার ও নাসার সম্মিলিত ধাপ্পাবাজি.
এমনকি এখনো শুধু মার্কিনীদেরই পাঁচ শতাংশ বিশ্বাস করে যে মানুষ চাঁদে যায়নি কখনোই. যত শুটিং সব এরিয়া ফিফটি-ওয়ানে হয়েছে । আসা কোন কোন কন্সপিরেসি থেরিস্টের মতে এরিয়া ফিফটি ওয়ানের মাটির নিচে বিশাল বাঙ্কার গড়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার. আর সেখানেও রয়েছে প্রযুক্তির অত্যাধুনিক আশীর্বাদপুষ্ট বিমানের আনাগোনা. সেই বিমানগুলোকে সেখানে লুকিয়ে রাখা হয় যাতে করে স্যাটেলাইট মাধ্যমে সেগুলোর কোন হদিস কেউ না পায়. মার্কিন সরকার দু হাজার তেরো সালে প্রথমবারের মতো এরিয়ার ফিফটি ওয়ানের অস্তিত্বকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে. এর আগে স্থানীয়রা জানতো যে মরুভূমিতে অদ্ভুত কিছু ঘটছে তবে বিশদভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি কারো পক্ষে. বেসের ফেসিলিটি দিন দিন উন্নত করা হতেই থাকে. স্যাটেলাইট ইমেজে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয় এরপর. মার্কিন স্যাটেলাইট করোনা এবং টেরা এরিয়া ফিফটি ওয়ানের ছবি তুলেছিল যার সবকটি মার্কিন সরকার মুছে ফেলে ডাটাবেস থেকে. এখন অবশ্য গুগল ম্যাপে এরিয়ার ফিফটি ওয়ান হাই পেলেও একটা তথ্য সমৃদ্ধ বা এ সম্পর্কে জ্ঞান প্রদানে ব্যর্থ. বেশিরভাগ ভোরে দর্শনার্থীরা এর আকাশে অদ্ভুত আলো জ্বলতে নিভতে দেখেন. না. এটা কোনো ইউএফও নয়. এটি আসলে এক ধরনের কলসাইন যার নাম জেনেট. যা লাস ভেগাস থেকে কর্মীদের এরিয়া ফিফটি ওয়ানে নিয়ে যাওয়ার সংকেত.
আমেরিকার সবচেয়ে গোপনীয় সামরিক ঘাঁটিতে আসলে কি চলছে? কারো মতে উন্নত স্টেলস প্রযুক্তি, অস্ত্র, বৈদ্যুতিক যুদ্ধবিমান এবং বিশেষত মানবহীন বিমানবাহী যানবাহন সহ কিছু উন্নত প্রযুক্তির গবেষণা চলছে সেখানে. বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ক্রিসপক্ষকের মতে সেখানে উন্নত রেডিও কমিউনিকেশন ব্যবস্থা, ক্লাসিফাইয়ার ট্রাপ, এনার্জি ওয়েপেন এবং লেজার নিয়ে গবেষণা চলছে। যদিও এগুলো শুধুমাত্র তাত্ত্বিক ধারণা এখনো পর্যন্ত রাশিয়ার গোয়েন্দা উপগ্রহ ইনোক্স ও রাশিয়ার বেসামরিক উপগ্রহ আমেরিকায় রাশিয়ার ঠান্ডা যুদ্ধের সময় এই এরিয়া ফিফটি ওয়ানের ভেতরে কি হচ্ছে তা জানার জন্য উচ্চ রেজুলেশনের ছবি তোলে. এই ছবিতে এর ভেতরকার উপরিভাগের প্রায় সবকিছু প্রকাশ হয়ে পড়ে. এই ছবিতে দেখা যায় যে এরিয়া ফিফটি ওয়ানের ভেতরে সাতটি রানওয়ে আছে. কিন্তু ভেতরে কি হচ্ছে তা জানা যায় নি । ফলে আমাদের থমকে যেতেই হয় এখানে এসে. অতি উৎসাহীদের সাবধান করতে এরিয়া ফিফটি ওয়ানের চারধারে লাগানো আছে নোটিশ. যেখানে লেখা আছে ইউস অফ টেকলি ফোর্স অথোরাইজড. যার অর্থ হচ্ছে বারণ সত্ত্বেও ভেতরে ঢুকতে গেলে নিশ্চিত মৃত্যু. প্রশ্ন রয়েই যায়. কি ঘটছে এই ফিফটি ওয়ানের ভেতরে? কি মনে হয় আপনার? জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে. আজ এই পর্যন্তই.
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন