সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কেনো বাংলাদেশীরা ইন্ডিয়াকে ঘৃনা করে?

একাত্তর সালের ডিসেম্বর মাস মুক্তিযুদ্ধ চলছে। ভারত তখনও সরাসরি অংশগ্রহণ করেনি মুক্তিযুদ্ধে। বাংলাদেশের পক্ষে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে তাঁরা। প্রায় এক কোটি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে ভারতে। মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী সদর দপ্তর স্থাপিত হয়েছে কোলকাতায়। মুক্তি যোদ্ধারা ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ক্যাম্প করে সেখান থেকে আক্রমণ হানছে পাকিস্তানি সেনাদের উপর. 


তেসরা ডিসেম্বর বিকেলে ভারতের তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল শ্যাম টেলিফোন করলেন ভারতের ইস্টার্ন আর্মির চিফ অফ স্টাফ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল জ্যাক জ্যাকবের এর কাছে. মানিক সো জ্যাকব কে বললেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে বলুন, পাকিস্তানি বিমান থেকে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের এয়ার ফিল্ড গুলোতে বোমা বর্ষণ করা হয়েছে. ইন্দিরা গান্ধী তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিলেন. পাকিস্তানের বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করল ভারত। ছয় ডিসেম্বর প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিল ইন্দিরা গান্ধীর সরকার। বাংলাদেশের বয়স পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হয়েছে. ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের বয়সও হয়ে গেছে পঞ্চাশ বছর. কিন্তু গত পঞ্চাশ বছরে এদেশের অনেক মানুষের মধ্যে ভারত বিরোধী একটা মনোভাব জাগ্রত হয়েছে তীব্রভাবে। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল । যারা আমাদের এক কোটি বিপদাপন্ন মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে, আহার দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে সাহায্য করেছে সেই দেশের বিরুদ্ধে প্রবল জনমত তৈরি হওয়ার ব্যাপারটা কিন্তু যথেষ্ট এলার্মী । এটাকে ছোট করে দেখার অবকাশ নেই কোনো। কিন্তু এই অবস্থার সৃষ্টি হলো কিভাবে? ভারত আর বাংলাদেশকে এখনো অভিন্ন হৃদয়ের সেই বন্ধুটি আছে? সেই বন্ধুত্বের কতখানি মনের আর কতখানি মুখের? এই সত্যগুলোর উত্তর জানাটা বড্ড বেশি প্রয়োজন। ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ যতই বলুন না কেন যে ভারতের হৃদয় বাংলাদেশ খুব স্পেশ্যাল একটা জায়গা দখল করে আছে। রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের আচরণে সেটা কিন্তু আমাদের মনে হয় না কখনো।


আঞ্চলিক রাজনীতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত বরাবরই বড় ভাইয়ের রোল প্লে করেছে। তাদের আচরণেও একটা দাদাগিরি বজায় ছিল সব সময়. সার্ক বা বিউস টেকের মতো আঞ্চলিক সংগঠনগুলোতে বাংলাদেশ কখনো ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় নি । বরাবরই বাংলাদেশের অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছে তাঁরা। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ বা সে দেশের নাগরিকদের প্রতি ভারতের আচরণ কিন্তু কখনোই প্রসন্ন ছিল না । বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যবর্তী সীমান্তের পরিমান প্রায় চার হাজার একশো কিলোমিটার। গোটা বিশ্বে. যেটা পঞ্চম দীর্ঘতম সীমান্ত সংযোগ । পাকিস্তান বা চীনের সাথেও ভারতের এত লম্বা বর্ডার নেই। ল্যান্ড বর্ডার এগ্রিমেন্টের ধার না ধরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সবসময় গুলি চালিয়েছে বাংলাদেশের নাগরিকদের উপর । কখনো no mans land এ আবার কখনো বাংলাদেশের ভেতর থেকে দেশের মানুষকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভারতে। চালানো হয়েছে অকথ্য নির্যাতন. সেই নির্যাতনের শিকার হয়ে কেউ মারা গেছেন, কেউ পঙ্গু হয়েছেন. কাঁটাতারে চলেছে কিশোরী ফেলানির লাশ. আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সরব হয়েছে. বিচারের নামে প্রহসনের নাটক সাজিয়ে সবাইকে বেকসুর খালাস দিয়েছে ভারতের আদালত। বিএসএফের হাতে প্রতি বছর এই পরিমাণ বাংলাদেশী নিহত হয়. তার দশ ভাগের এক ভাগ মানুষও পৃথিবীর আর কোন দেশের সীমান্তে অন্য দেশের সেনাদের হাতে গুলি খেয়ে মারা যায় না। 


