সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাটারফ্লাই ইফেক্ট কি ?

 মিস্টার শেফাডের ড্রইং ক্লাস নেবার কথা ছিল দুপুর তিনটায় । কিন্তু হঠাৎ তার বাসা থেকে জরুরি ফোন আসে তার মেয়ে এম বাসায় চিজ কাটতে গিয়ে হাত কেটে ফেলেছে। তিনি দ্রুত স্কুল ত্যাগ করেন তার বাড়ি গিয়ে দেখেন ভয়ঙ্কর অবস্থা. ছোটলেন তিনি মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে. 

এদিকে মিস্টার শেফার্ডের ড্রয়িং ক্লাস না নেওয়ার কারণে জাস্টিনদের স্কুল ছুটি হয় এক ঘন্টা আগে।বাসায় ফিরে সে তার মার কাছে আবদার করে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার জন্য। জাস্টিনের বাবা সেদিন বাসায়। তাই তারা ঠিক করে সিনেমা দেখতে যাবে। প্রাইভেট কারে তারা বাসা থেকে বের হয় । কিন্তু সিনেমার টিকিট কাটতে গিয়ে তারা টিকিট পায় না।

ফলে জাস্টিন ও তার মা-বাবা ঠিক করে রেস্টুরেন্টে খেতে যাবে। রেস্টুরেন্টে খাবার শেষে বাসায় ফেরার সময় হঠাৎ তাদের কারের টায়ার পামচার করে দেয়। জাস্টিনের বাবা জায়গা ঠিক করাতে। জাস্টিন এবং তার মা বাসায় ফেরে উবারে। বাসে ফিরতে না ফিরতেই কল আসে, জাস্টিনর বাবা টায়ার ঠিক করিয়ে ফেরার সময় অ্যাক্সিডেন্ট করেছেন. তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে. জাস্টিন ও তার মা ছুটেন হাসপাতালের দিকে. এখানে থেমে একটি পেছনে ফিরি চলুন।

 মিস্টার সেফার্ডের মেয়ে এম বাসায় চিজ কাটতে গিয়ে হাত কাটলো না। মিস্টার সেফার্ডের কাছে ফোনও আসলো না।তার ক্লাস ঠিক মতো চলল। ফলে জাস্টিনের স্কুল ছুটি হল যথা সময়।বাসায় ফিরে সে বাইরে যাওয়ার আবদারও করলো না। না থাকলেও সিনেমার টিকিট কাটার ঝামেলা না রইলো রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়ার বিষয় সবার বাসায় থাকার কারণে জাস্টিনের বাবার অ্যাক্সিডেন্টও হলো না সুতরাং দেখা যাচ্ছে সামান্য চিস কাটা থেকে জাস্টিনের বাবার অ্যাক্সিডেন্ট পর্যন্ত ঘটনার পরিবর্তন ঘটে গেল। শুধু তাই নয় জাস্টিনের বাবার কারণে যেসব মানুষ ব্যস্ত হলো তাদের প্রত্যেকের ঘটনা চক্রে একটা বিশৃঙ্খলা চলে আসলো। আবার যদি তারা সিনেমার টিকিট কাটতে পারতো তাহলে ঘটনা প্রবাহ হতো একদম অন্যরকম। একে বিজ্ঞানের ভাষায় সহজে ক্যাওয়াস থিওরি বা বিশৃঙ্খলা তত্ত্ব বলে.


