সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেট কেন আফ্রিকার দেশগুলোর থেকেও খারাপ ?

প্রযুক্তির দীর্ঘ পথ চলায় উন্নত বিশ্ব এখন ফাইভ জির পথে. প্রযুক্তি বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও সে পথে হাঁটছে. স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে ফাইভ জি যে চালু করতে চায় সরকার. স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে দু হাজার একুশ সালের প্রথম প্রান্তিকে । 

কেউ বলছেন four G কেউ বলছেন four point five G. কেউ বা আবার আগ বাড়িয়ে four point nine G বানিয়ে দিচ্ছেন. অর্থাৎ প্রায় five G. অথচ internet speed এর বেলায় লবডঙ্কা. নামে four G কাজের three GO নয়. এমন দশা বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরগুলোর ইন্টারনেট সার্ভিসে. ফোর্থ জেনারেশন বা চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা আমাদের দেশে available থাকলেও গ্রাহক হিসেবে যে স্পিড আমরা পাই সেটা বলতে গেলে লজ্জায় মুখ লুকাতে হবে.


 গত জুন মাসে ইন্টারনেটের গতি মাপার আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ওক্লা একটা জরিপ করেছিল. স্পিড টেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স নামের সেই জরিপ অনুযায়ী বিশ্বের একশো সাঁইত্রিশটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান. একশো পঁয়ত্রিশ নম্বরে. বাংলাদেশের পেছনে আছে শুধু যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তান এবং বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কারণে অর্থনৈতিক সংকটে থাকা ভেনিজুয়েলা. কিন্তু বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেটের গতির এমন বেহাল দশার কারণ কি?


 কেন আফ্রিকার দরিদ্র দেশ হিসাবে পরিচিত ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার চাইতেও খারাপ অবস্থা বাংলাদেশের. গত এক বছরে করোনার কারণে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যান্ড উইথের ব্যবহার বেড়েছে দুই গুণ. কিন্তু এর সাথে মানিয়ে নেওয়ার জন্য টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা অর্থাৎ তাদের বেতার তরঙ্গের ব্যবহার সেই অনুপাতে বাড়েনি। মূলত এই কারণেই গ্রাহকরা তাদের কাঙ্খিত ইন্টারনেটের গতি পাচ্ছেন না। একটি মোবাইল ফোন তার নেটওয়ার্ক এর সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ স্থাপনের জন্য যে সময় নেয় সেটির নির্দেশক লেটেন্সি ও জিটার । মিলি সেকেন্ড স্কেলে এই সময় যত বেশি লাগবে ইন্টারনেটের গতি ততই কম হবে। বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেটের গড় লেটেন্সি ও জিটার যথাক্রমে তেতাল্লিশ ও সাতচল্লিশ মিলি সেকেন্ড । যদিও জানুয়ারি মেজারমেন্টে লিটেন্সিও জিটার ছিল আটত্রিশ ও ঊনচল্লিশ মিলি সেকেন্ড করে. অর্থাৎ এই ছয় মাসে বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গতি কমেছে. বাড়েনি.