এই যদি হয় বন্ধু রাষ্ট্রের আচরণ সেই বন্ধুত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা কিন্তু অমূলক নয় মোটেও। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কটা শুধু কূটনৈতিক বা আর্থিক নয়,  সামাজিক এবং দুই দেশের মানুষের সম্পর্ক, ভাষা, সংস্কৃতি, পোশাক, খাবারের নৈকট্যের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের একটা আলাদা জোর আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু সেই সম্পর্কের উষ্ণতায়, পানি ঢালার কাজটা ভারত নিজেই করছে। ভারতের রাষ্ট্রক্ষমতায় বিজেপি আসার পরে এই ব্যাপারগুলো ঘটেছে খুব বেশি এবং চোখেও পড়ছে।শুধুমাত্র নিজেদের কট্টর হিন্দুত্ববাদী আইডিওলজির কার্যকর করতে সিএএ এবং এনআরসির মতো ধারাগুলো জনগণের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছে বিজেপি সরকার । আর সেই চাকরি দেওয়ার পথে তারা খুব বাজে ভাবে আক্রমণ করছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের নাগরিকদেরকে. এটা তো কোনো বন্ধুর কাজ হতে পারে না। ভারতের যখনই বাংলাদেশকে প্রয়োজন হয়েছে বাংলাদেশ নিজেদের উজাড় করে দিয়ে সাহায্য করেছে।সেটা সেটা ফেনী নদীর পানি ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সরবরাহের বেলাতেই হোক কিংবা বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ত্রিপুরা আসাম ও মেঘালয় সহ পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী পাঠানোর মামলাতেই হোক । কিন্তু এক তিস্তা নদীর পানি কোনো সুরাহা পায়নি বাংলাদেশ আজও । গলার কাঁটার মতো বিঁধে আছে ফারাক্কাবাদ সীমান্ত হত্যার তো কোনো সুরাহাই হচ্ছে না ।বিএসএফের গুলিতে মানুষ মরছে অকাতরে গরু বা মাদক পাচারকারী লেভেল লাগিয়ে সেই হত্যাগুলোকে হালাল করে ফেলা হচ্ছে । 

উনিশশো ছেষট্টি সালে নদী আইনের নিয়মাবলী অনুযায়ী কোনো উজানের দেশ আন্তর্জাতিক নদীর উপর ইচ্ছাকৃত হবে বাঁধ, ব্যারেজ, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সুইস গেট নির্মাণ করতে পারবে না. যা ভাটির দেশের জন্য ক্ষতিকর। একইভাবে উনিশশো সাতানব্বই সালে জাতিসংঘের জনপ্রবাহ কনভেনশনেও বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক নদীকে এমন ভাবে ব্যবহার করা যাবে না যাতে তা অন্য দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বা অসুবিধার সৃষ্টি করে । আন্তর্জাতিক নদী নিয়ে এত আইন থাকার পরেও সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত এর কোন কিছুই মানছে না । আন্তর্জাতিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নদীগুলোর ওপর একের পর এক বাঁধ ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার কারণে বাংলাদেশ তার ন্যায্য তিস্তার পানি কখনোই পায়নি। চুয়ান্নটি অভিন্ন নদীর মধ্যে ভারত বেশ কয়েকটি নদীতেই বাধ ব্যারেজ সহ বিভিন্ন রকম স্থাপনা নির্মাণ করেছে। যা নিয়ে ভারতের বিখ্যাত বুদ্ধিজীবী ও activist অরুন্ধুতি রায় থেকে শুরু করে সচেতন ভারতীয় ও নাগরিক সমাজও বিভিন্নভাবে আন্দোলনে সংগ্রাম করেছে।


গঙ্গাচুক্তির পঁচিশ বছর হতে চললেও আমরা আমাদের ন্যায্য পানির হিসাব এখনো খুঁজে পাইনি. এক ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে গিয়েছে ছোট ও বড় প্রায় বিশটি নদী. নদীমাতৃক দেশ হিসেবে একসময় যে সুনাম বাংলাদেশের ছিল সেটা এখন মিলিয়ে গেছে। বারোশো নদীর জায়গায় এখন কোনো মতে টিকে আছে মাত্র দুশো ত্রিশটি নদী । এছাড়াও মরার ওপর খাড়ার ঘায়ের মতো ভারত শুষ্ক মৌসুমে পানি আটকে দিয়ে আমাদের খরার মুখে ফেলছে আবার বর্ষাকালে পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদের হাজারো গ্রাম পানির নিচে ডুবিয়ে দিচ্ছে । যার কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছরই বর্ষাকালে ভয়ানক বন্যা ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আবার শুষ্ক মরশুমে দেখা দিচ্ছে মরুকরণ। ভারতের নাগরিকত্ব আইনে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতোই সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়. আসামের নাগরিকপঞ্জিতে প্রায় বারো লক্ষ বাংলাদেশি ভারতীয়র গায়ে বিদেশি তকমা লাগানো হয়েছে. ভারত  এটাকে তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে বলেছে । সরকারিভাবে বাংলাদেশ তা মেনেও নিয়েছে. কিন্তু এই বিদেশীরা কোন দেশ থেকে ভারতে এসেছে সেই প্রশ্ন ডেমোক্রেসির তরবারির মতো বাংলাদেশের মাথার উপর ঝুলে থাকছে সবসময়। সব চেয়ে যে আহত করেছে বাংলাদেশের মানুষকে, তা হচ্ছে ভারতীয় উচ্চ নেতৃত্বের অবস্থান থেকে কথিত বাংলাদেশি বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে অপমান কর বাক্য প্রয়োগ. বিজেপির নেতারা নিয়মিতভাবে বাংলাদেশ এবং এদেশের মানুষকে কটু বাক্যবাণে বিদ্ধ করেছে. বন্ধুর প্রতি বন্ধুর আচরণ কোনোভাবেই এমনটা হতে পারে না । 


ভারত এই ইস্যুতে তার চিরশত্রু পাকিস্তানের কাতারেই নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় বিশ লাখ পর্যটক ভারত সফরে যান. তাদের ভিসা দেয় ভারতের মিশনগুলো।ভারতীয় সরকার এই বিপুল সংখ্যক ভিসা প্রদানকে বিশাল এক বদান্যতা রূপে উপস্থাপন করে। অথচ এই পর্যটকরা যে কত বিলিয়ন ডলার প্রতি বছর ভারতীয় অর্থনীতিতে যুক্ত করে. সেটার উল্লেখ কোথাও পাওয়া যায় না।  ভারতের স্বাস্থ্য আর পর্যটন এই দুই সেক্টরে বাংলাদেশি নাগরিকদের অবদান যে অনস্বীকার্য সেটা কোভিডের সময় দেখা গেছে। বাংলাদেশী ক্রেতা নেই বলে হাহাকার করেছেন কলকাতার নিউ মার্কেটের বিক্রেতারা। বাংলাদেশ থেকে কথিত বেআইনি অনুপ্রবেশ ভারতীয় রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক পর্যন্ত সবারই খুব প্রিয় একটা বিষয়। কিন্তু বাংলাদেশ যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভারতীয় নাগরিকের জীবিকা অর্জনের ক্ষেত্রেও এবং বিশ্বে ভারতের রিমিট্যান্সের চতুর্থ বৃহত্তম উৎসব । এর উল্লেখ কোথাও হয় না বললেই চলে। বাংলাদেশের গার্মেন্ট সেক্টর এবং মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির উচ্চ পদে আসীন ব্যক্তিদের অনেকেই ভারতীয়. তাঁরা নিজ যোগ্যতায় সেসব পদে চাকরি পেয়েছেন সত্য।কিন্তু এদেশ থেকে উপার্জিত টাকা তাঁরা যে নিজেদের দেশে পাঠাচ্ছেন সেই ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা হয় না. আলোচনা ঘুরিয়ে ফেলা হয়. বাংলাদেশ থেকে ভারতে কাজ করতে যাওয়া মানুষগুলোর উদাহরণ দিয়ে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য যেমন ত্রিপুরা, আসাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, মিজোরাম, মনিপুর, অরুণাচল। এসব জায়গায় বিচ্ছিন্নতাবাদী গেরিলাদের উৎপাত ছিল চোখে পড়ার মতো। ভারতীয় সেনাদের সাথে নিয়মিতই তাদের সংঘর্ষ হতো অনেক সেনা মারা পড়তো তাদের হামলায়। এই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো যে অস্ত্র সাহায্য পেত সেগুলো চীন বা মিয়ানমার থেকে আসতো। বাংলাদেশের ভূমি যেন কোনোভাবেই ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার না করতে পারে কেউ সেটা নিশ্চিত করা হয়েছে।আসামের উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াকে আটক করে ভারতের হাতে হস্তান্তর করা হয়ে ছিল।


এত কিছু পাওয়ার পরেও বাংলাদেশের প্রতি ভারতের আচরণ কিন্তু সদয় হয়নি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার থেকে ধেয়ে আসা স্মরণার্থীর চাপে বাংলাদেশ যখন হিমশিম খাচ্ছিল তখন কিন্তু ভারত আমাদের সাথে বন্ধুর মত আচরণ করে নি। আন্তর্জাতিক ফোরামে তারা মায়ানমারের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলেনি । মুখ বন্ধ করে রেখেছিল গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ।ভারতের কাছ থেকে বঙ্গোপসাগরে যে বিশাল আয়তনের সমুদ্রসীমা বাংলাদেশ বুঝে পেয়েছে সেই অধিকারও কিন্তু আন্তর্জাতিক সমুদ্র আদালতে গিয়ে আদায় করতে হয়েছে ।