 বাংলাদেশে মোবাইল অপারেটরগুলো কয়েক বছর ধরেই four G speed এ internet সেবা দিয়ে আসছে বলে দাবি করছে. এমনকি খুব শিগগিরই তারা ইন্টারনেটের নতুন প্রযুক্তি ফাইভ জির সেবা নিয়ে আসবে এমন কথাবার্তাও শোনা যাচ্ছে. কিন্তু সত্যিকারের ফোরজি স্পিডের সঙ্গে বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরগুলোর ফোরজি স্পিডের বিস্তর ফারাক. অপারেটররা তাদের রংচঙ্গে বিজ্ঞাপন ও প্রচরণায় দেশব্যাপী নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগের দাবি করলেও মাঝে মাঝে রাজধানী ঢাকার ভেতরেই সংযোগ পেতে ঝামেলা পড়েন গ্রাহকরা । আর ঢাকার বাইরের জেলাগুলো বিশেষ করে মফস্বল অঞ্চল এবং গ্রাম অঞ্চলের অবস্থা সে তো আরো শোচনীয়। ঘনঘন কানেকশন লস্ট, কল ড্রপ, ব্রাউজিং এবং ডাউনলোড স্পিড প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসা ফোরজি থেকে নেটওয়ার্ক ঘনঘন টুজিতে চলে যাওয়া আন্ডারগ্রাউন্ড বা বহুতল ভবনের টপ ফ্লোরে গেলে নেটওয়ার্ক না পাওয়া. এসব অভিযোগ বেশ পুরোনো। অনেক সময় দেখা যায় গ্রাহক ইন্টারনেট প্যাকেজ কিনেছেন ঠিকই কিন্তু এসব ঝামেলা পোহানোর কারণে সেই ডেটা ভলিউম আর ব্যবহারই করা হয় না । 

অথচ গ্রামীণ ফোন কিছুদিন আগেই তাদের সাড়ে পনেরো হাজার টাওয়ারে এলটি সেবা চালু করেছে। বাংলা লিংকের প্রায় দশ হাজার টাওয়ারে এই সেবা চালু আছে অনেক আগে থেকেই. আরেক মোবাইল অপারেটর রবি তাদের এগারো হাজার বেজ স্টেশন বা টাওয়ারে ফোর পয়েন্ট ফাইভ জি বা এলটি অ্যাডভান্স চালু আছে বলে জানিয়েছে. যদিও রবি নেটওয়ার্ক কে বসানো ওক্লা সার্ভার গড়ে সাড়ে বারো এমবিপিএ করতে পারছে না. আন্তর্জাতিক মান থেকে এদেশের মোবাইল ইন্টারনেট স্পিড কতটা পিছিয়ে আছে তার একটা ছোট্ট প্রমান. গত জানুয়ারি মাসে আমাদের দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গড় ডাউনলোড স্পিড ছিল দশ দশমিক পাঁচ সাত এমবিপিএস. আপলোড স্পিড সাত দশমিক এক নয় এমবিপিএস. অথচ উন্নত দেশগুলোতে এই গতিবেগ ছিল একশো থেকে একশো সত্তর এমবিপিএস এর ওপর. ফাইভ জি আসছে এই অজুহাত দেখিয়ে মোবাইল ফোন অপারেটররা দীর্ঘদিন ধরে তাদের থ্রিজি ও ফোরজি নেটওয়ার্ক উন্নয়নে কোন ধরনের বিনিয়োগ করেননি. টাওয়ার শেয়ারিং নিয়েও নানা সমস্যা আছে. 


এছাড়া প্রয়োজনীয় স্প্রেকড্রাম না থাকার কারণে যে এলাকায় গ্রাহক বেশি সেই এলাকায় ইন্টারনেটের গতি ততই কম. যে এলাকায় যতটা বিটিএস প্রয়োজন ততটা নেই. ধরা যাক একটি অপারেটরের গ্রাহক সংখ্যা আট কোটি।

 কিন্তু তাদের স্পেকট্রাম বরাদ্দ আছে মাত্র সাইত্রিশ মেগা হার্জস. যেখানে গ্রাহক হিসেবে তাদের থাকার কথা ছিল একশো মেগা হার্জস তরঙ্গ. অথচ মানসম্পন্ন সেবা না দিয়েও তারা মুনাফা অর্জন করছে.