বন্ধুর প্রতি বন্ধুর চাহিদা কি থাকে বলুন তো? বিপদে সাহায্য পাওয়া যাবে, বন্ধুত্বের খাতিরে প্রায়োরিটি লিস্টে ওপরের দিকে থাকা যাবে. তাইতো? অথচ মুখে যাই বলুক. ভারতের প্রায়োরিটি লিস্টে বাংলাদেশের অবস্থান কিন্তু খুব বেশি ওপরে ছিল না কোনদিনই। এই করোনাকালের কথাই ধরুন। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে অক্সফোর্ড অ্যাসট্রোজেনকার তিন কোটি টাকা কেনার চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। এর বাইরেও ভারত সরকার বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে বত্রিশ লক্ষ ডোজ উপহার দিয়েছিল। কিন্তু গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভারত সরকার সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত সব টিকা নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়. প্রতিশ্রুতি মোতাবেক তিন কোটি ডোজ টিকা বাংলাদেশ পায়নি. বাধ্য হয়ে চীনের সিনো ফর্মের সঙ্গে নতুন চুক্তিতে যেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এই যে মহামারীর দুঃসময়ে বন্ধুর কথা না ভেবে শুধু নিজের কথা ভাবা। এটা তো কোন বন্ধুর কাজ হতে পারে না। তাতে বন্ধুত্বের অমর্যাদা করা হয়। এর আগেও নানা সময় পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলেছে ভারত। ভারত থেকে প্রতি বছর আট পয়েন্ট দুই বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পূর্ণ বাংলাদেশে আসে। দক্ষিণ এশিয়ায় আর কোন দেশে এত বেশি ভারতীয় পণ্য রপ্তানি হয় না।গোটা পৃথিবী মিলেই এর চেয়ে বেশি অঙ্কের ভারতীয় পূর্ণ রপ্তানি হয় শুধুমাত্র আমেরিকায়। অন্যদিকে ভারতে প্রতি বছর মাত্র এক দশমিক দুই ছয় বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হয়। দুই দেশের রপ্তানির পার্থক্যটাই বিভাজনের দেয়ালটা ফুটিয়ে তোলার জন্য স্পষ্ট। মনে রাখতে হবে গত কয়েক বছর ধরেই বৈধভাবে ভারতীয় গরু আমদানি করছে না বাংলাদেশ। গরু বাদ দিয়েই এই বিশাল অঙ্কের রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে পারছে ভারত। কিন্তু সেই পরিমান সুবিধা বা মর্যাদা পাওয়া যাচ্ছে না ভারতের কাছ থেকে। এমন অনেক পণ্য যা বাংলাদেশ বিদেশে রপ্তানি করে সেগুলো ভারত অন্য দেশে আমদানি করছে । এই করোনা কালেও বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারত তাদের পণ্য বাংলাদেশে পাঠালেও করোনা ভাইরাসের অজুহাতে বাংলাদেশের পণ্য ভারতে ঢুকতে দিচ্ছে না। এর প্রতিবাদ স্বরূপ বাংলাদেশের সিএনএফ এজেন্টরা সীমান্তে ভারতের পণ্য খালাস বন্ধ করে দিয়েছে। মোদ্দা কথা হচ্ছে ভারত, বাংলাদেশকে অনেকটাই টেকেন ফর গ্র্যান্ডের হিসেবে নিয়েছিল। কারণ ভারতীয় বলয়ের বাইরে গিয়ে বাংলাদেশ কখনো কূটনৈতিক অবস্থান নেবে এমনটা সম্ভব নয়. ভারতও এটা জানতো. 


কিন্তু ভারতের বিপক্ষে কূটনৈতিক অবস্থা না নিয়েও বাংলাদেশ যখন নির্ভরতা কমিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়নে মনোযোগী হয়েছে। একই সাথে চীন এবং আমেরিকা এই দু দেশকেই হাতে রাখছে. ওদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাততে চাইছে. তখনই ভারতের টনক নড়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব থেকে শুরু করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কিংবা রাষ্ট্রপতি উড়ে এসেছেন বাংলাদেশকে মধুর ভাষায় তারা বর্ণনা করেছেন এই দুই রাষ্ট্র কত ভালো বন্ধু । আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের যেখানটায় বাংলাদেশের অবস্থান ভূরাজনৈতিক দিক থেকে সেখানে বাংলাদেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ তাই চীন চায় আমাদের হাতে রাখতে। আমেরিকা চায় আমাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। আর ভারত চায় অন্য সবাইকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ শুধু তাকেই তোয়াজ করুক। ভারত এই অঞ্চলের পরশক্তি হতে চায়. সেই চাওয়ার পথে বাকিরা কাঁটা বিছিয়ে রেখেছে নিরন্তর। চীন বা পাকিস্তানের সাথে তো ভারতের সরাসরি শত্রুতা। শ্রীলঙ্কা বা নেপালের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক আগের মতনই. নেই সেই প্রভাব প্রতিপত্তিও. 


এই অঞ্চলে ভারতের সবচেয়ে কাছের বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশী আছে, যারা কিনা এখনো চীনা বলয়ের ভেতরে ঢুকে পরেনি। হতে চাইলে বাংলাদেশকে ভারতের লাগবেই। আবার দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হওয়ার পথে হাঁটতে গিয়ে ভারতকে অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয় বাংলাদেশের পক্ষে। এই দুই দেশ একে অন্যের পরিপূরক। তাই বন্ধুত্বের সম্পর্কটাও ফিফটি ফিফটি হোক. হোক পারস্পরিক মর্যাদা আর সম্মানের. পাশাপাশি দুই দেশকেই নিশ্চিত করতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মান নাগরিকের জীবন ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা. চলতে হবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাতে হাত ধরে. এক সমান্তরালে। যেই বন্ধুত্ব একটা রাষ্ট্রের জন্মের সময় সাহায্য আর সহমর্মিতার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল সেটাকে তিক্ততা কিংবা বৈরিতার দিকে নিয়ে যাওয়াটা দুই দেশের জন্যই সমান লোকসানের ।  



মন্তব্যসমূহ

Blog Posts

লুসিড ড্রিম কাকে বলে ? লুসিড ড্রিম কিভাবে দেখতে হয় ?