 করোনা কালে গত এক বছর কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই লাভের মুখ দেখেছে মোবাইল ফোন অপারেটররা. কিন্তু সেই লাভের একটা অংশ গ্রাহকদের ভালো ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার জন্য ব্যয় করেনি তাদের কেউই. অনেকেই বলেন বাংলাদেশের মোবাইল ইন্ডিয়ানের যে দাম উন্নত বিশ্বের তুলনায় অনেক কম. কথাটা সত্য । আবার সেই কম দামটা থেকেও অপারেটররা প্রচুর লাভ করতে পারেন. কারণ আমাদের দেশে মোবাইল টাওয়ার প্রতি সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা অনেক, অনেক, অনেক বেশি. কিন্তু একই tower এ হাজার হাজার সক্রিয় গ্রাহক থাকলেও, তাদের মানসম্পন্ন সেবা দেওয়ার জন্য tower এর base band এর টেকনিক্যাল resource একেবারেই অপর্যাপ্ত. আমাদের দেশে প্রতিটি মোবাইল টাওয়ারের রিসোর্স হিসেবে সাধারণত পঁচাত্তর থেকে একশোটি ডাউনলোড ও আপলোড রিসোর্স থাকে. যেটা মোট গ্রাহকের চাহিদার তুলনায় অতি নগন্য.

 এই resource সবার ভাগ করা হয় দুই বছরের ভিত্তিতে. এই কারণে speed টেস্টে internet এর যে গতিবেগ পাওয়া যায় বাস্তবে তার চার ভাগের এক ভাগও গ্রাহক পাননা. এ কারণে একই resource বেশি সংখ্যক ভোক্তার মধ্যে ভাগ হতেই থাকে. আর internet এর গতিবেগ কমতেই থাকে. এ কারণে Messenger বা WhatsApp এর কল ড্রপ কিংবা YouTube Facebook এর পেজ লোডিং নিয়মিত ঘটনা. মোবাইল অপারেটর গুলো পাল্টা দোষারোপ করে বিটিআরসিকে. ফোরজি প্রযুক্তিতে ব্যবহারের উপযোগী সাতশো আটশো নয়শো চোদ্দশো, আঠারোশো, একুশশো, ছাব্বিশশো এবং সাতাশশো ব্যান্ডের তরঙ্গগুলোকে বিটিআরসি সহজলভ্য করতে পারেনি. টেলিটক যেমন অল্প সংখ্যক গ্রাহক নিয়ে কিছু তরঙ্গ নষ্ট করছে তেমনি রেল বা সেনাবাহিনীর জন্য রিজার্ভে থাকা কিছু পরিমাণ তরঙ্গ অপচয় হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অপারেটরদের দাবি সব ধরনের রাজস্ব মিলিয়ে তাদের মোট আয়ের অর্ধেকেরও বেশি সরকারকে দিতে হয় । তাই উচ্চ মূল্যের ভালো নেটওয়ার্ক সার্ভিস প্রোভাইড করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের টেলি যোগাযোগ মন্ত্রণালয় নতুন তরঙ্গগুলোর স্পেকট্রাম বরাদ্দের জন্য নিলাম আয়োজন করার ব্যাপারে যতটা আগ্রহী মোবাইল ইন্টারনেট সেবার ত্রুটিগুলো সারিয়ে ইন্টারনেটের সুফলভোগী কোটি কোটি মানুষের উপকার করার বেলায় ঠিক ততটাই যেন উদাসীন. হাজার হাজার ফিন্যান্সার তরুণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে শহর এবং গ্রামাঞ্চলে. যারা ভালো ইন্টারনেট স্পিডের অভাবে বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন. অনলাইনে যেসব উদ্যোক্তারা ব্যবসা করেন যে ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস করেন কিংবা যাদের হাই-রোজগার ইন্টারনেটের উপরেই নির্ভর করে. সেই মানুষগুলো পড়েছেন মহা বিপদে. অক্লার এই জরিপে বাংলাদেশের আট ধাপ উপরে থাকা দেশটার নাম উগান্ডা । যে দেশ কে নিয়ে আমরা সব সময় ট্রল করি তারাও আমাদের চেয়ে আট ধাপ এগিয়ে আছে মোবাইল ইন্টারনেটের জগতে।


 জাম্বিয়া, তানজানিয়া, সোমালিয়ার, ঘানা, সুদান এবং জিম্বাবুয়ের মোবাইল ইন্টারনেট স্পিডও আমাদের চেয়ে অনেক বেশি.  