 স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ করার কথা ভেবেছেন কখনো? নিশ্চয়ই ভাবছেন জেগে জেগে দিবাস্বপ্ন দেখার কথা বলছি না তো? কিন্তু না, রীতিমতো ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্নও নিয়ন্ত্রণের কথাই বলছি, আপনার ইচ্ছামত স্বপ্ন দেখবেন। ইচ্ছা মতো নিয়ন্ত্রণ করবেন। আর পছন্দ না হলে অর্থাৎ দুঃস্বপ্ন দেখা শুরু করলে সেটার গতিপথ পাল্টে দেবেন একেবারে নিমেষে। আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় এটা খুবই সম্ভব একে বলা হয় লুসিভ ড্রিম। লুসিড ড্রিমিং এর সাথে আপনারা অনেকেই হয়তো পরিচিত আছেন। অনেকে পরিচিত থাকলেও হয়তো এটা কেন হচ্ছে বা কিভাবে হচ্ছে তা নিয়ে বেশ দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছে এসবেরই উত্তর মিলবে আজকের এই লিখাতে।   লুসিড ড্রিম অর্থ কি? সহজ বাংলায় অনুবাদ করতে গেলে বলা যায় লুসিড অর্থ পরিষ্কার. অর্থাৎ স্পষ্ট আর dream মানে তো আমরা সবাই জানি যে স্বপ্ন। লুসিড ডিম হলো সেই স্বপ্ন যে আমাদের স্পষ্ট ভাবে মনে থাকে এবং স্বপ্ন চলাকালীন সময়েও আমরা এ উপলব্ধি করতে পারি যে এটি বাস্তব নয় বরং এটি স্বপ্ন কিন্তু শুধুমাত্র আক্ষরিক অর্থ দিয়ে লুসিড ড্রিম ব্যাখ্যা করলে ভুল হবে একটু অন্যভাবে বলা যাক ।  মনে করুন স্বপ্নে আপনি কি পাহাড়ের উপর থেকে দ্রুত গ...

ন্যানো টেকনোলজি কিভাবে কাজ করে ?

  যদি বলি আপনার চোখ দেখতে পারে না এমন গভীর ও প্রায় অনাবিষ্কৃত একটা পৃথিবী আছে. হয়তো বলতে পারেন যে মহাবিশ্বে কত গ্রহই তো আছে? সব খোঁজ কি আমরা পেয়েছি? কিন্তু যদি বলি আমাদের এই পৃথিবীর ভেতরে আরো একটি জগত আছে এবং যে জগৎ ছড়িয়ে আছে আমাদের গোটা বিশ্ব জুড়ে. এইবার হয়তো নড়েচড়ে বসবেন. হ্যাঁ আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে এমন এক রাজ্য যে আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না. এটাকে বলা হয় অণুবীক্ষণিক বিশ্ব. এই অণুবীক্ষণই বিশ্ব প্রচন্ড আকর্ষণীয় ও চমকে দেওয়ার মতো. কি কি ঘটছে এখানে তা আমার আপনার কল্পনারও বাইরে. এটা যেন কোনো ভিন গ্রহ বাসীদের রাজ্য. সম্ভাবনার দুয়ার খুলে রাখা আছে এই অণুবীক্ষণিক বা nano বিশ্বে.  ন্যানো কি ন্যানো হলো পরিমাপের একক। এক মিটারের একশো কোটি ভাগের এক ভাগ হচ্ছে এক ন্যানো। আর ন্যানো টেকনোলজি হলো বিজ্ঞানের এই অতি ক্ষুদ্র স্তরে একটা কিছু তৈরী করা আসলে শুধু তৈরি করা না. ন্যানোমিটার স্কেলে পরিবর্তন, পরিবর্তন, ধ্বংস বা সৃষ্টি সম্পর্কিত টেকনোলজিকেই ন্যানো টেকনোলজি বলে. অর্থাৎ ন্যানোমিটার স্কেলে পরিমিত যেকোনো বিষয়ে বহুমাত্রিক টেকনোলজিকে ন্যানো প্রযুক্তি বা ন্যানো টেকনোলজি বলা যে...

স্টকহোম সিন্ড্রম কি ? স্টকহোম সিন্ড্রম কেন হয় ?

ধরুন আপনাকে কেউ অপহরণ করল. আটকে রাখল অজানা কোন জায়গায়. কিংবা জিম্মি করল কোন বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য. হয়তো আপনাকে মেরে ফেলাটাই অপহরণকারীদের লক্ষ্য. পুলিশ আপনার খোঁজ পাচ্ছে না. এদিকে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় অস্থির হয়ে আছে আপনার স্বজনরা. এক পা দুই সপ্তাহ পার হয়ে হয়তো আপনাকে উদ্ধার করা হল. এই কয়েকটা দিন আপনি সূর্যের আলো দেখেননি. বন্দি অবস্থায় এক একটা ঘন্টাকেই আপনার কাছে মনে হয়েছে এক একটা মাসের মতো লম্বা. মুক্তির পর অপহরণকারীদের প্রতি কেমন অনুভূতি কাজ করবে আপনার? হাতের কাছে পেলেই তাদেরকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করবে তাই না? কিন্তু সেটা না করে বাড়ি ফেরার পর আপনি যদি সেই অপহরণকারীদের প্রশংসা শুরু করেন? তাহলে লোকজন আপনার দিকে কুঁচকে তাকাবে বৈকি? আপনি যদি অপরাধের তদন্তে পুলিশকে ঠিকমতো সাহায্য না করেন, আপনাকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটাই কিন্তু স্বাভাবিক. তার চেয়েও অবাক করার মতো ব্যাপার. কখন ঘটবে জানেন? যখন আদালতে গিয়ে আপনি বলবেন. আপনাকে যারা অপহরণ করেছিল তাদের প্রতি আসলে আপনার কোন অভিযোগ নেই. আপনি তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করতে চান. কি ভাবছেন? এমন পাগলামি আপনি কেন করবেন? পাগলামি বলুন আর যাই বলুন. ...

মিনিমালিজম কি ? কিভাবে মিনিমালিস্ট হওয়া যায় ?

মিনিমামলিজম এই ধারণাটি বিগত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং এর যথেষ্ট কারণও আছে. এই পুরো ব্যাপারটা কি? সেটাকে সঙ্গায়িত করা যায় এভাবে যে,  মিনিমালিজম হচ্ছে যা আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সেগুলোকে ধারণ করা এবং বাকি সব কিছু যা আমাদের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে নেয় সেগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করা।   অর্থাৎ কোন কোন বিষয়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন জিনিসগুলোকে আমাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা থাকা এবং বাকি সব ত্যাগ  করে দেয়. সেগুলো নিয়েই জীবন ধারণ করা. কিন্তু এমন সংজ্ঞায়ন সত্ত্বেও minimalism কোন ধরাবাধা জীবন ব্যবস্থা নয় বা মিনিমালিস্ট হতে হলে কোন নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলতে হবে এরকমটিও কিন্তু নয়. মিনিমালিস্ট লাইফ স্টাইল এমন একটি বিষয় যা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য স্বতন্ত্র। এক্ষেত্রে মূল বিষয়টি হচ্ছে সত্যিকার অর্থে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা নিয়ে সেই অনুযায়ী জীবন ধারণ করা. প্রিয় দর্শক চলুন দেখি মিনিমালিজম কিভাবে আপনার জীবনধারা বদলে দিতে পারে।  মিনিমালিস্ট জীবন অবশ...

সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান কি ?

সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান দু হাজার বারো সালের চৌঠা জানুয়ারি। ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ ডট ফোর চ্যান ডট কম নামের ওয়েবসাইটের বুলেটিন বোর্ডে ছবি সহ একটি ম্যাসেজ পোস্ট করা হয়. ওয়েবসাইটের নীতিমালা অনুযায়ী ছবি প্রকাশকারীর নাম পরিচয় গোপন রাখা হয়. অজ্ঞাত পোস্ট করি সেই ছবিতে ব্যবহারকারীদের চিত্রের মাঝেই লুকানো একটি বার্তা উন্মোচন করার জন্য চ্যালেঞ্জ জানান. সেই মেসেজটিতে লেখা ছিল হ্যালো আমরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের খুঁজছি তাদের খোঁজার জন্য আমরা একটা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি । এই ছবিতে একটা মেসেজ লুকানো আছে এটাকে খুঁজে বের করো । এটাই তোমাদের আমাদের কাছে নিয়ে আসবে. আমরা সেসব স্বল্প সংখ্যক ব্যক্তিকে দেখার অপেক্ষায় আছি যারা এটি সম্পূর্ণ করতে পারবে. Good luck । আর নিচে ছিল একটি কোড থ্রি থ্রি জিরো ওয়ান. পুরো ইন্টারনেট দুনিয়া তোলপাড় হয়ে গেল যেন হঠাৎ করে. পৃথিবীর সেরা হ্যাকার এবং কোড সমাধানকারীরা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা প্রমানের জন্য এই পরীক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়লো আর এই রহস্যময় ধাঁধার নাম দেওয়া হলো সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান।  সিকাডা অর্থ মত বা ঘুগরি পোকা. ছবি পোস্ট করার কিছুক্ষণের মাঝেই গ...

সারোগেসি কি ?

সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান ধারণ করা নিয়ে এখনো বহু বিতর্ক আছে. শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বেই এই পদ্ধতি নিয়ে তর্ক বিতর্কের শেষ নেই.  এটার আইনি প্রক্রিয়াও জটিল। কারণ এটি একেক রাষ্ট্রে. শারোগেসি আইন একেক রকম. নারী মা হবেন প্রাকৃতিক নিয়ম সমাজ এমনটাই দেখতে অভ্যস্ত. কিন্তু কোন কারণে মা হবার ক্ষমতা না থাকলে তাকে পরিবার ও আশপাশ থেকে যে পরিমাণ কটু কথা শুনতে হয় তা সাধারণ মানুষের ধারণারও বাইরে.   সরোগেসি বিষয়টি কি? চিকিৎসা শাস্ত্রের অগ্রগতি এমন মায়েদের সামনে এনেছে যারা গর্ভ ভাড়া দিয়ে নিজে বাঁচেন অন্যদের মাতৃ সুখ দেন । একজন নারীর গর্ভে অন্য দম্পতির সন্তান ধারণের পদ্ধতিকে সারোগেসি বলা হয়.সারোগেসির এই  পদ্ধতি বেশ দীর্ঘকালীন. আইভিএফ পদ্ধতিতে স্ত্রী ও পুরুষের ডিম্বাণু শুক্রাণু দেহের বাইরে নিষিক্ত করে তা নারীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়. কিন্তু এখানেও জটিলতা. কেন? সে বিষয়ে পরে আসছি. বাংলাদেশ সহ বহু দেশই এই সারোগেসি একরকম ভাবে নিষিদ্ধ. সুতরাং বিষয় টি  সংবেদনশীল. এমনকি বেশিরভাগ ধর্মেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা. চলুন কথা বলি সারোগেসি মাদার সম্পর্কে। আইভিএফ বা টেস্ট টি...

কিভাবে লিমিটলেস হওয়া যায় ? লিমিটলেস আসলে কিভাবে কাজ করে ?

এনজিটিপিল,  এটা এমন এক পিল যা আপনাকে করবে আল্ট্রা ফোকাসড. দেবে দুর্দান্ত মোটিভেশন. বের করে আনবে আপনার সর্বোচ্চ সম্ভাবনা. আপনি হয়ে উঠবেন আনস্টপল. বাস্তবতা পাবে প্রতিটি স্বপ্ন. কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এমন কোন পিলের অস্তিত্ব নেই. ফলাফল আপনি আটকে আছেন একটি খাদে. সারাক্ষণ ক্লান্তি নিয়ে হয়ে উঠছেন আনপ্রোডাক্টিভ. নষ্ট হচ্ছে ক্রিয়েটিভিটি. সময় গড়িয়ে যায়. ঋতুর পরিবর্তন ঘটে. কিন্তু আপনি ডুবে থাকেন এক হতাশায় যাতে আপনি দিন দিন পিছিয়ে পরছেন. আপনি যা যা এতদিন অর্জন করবেন ভেবেছিলেন তা কিছুই আপনি অর্জন করতে পারেননি । নিজেকে সান্তনা দিচ্ছেন আগামীকাল হবে ভিন্ন। কিন্তু তা কখনোই হয়ে ওঠে না এখন যদি আপনাকে বলি কোনো জাদুকরী পিলের সাহায্যে নয় বাস্তবিক লিমিটলেস হয়ে ওঠা সম্ভব।  একদম প্রমাণিত পদ্ধতিতে যা একেবারে ফ্রিতে ব্যবহার করা সম্ভব.  তো আছেন তো শেষ পর্যন্ত ?  Limit less হওয়ার যাত্রায় ।  স্টেপ ওয়ান : এনার্জি--  মাত্র কয়েক মাস আগে আমি নিজেও আপনার মতো কর্মশক্তিহীন অনুভব করতাম. সামান্য কাজেই আসতো অবসন্নতা, গেয়ে ধরতো ক্লান্তি একদিন হঠাৎ টের পেলাম আমি নিজেই নিজের energy নি...

পেগাসাস স্পাইওয়ার কি ?

গত কিছুদিন ধরেই বিশ্ব রাজনীতি এবং প্রযুক্তি জগৎ এই দুই জায়গাতেই আলোচনার বিষয়বস্তু একটাই। সেটা হচ্ছে পেগাসাস স্পাইওয়ার. বিশ্বজুড়ে নানান দেশের মানবাধিকার কর্মী সাংবাদিক আইনজীবী ও রাজনীতিকদের ফোনের নজরদারি চালানোর ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ইজরায়েলের বেসরকারি কোম্পানি nso গ্রুপের তৈরি করা এই সফটওয়্যার নিয়ে এখন তুমুল তরজা চলছে দুনিয়া জুড়ে । চলুন কথা বলি দুনিয়া ওলট পালট করে দেওয়া স্পাইওয়ার সম্পর্কে । পেগাসাস মূলত একটি নজরদারি বিষয়ক সফটওয়্যার । ইজরাইলের সংস্থা এনএসও ই সফটওয়্যার তৈরি করেছে। যা দিয়ে যে কারো মোবাইলে আড়ি পাতা যায়. এটা কিন্তু সাধারণ কোন নজরদারি নয়. আগে ফোনে আড়ি পেতে শুধু দুই প্রান্তের কথাবার্তা শোনা যেত. আর সফটওয়্যারের মাধ্যমে গোটা ফোনটারই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হ্যাকাররা. ফোনের কথাবার্তা WhatsApp এর চ্যাট, ছবি, ফোনে কি কি তথ্য আছে সবই জানা যায়. আরো ভয়ানক ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল যিনি ব্যবহার করছেন তিনি জানতেই পারেন না যে তার ফোন হ্যাক করা হয়েছে. সমস্ত তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর কাছে. কিন্তু কারো ফোনে পেগাসাস software install করতে হলে তো সেই ফোনটাকে...