মন্তব্যসমূহ

Blog Posts

লুসিড ড্রিম কাকে বলে ? লুসিড ড্রিম কিভাবে দেখতে হয় ?

 স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ করার কথা ভেবেছেন কখনো? নিশ্চয়ই ভাবছেন জেগে জেগে দিবাস্বপ্ন দেখার কথা বলছি না তো? কিন্তু না, রীতিমতো ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্নও নিয়ন্ত্রণের কথাই বলছি, আপনার ইচ্ছামত স্বপ্ন দেখবেন। ইচ্ছা মতো নিয়ন্ত্রণ করবেন। আর পছন্দ না হলে অর্থাৎ দুঃস্বপ্ন দেখা শুরু করলে সেটার গতিপথ পাল্টে দেবেন একেবারে নিমেষে। আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় এটা খুবই সম্ভব একে বলা হয় লুসিভ ড্রিম। লুসিড ড্রিমিং এর সাথে আপনারা অনেকেই হয়তো পরিচিত আছেন। অনেকে পরিচিত থাকলেও হয়তো এটা কেন হচ্ছে বা কিভাবে হচ্ছে তা নিয়ে বেশ দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছে এসবেরই উত্তর মিলবে আজকের এই লিখাতে।   লুসিড ড্রিম অর্থ কি? সহজ বাংলায় অনুবাদ করতে গেলে বলা যায় লুসিড অর্থ পরিষ্কার. অর্থাৎ স্পষ্ট আর dream মানে তো আমরা সবাই জানি যে স্বপ্ন। লুসিড ডিম হলো সেই স্বপ্ন যে আমাদের স্পষ্ট ভাবে মনে থাকে এবং স্বপ্ন চলাকালীন সময়েও আমরা এ উপলব্ধি করতে পারি যে এটি বাস্তব নয় বরং এটি স্বপ্ন কিন্তু শুধুমাত্র আক্ষরিক অর্থ দিয়ে লুসিড ড্রিম ব্যাখ্যা করলে ভুল হবে একটু অন্যভাবে বলা যাক ।  মনে করুন স্বপ্নে আপনি কি পাহাড়ের উপর থেকে দ্রুত গ...

ন্যানো টেকনোলজি কিভাবে কাজ করে ?

  যদি বলি আপনার চোখ দেখতে পারে না এমন গভীর ও প্রায় অনাবিষ্কৃত একটা পৃথিবী আছে. হয়তো বলতে পারেন যে মহাবিশ্বে কত গ্রহই তো আছে? সব খোঁজ কি আমরা পেয়েছি? কিন্তু যদি বলি আমাদের এই পৃথিবীর ভেতরে আরো একটি জগত আছে এবং যে জগৎ ছড়িয়ে আছে আমাদের গোটা বিশ্ব জুড়ে. এইবার হয়তো নড়েচড়ে বসবেন. হ্যাঁ আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে এমন এক রাজ্য যে আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না. এটাকে বলা হয় অণুবীক্ষণিক বিশ্ব. এই অণুবীক্ষণই বিশ্ব প্রচন্ড আকর্ষণীয় ও চমকে দেওয়ার মতো. কি কি ঘটছে এখানে তা আমার আপনার কল্পনারও বাইরে. এটা যেন কোনো ভিন গ্রহ বাসীদের রাজ্য. সম্ভাবনার দুয়ার খুলে রাখা আছে এই অণুবীক্ষণিক বা nano বিশ্বে.  ন্যানো কি ন্যানো হলো পরিমাপের একক। এক মিটারের একশো কোটি ভাগের এক ভাগ হচ্ছে এক ন্যানো। আর ন্যানো টেকনোলজি হলো বিজ্ঞানের এই অতি ক্ষুদ্র স্তরে একটা কিছু তৈরী করা আসলে শুধু তৈরি করা না. ন্যানোমিটার স্কেলে পরিবর্তন, পরিবর্তন, ধ্বংস বা সৃষ্টি সম্পর্কিত টেকনোলজিকেই ন্যানো টেকনোলজি বলে. অর্থাৎ ন্যানোমিটার স্কেলে পরিমিত যেকোনো বিষয়ে বহুমাত্রিক টেকনোলজিকে ন্যানো প্রযুক্তি বা ন্যানো টেকনোলজি বলা যে...

স্টকহোম সিন্ড্রম কি ? স্টকহোম সিন্ড্রম কেন হয় ?

ধরুন আপনাকে কেউ অপহরণ করল. আটকে রাখল অজানা কোন জায়গায়. কিংবা জিম্মি করল কোন বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য. হয়তো আপনাকে মেরে ফেলাটাই অপহরণকারীদের লক্ষ্য. পুলিশ আপনার খোঁজ পাচ্ছে না. এদিকে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় অস্থির হয়ে আছে আপনার স্বজনরা. এক পা দুই সপ্তাহ পার হয়ে হয়তো আপনাকে উদ্ধার করা হল. এই কয়েকটা দিন আপনি সূর্যের আলো দেখেননি. বন্দি অবস্থায় এক একটা ঘন্টাকেই আপনার কাছে মনে হয়েছে এক একটা মাসের মতো লম্বা. মুক্তির পর অপহরণকারীদের প্রতি কেমন অনুভূতি কাজ করবে আপনার? হাতের কাছে পেলেই তাদেরকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করবে তাই না? কিন্তু সেটা না করে বাড়ি ফেরার পর আপনি যদি সেই অপহরণকারীদের প্রশংসা শুরু করেন? তাহলে লোকজন আপনার দিকে কুঁচকে তাকাবে বৈকি? আপনি যদি অপরাধের তদন্তে পুলিশকে ঠিকমতো সাহায্য না করেন, আপনাকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটাই কিন্তু স্বাভাবিক. তার চেয়েও অবাক করার মতো ব্যাপার. কখন ঘটবে জানেন? যখন আদালতে গিয়ে আপনি বলবেন. আপনাকে যারা অপহরণ করেছিল তাদের প্রতি আসলে আপনার কোন অভিযোগ নেই. আপনি তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করতে চান. কি ভাবছেন? এমন পাগলামি আপনি কেন করবেন? পাগলামি বলুন আর যাই বলুন. ...

মিনিমালিজম কি ? কিভাবে মিনিমালিস্ট হওয়া যায় ?

মিনিমামলিজম এই ধারণাটি বিগত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং এর যথেষ্ট কারণও আছে. এই পুরো ব্যাপারটা কি? সেটাকে সঙ্গায়িত করা যায় এভাবে যে,  মিনিমালিজম হচ্ছে যা আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সেগুলোকে ধারণ করা এবং বাকি সব কিছু যা আমাদের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে নেয় সেগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করা।   অর্থাৎ কোন কোন বিষয়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন জিনিসগুলোকে আমাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা থাকা এবং বাকি সব ত্যাগ  করে দেয়. সেগুলো নিয়েই জীবন ধারণ করা. কিন্তু এমন সংজ্ঞায়ন সত্ত্বেও minimalism কোন ধরাবাধা জীবন ব্যবস্থা নয় বা মিনিমালিস্ট হতে হলে কোন নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলতে হবে এরকমটিও কিন্তু নয়. মিনিমালিস্ট লাইফ স্টাইল এমন একটি বিষয় যা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য স্বতন্ত্র। এক্ষেত্রে মূল বিষয়টি হচ্ছে সত্যিকার অর্থে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা নিয়ে সেই অনুযায়ী জীবন ধারণ করা. প্রিয় দর্শক চলুন দেখি মিনিমালিজম কিভাবে আপনার জীবনধারা বদলে দিতে পারে।  মিনিমালিস্ট জীবন অবশ...

সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান কি ?

সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান দু হাজার বারো সালের চৌঠা জানুয়ারি। ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ ডট ফোর চ্যান ডট কম নামের ওয়েবসাইটের বুলেটিন বোর্ডে ছবি সহ একটি ম্যাসেজ পোস্ট করা হয়. ওয়েবসাইটের নীতিমালা অনুযায়ী ছবি প্রকাশকারীর নাম পরিচয় গোপন রাখা হয়. অজ্ঞাত পোস্ট করি সেই ছবিতে ব্যবহারকারীদের চিত্রের মাঝেই লুকানো একটি বার্তা উন্মোচন করার জন্য চ্যালেঞ্জ জানান. সেই মেসেজটিতে লেখা ছিল হ্যালো আমরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের খুঁজছি তাদের খোঁজার জন্য আমরা একটা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি । এই ছবিতে একটা মেসেজ লুকানো আছে এটাকে খুঁজে বের করো । এটাই তোমাদের আমাদের কাছে নিয়ে আসবে. আমরা সেসব স্বল্প সংখ্যক ব্যক্তিকে দেখার অপেক্ষায় আছি যারা এটি সম্পূর্ণ করতে পারবে. Good luck । আর নিচে ছিল একটি কোড থ্রি থ্রি জিরো ওয়ান. পুরো ইন্টারনেট দুনিয়া তোলপাড় হয়ে গেল যেন হঠাৎ করে. পৃথিবীর সেরা হ্যাকার এবং কোড সমাধানকারীরা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা প্রমানের জন্য এই পরীক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়লো আর এই রহস্যময় ধাঁধার নাম দেওয়া হলো সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান।  সিকাডা অর্থ মত বা ঘুগরি পোকা. ছবি পোস্ট করার কিছুক্ষণের মাঝেই গ...

সারোগেসি কি ?

সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান ধারণ করা নিয়ে এখনো বহু বিতর্ক আছে. শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বেই এই পদ্ধতি নিয়ে তর্ক বিতর্কের শেষ নেই.  এটার আইনি প্রক্রিয়াও জটিল। কারণ এটি একেক রাষ্ট্রে. শারোগেসি আইন একেক রকম. নারী মা হবেন প্রাকৃতিক নিয়ম সমাজ এমনটাই দেখতে অভ্যস্ত. কিন্তু কোন কারণে মা হবার ক্ষমতা না থাকলে তাকে পরিবার ও আশপাশ থেকে যে পরিমাণ কটু কথা শুনতে হয় তা সাধারণ মানুষের ধারণারও বাইরে.   সরোগেসি বিষয়টি কি? চিকিৎসা শাস্ত্রের অগ্রগতি এমন মায়েদের সামনে এনেছে যারা গর্ভ ভাড়া দিয়ে নিজে বাঁচেন অন্যদের মাতৃ সুখ দেন । একজন নারীর গর্ভে অন্য দম্পতির সন্তান ধারণের পদ্ধতিকে সারোগেসি বলা হয়.সারোগেসির এই  পদ্ধতি বেশ দীর্ঘকালীন. আইভিএফ পদ্ধতিতে স্ত্রী ও পুরুষের ডিম্বাণু শুক্রাণু দেহের বাইরে নিষিক্ত করে তা নারীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়. কিন্তু এখানেও জটিলতা. কেন? সে বিষয়ে পরে আসছি. বাংলাদেশ সহ বহু দেশই এই সারোগেসি একরকম ভাবে নিষিদ্ধ. সুতরাং বিষয় টি  সংবেদনশীল. এমনকি বেশিরভাগ ধর্মেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা. চলুন কথা বলি সারোগেসি মাদার সম্পর্কে। আইভিএফ বা টেস্ট টি...

কিভাবে লিমিটলেস হওয়া যায় ? লিমিটলেস আসলে কিভাবে কাজ করে ?