রেট রেস কি ?

      আপনি ঠিক কখন ইঁদুর দৌড়ে যোগ দিয়েছেন এটা হিসাব করা কঠিন. কিন্তু নিশ্চিত থাকুন আপনি এই দৌড়ে আছেন. ক্লাস eight এ পড়ার সময়ের কথা মনে আছে? সামনে বৃত্তি পরীক্ষা পাটিগণিত বীজগণিতের অংক প্যাঁচ লাগাচ্ছে বিজ্ঞানের জটিল সব সূত্র ভোরে ওঠে প্রাইভেট টিউটরের বাসায় ছোটা রাত জেগে পড়াশোনা. বয়সের তুলনায় অনেক বেশি কর্ম ব্যস্ত একটা সময় নিশ্চয়ই কাটিয়েছেন তখন? আমরা সবাই কাটিয়েছি. সেই সময় নিশ্চয়ই অভিভাবক বলেছে এই তো আর কটা দিন. বৃত্তি পরীক্ষা শেষ হলেই জীবন শান্তি আর শান্তি. জীবনের নানা এপিসোডে আপনি এই কথাগুলো শুনেছেন অনেকবার অনেকের মুখে. এসএসসি পরীক্ষাটা দাও, কলেজে উঠলেই তো স্বাধীনতা. একবার ভার্সেটিতে উঠতে পারলেই জীবন হবে আনন্দে ভরপুর. একবার জব লাইফে ঢোকো. নিজের টাকায় আয়েশ করার মজাই অন্যরকম. শুনেছেন না এসব?  বয়স ঘড়ির ত্রিশের প্রান্তে দাঁড়িয়ে হিসেবগুলো মেলাতে পারেন কি? কি মনে হয়? এই এপিসোডগুলোর কোনোটা পার হবার সময় জীবন খানিকটা হলেও সহজ হয়েছে? সুন্দর হয়েছে? হয়নি, হবেও না, মিথ্যা একটা মরীচিকার আশায় আমরা ছুটেছি ঠিকই আমাদের ছোটানো হয়েছে, কিন্তু হিসাব মেলেনি ছুটত...

ডাচ ডিজিজ কি ? অর্থনীতি কিভাবে রোগে ভুগতে পারে ?

সো হোয়াট দ্য হেল দিস ডাচ ডিজিজ? ডাচ ডিজিজ শব্দটা শুনলে আপনার স্বাভাবিক ভাবেই মনে হবে এটা কোন রোগের নাম । হ্যাঁ এটা একটা রোগ. তবে মানুষের নয়. কোন প্রাণীরও নয়. তাহলে? এটা মূলত অর্থনীতির একটা সিন্ড্রোম. কিন্তু অর্থনীতির টার্মের সঙ্গে ডিজিজ কথাটা যুক্ত হল কেন? ডাচ বা নেদারল্যান্ড দেশটারই বা কি ভূমিকা এতে?  না এটা বুঝতে আপনাকে অর্থনীতির ছাত্র হতে হবে না ।কিন্তু বিষয়টা বেশ মজার দু হাজার সতেরো সালে বুকিং ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত ডাচ ডিজিজ এন্ড ইকোনমিক ইলনেস ইজি টু ক্যাচ ডিফিকাল্ট টু কিওর শিরোনামের আর্টিকেলের শুরুতেই বলা হয়ে ছিল- what a persistantly low oil price, dose to oil richan prises like what a long cold winter dust to people একথার তাৎপর্য কি?  সহজ বাংলায় বুঝিয়ে বলা যায় যদি বিশ্ববাজারে ক্রমাগতভাবে তেলের দাম কমতে থাকে তখন তেল সমৃদ্ধ তেলের ওপর ভাবে নির্ভরশীল দেশগুলোর অর্থনীতি নানান সমস্যায় ভুগতে পারে. এখানে তেল একটা রূপক মাত্র. তেলের জায়গায় চাল, ডাল, লবণ, চিনি যেকোনো কিছুই হতে পারে. হতে পারে কোন শিল্প যেমন টেক্সটাইল গার্মেন্টস বা ইনফরমেশন টেকনোলজিও. মূল বিষয়টা হচ্ছে...