এনজিটিপিল,  এটা এমন এক পিল যা আপনাকে করবে আল্ট্রা ফোকাসড. দেবে দুর্দান্ত মোটিভেশন. বের করে আনবে আপনার সর্বোচ্চ সম্ভাবনা. আপনি হয়ে উঠবেন আনস্টপল. বাস্তবতা পাবে প্রতিটি স্বপ্ন. কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এমন কোন পিলের অস্তিত্ব নেই. ফলাফল আপনি আটকে আছেন একটি খাদে. সারাক্ষণ ক্লান্তি নিয়ে হয়ে উঠছেন আনপ্রোডাক্টিভ. নষ্ট হচ্ছে ক্রিয়েটিভিটি. সময় গড়িয়ে যায়. ঋতুর পরিবর্তন ঘটে. কিন্তু আপনি ডুবে থাকেন এক হতাশায় যাতে আপনি দিন দিন পিছিয়ে পরছেন. আপনি যা যা এতদিন অর্জন করবেন ভেবেছিলেন তা কিছুই আপনি অর্জন করতে পারেননি । নিজেকে সান্তনা দিচ্ছেন আগামীকাল হবে ভিন্ন। কিন্তু তা কখনোই হয়ে ওঠে না এখন যদি আপনাকে বলি কোনো জাদুকরী পিলের সাহায্যে নয় বাস্তবিক লিমিটলেস হয়ে ওঠা সম্ভব।  একদম প্রমাণিত পদ্ধতিতে যা একেবারে ফ্রিতে ব্যবহার করা সম্ভব.  তো আছেন তো শেষ পর্যন্ত ?  Limit less হওয়ার যাত্রায় ।  স্টেপ ওয়ান : এনার্জি--  মাত্র কয়েক মাস আগে আমি নিজেও আপনার মতো কর্মশক্তিহীন অনুভব করতাম. সামান্য কাজেই আসতো অবসন্নতা, গেয়ে ধরতো ক্লান্তি একদিন হঠাৎ টের পেলাম আমি নিজেই নিজের energy নি...

পেগাসাস স্পাইওয়ার কি ?

গত কিছুদিন ধরেই বিশ্ব রাজনীতি এবং প্রযুক্তি জগৎ এই দুই জায়গাতেই আলোচনার বিষয়বস্তু একটাই। সেটা হচ্ছে পেগাসাস স্পাইওয়ার. বিশ্বজুড়ে নানান দেশের মানবাধিকার কর্মী সাংবাদিক আইনজীবী ও রাজনীতিকদের ফোনের নজরদারি চালানোর ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ইজরায়েলের বেসরকারি কোম্পানি nso গ্রুপের তৈরি করা এই সফটওয়্যার নিয়ে এখন তুমুল তরজা চলছে দুনিয়া জুড়ে । চলুন কথা বলি দুনিয়া ওলট পালট করে দেওয়া স্পাইওয়ার সম্পর্কে । পেগাসাস মূলত একটি নজরদারি বিষয়ক সফটওয়্যার । ইজরাইলের সংস্থা এনএসও ই সফটওয়্যার তৈরি করেছে। যা দিয়ে যে কারো মোবাইলে আড়ি পাতা যায়. এটা কিন্তু সাধারণ কোন নজরদারি নয়. আগে ফোনে আড়ি পেতে শুধু দুই প্রান্তের কথাবার্তা শোনা যেত. আর সফটওয়্যারের মাধ্যমে গোটা ফোনটারই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হ্যাকাররা. ফোনের কথাবার্তা WhatsApp এর চ্যাট, ছবি, ফোনে কি কি তথ্য আছে সবই জানা যায়. আরো ভয়ানক ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল যিনি ব্যবহার করছেন তিনি জানতেই পারেন না যে তার ফোন হ্যাক করা হয়েছে. সমস্ত তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর কাছে. কিন্তু কারো ফোনে পেগাসাস software install করতে হলে তো সেই ফোনটাকে...

রেট রেস কি ?

      আপনি ঠিক কখন ইঁদুর দৌড়ে যোগ দিয়েছেন এটা হিসাব করা কঠিন. কিন্তু নিশ্চিত থাকুন আপনি এই দৌড়ে আছেন. ক্লাস eight এ পড়ার সময়ের কথা মনে আছে? সামনে বৃত্তি পরীক্ষা পাটিগণিত বীজগণিতের অংক প্যাঁচ লাগাচ্ছে বিজ্ঞানের জটিল সব সূত্র ভোরে ওঠে প্রাইভেট টিউটরের বাসায় ছোটা রাত জেগে পড়াশোনা. বয়সের তুলনায় অনেক বেশি কর্ম ব্যস্ত একটা সময় নিশ্চয়ই কাটিয়েছেন তখন? আমরা সবাই কাটিয়েছি. সেই সময় নিশ্চয়ই অভিভাবক বলেছে এই তো আর কটা দিন. বৃত্তি পরীক্ষা শেষ হলেই জীবন শান্তি আর শান্তি. জীবনের নানা এপিসোডে আপনি এই কথাগুলো শুনেছেন অনেকবার অনেকের মুখে. এসএসসি পরীক্ষাটা দাও, কলেজে উঠলেই তো স্বাধীনতা. একবার ভার্সেটিতে উঠতে পারলেই জীবন হবে আনন্দে ভরপুর. একবার জব লাইফে ঢোকো. নিজের টাকায় আয়েশ করার মজাই অন্যরকম. শুনেছেন না এসব?  বয়স ঘড়ির ত্রিশের প্রান্তে দাঁড়িয়ে হিসেবগুলো মেলাতে পারেন কি? কি মনে হয়? এই এপিসোডগুলোর কোনোটা পার হবার সময় জীবন খানিকটা হলেও সহজ হয়েছে? সুন্দর হয়েছে? হয়নি, হবেও না, মিথ্যা একটা মরীচিকার আশায় আমরা ছুটেছি ঠিকই আমাদের ছোটানো হয়েছে, কিন্তু হিসাব মেলেনি ছুটত...

ডাচ ডিজিজ কি ? অর্থনীতি কিভাবে রোগে ভুগতে পারে ?

সো হোয়াট দ্য হেল দিস ডাচ ডিজিজ? ডাচ ডিজিজ শব্দটা শুনলে আপনার স্বাভাবিক ভাবেই মনে হবে এটা কোন রোগের নাম । হ্যাঁ এটা একটা রোগ. তবে মানুষের নয়. কোন প্রাণীরও নয়. তাহলে? এটা মূলত অর্থনীতির একটা সিন্ড্রোম. কিন্তু অর্থনীতির টার্মের সঙ্গে ডিজিজ কথাটা যুক্ত হল কেন? ডাচ বা নেদারল্যান্ড দেশটারই বা কি ভূমিকা এতে?  না এটা বুঝতে আপনাকে অর্থনীতির ছাত্র হতে হবে না ।কিন্তু বিষয়টা বেশ মজার দু হাজার সতেরো সালে বুকিং ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত ডাচ ডিজিজ এন্ড ইকোনমিক ইলনেস ইজি টু ক্যাচ ডিফিকাল্ট টু কিওর শিরোনামের আর্টিকেলের শুরুতেই বলা হয়ে ছিল- what a persistantly low oil price, dose to oil richan prises like what a long cold winter dust to people একথার তাৎপর্য কি?  সহজ বাংলায় বুঝিয়ে বলা যায় যদি বিশ্ববাজারে ক্রমাগতভাবে তেলের দাম কমতে থাকে তখন তেল সমৃদ্ধ তেলের ওপর ভাবে নির্ভরশীল দেশগুলোর অর্থনীতি নানান সমস্যায় ভুগতে পারে. এখানে তেল একটা রূপক মাত্র. তেলের জায়গায় চাল, ডাল, লবণ, চিনি যেকোনো কিছুই হতে পারে. হতে পারে কোন শিল্প যেমন টেক্সটাইল গার্মেন্টস বা ইনফরমেশন টেকনোলজিও. মূল বিষয়টা হচ্ছে...