 ওপরের ঘটনাগুলো কাল্পনিক. কিন্তু এ কথা একশো ভাগ সত্যি যে এই পৃথিবীর সব মানুষ একে অপরের কাজ দ্বারা কোন না কোন ভাবে প্রভাবিত । আর এখানেই আসে বিখ্যাত বাটারফ্লাই এফেক্টের কথা। বাটারফ্লা এফেক্টের কথা প্রথম উপস্থাপন করেন গণিত এবং আবহাওয়াবিদ এডওয়ার্ড লরেঞ্জ । আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্যা অ্যাডভান্সমেন্ট অফ সাইন্সের একশো ঊনচল্লিশ তম অধিবেশনে. তিনি প্রশ্ন রেখেছিলেন ব্রাজিলে যদি কোন একটি প্রজাপতি তার ডানা ঝাপটায় তবে সেই ডানা ঝাপটানোর সুবাদে টেক্সাসে টর্নেডো হতে পারে কিনা ? অনেকেই তার এই প্রশ্ন পাগলের প্রলাপ মনে করেছিল সে সময়। কিন্তু পরবর্তীতে বিজ্ঞান দেখে যেটা সম্ভব যেকোনো ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র কাজ কোনো ঘটনার শেষ পরিণতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করতে পারে। আর এডওয়ার্ড লরেঞ্জ আসলে এটিই বোঝাতে চেয়ছেন তার বক্তব্যে. উনি গানিতিকভাবে দেখান যে বিশ্বের কোন তরঙ্গকে সামান্য পরিবর্তন করা হলে সেই পরিবর্তন বিশ্বের অন্য সকল তরঙ্গকে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করে। সাধারণত অরৈখিক এবং অনিশ্চিত ঘটনা সমূহের বিজ্ঞানকেই বলা হয় বিশৃঙ্খলার বিজ্ঞান। 

বিজ্ঞানের অন্য সব শাখা সাধারণত সরলরৈখিক গণিত নির্ভর এবং নির্দিষ্ট ফলাফল প্রাপ্তির ঘটনা নিয়েই কাজ করে। যেমন তড়িৎ বিজ্ঞান, মহাকর্ষক কিংবা রাসায়নিক বিক্রিয়া। কিন্তু বিশৃঙ্খলা তত্ত্বে সাধারণত ঘটনার একদম সঠিক ভবিষ্যৎবাণী করা কখনই সম্ভব নয় । কিন্তু কিভাবে লরেঞ্জ পেলেন বাটারফ্লাই এফেক্টের আইডিয়া?

 লরেঞ্জ ছিলেন আবহাওয়াবিদ. তিনি একদিন আবহাওয়ার পূর্বাভাস পুনরায় খতিয়ে দেখছিলেন, তখন দ্রুত কাজ করার জন্যে দশমিকের পরে ছয়টি সংখ্যা না নিয়ে তিনি তিনটি সংখ্যা নিয়ে হিসাবটির ফলাফল বের করেন। ফলাফল দেখে তিনি রীতিমতো অবাক হন. আগের হিসাব থেকে এই হিসাব সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু যে মান তিনি বাদ দিয়েছিলেন তা কিন্তু প্রায় শূন্যের কাছাকাছি । এমনকি আবহাওয়ার পূর্বাভাসের গ্রাফ দুটিতেও চলে আসে বিশাল পার্থক্য । তখন লোরেঞ্জ শুরু করলেন ঘাটাঘাটি। বিভিন্ন দশমিক সংখ্যা দিয়ে লরেঞ্জ হেরফের লক্ষ্য করছিলেন. প্রতিবার গ্রাফে বিশাল পার্থক্য. এত ক্ষুদ্র কিছু ডাটার জন্য আবহাওয়ার এই পুরোপুরি বিপরীত রূপ দেখে তিনি অবাক হন. তিনি পেশ করেন তাঁর বিখ্যাত গবেষণাপত্র বাটারফ্লাই ইফেক্ট। 

অর্থাৎ ক্ষুদ্র কোনো বিষয়ের পরিবর্তনও বিশাল বিশৃঙ্খলা নিয়ে আসতে পারে । পরবর্তীতে ব্যাপক গবেষণা হয় butterfly fake নিয়ে। Batterfly effect এর সবচেয়ে সুন্দর উদাহরণ দেওয়া যায়. আর একটা গল্প বলে। উনিশশো ছয় সাল. ভেনা শহরে এক চিত্রশিল্পী ইহুদী কন্যার প্রেমে পড়েন তারই ছবি আঁকতে গিয়ে। ছেলেটি তার প্রিয় কুকুরটির মাধ্যমে মেয়েটির কাছে চিঠি পাঠাতো। ধর্ণাঢ্যমের পরিবার এই গরিব ছেলেটিকে মেনে নিতে রাজি হয়নি। একদিন তারা ছেলেটির কুকুরটিকে মেরে ফেলে। ছেলেটির জীবন বদলে যায় এই ঘটনায়। যোগ দেয় সেনাবাহিনীতে. উনিশশো-আঠারো সালে এক ব্রিটিশ সেনা তাকে পিটিয়ে জখম করে । শুধু তাই নয়, তাকে হত্যার আদেশও ছিল. কিন্তু ব্রিটিশ সেনা দয়া করে তাকে ছেড়ে দেয়. আর সেই ছেলে ছিল পরবর্তীকালের ভয়ঙ্কর শাসক এডলফ হিটলার.


বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আনুমানিক তেষট্টি লাখ ইহুদী মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল তারই নির্দেশে। ধারণা করা হয় সেই ইহুদি মেয়ের পরিবারের কারণেই তার এত ঘৃণা ছিল ইহুদিদের প্রতি। আর কি হতো সেই ব্রিটিশ সেনা যদি সেদিন তাকে দয়া না করে হত্যাই করতো গোটা পৃথিবীর ইতিহাস বদলে যেত সেদিন । বাটারফ্লাই এফেক্টের আরো একটি গল্প বলি চলুক বারোশো-পঁচাত্তর সালের বেলজিয়াম জিয়ালি নামের এক রাজ্যের এক কৃষক তার পাশের রাজ্য থেকে একটি গরু চুরি করে। গরুটি তিনি বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যান । কিন্তু কপাল খারাপ হলে যা হয় আর কি, পাশের রাজ্যের একজন তাকে দেখে ফেলে গরু সহ । কৃষককে বলা হয় যদি সে গিয়ে গরুটি ফেরত দিয়ে আসে পাশের গ্রামে, তবে তাকে ক্ষমা করা হবে। কৃষকও ভালো মানুষের মতো গরুটি ফেরত দিতে যায় । কিন্তু সেই রাজ্যের রাজা তাকে আটক করে এবং ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে । এই ঘটনায় মারাত্মক ক্ষেপে যান জেলেরাজ্যের রাজা। মাত্র এক গরু চুরির জন্য কাউকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হবে? তা তিনি মেনে নিতে পারেননি। এটাকে তিনি অপমান হিসেবে ধরে নেন এবং এই অপমানের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার জন্যে পাশের রাজ্যের সাথে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করে বসেন । কে জানতো এই যুদ্ধের ফল এমন হবে, টানা তিন বছর ধরে চলে যুদ্ধ । শুধু যে তাদের মাঝে এই যুদ্ধ সীমাবদ্ধ থাকে তা কিন্তু নয় পুরো বেলজিয়ামে ছড়িয়ে যায় এই যুদ্ধ। ধ্বংস হতে থাকে গ্রামের পর গ্রাম। প্রায় দুই লাখ মানুষ মারা যায় এই যুদ্ধে। বেলজিয়ামের ইতিহাসে এই যুদ্ধ দ্যাখা ভাসে বা ওয়ার অফ দ্য কাউ নামে পরিচিত । সামান্য গরু চুরির থেকে দুই লাখ মানুষের মৃত্য। কল্পনা করুন একবার, যদি সেই কৃষক সেদিন গরু চুরি না করতো তাহলে ইতিহাসই বদলে যেতে পারত। অবাক হলেও সত্যি যে butterfly effect দেখা গিয়েছিল তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনাতেও । 


উনিশশো বাষট্টি সালে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েই যেত। যদি না শেষ মুহূর্তে সঠিক বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ না করা হতো। সেদিন এক বিশেষ ভুল বোঝাবুঝির জন্য সোভিয়েত সাবমেরিন টপ টুডু লঞ্চ প্রায় করেই ফেলেছিলেন মার্কিন যুদ্ধ জাহাজের উদ্দেশ্যে। সোভিয়াত নিয়ম অনুসারে সাবমেরিন টর্পেটা লঞ্চের জন্যে ক্যাপ্টেন পলিটিকাল অফিসার এবং সেকেন্ড ইন কমান্ড অফিসার এই তিন পদস্থ প্রত্যেক ব্যক্তির সম্মতির প্রয়োজন । কিন্তু বাকি দুজন সম্মতি দিলেও সেকেন্ড ইন কমান্ড অফিসার সম্মতি দেননি । তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন দেশ ছিল । সে সময় এই দুই পরাশক্তি যুদ্ধে নেমে গেলে পারমানবিক বোমার ব্যবহার ছিল অনিবার্য । যার ফল হতো ভয়াবহ. এমনকি পৃথিবী থেকে মানুষের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারতো । এভাবেই খুব ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র কাজ কোনো ঘটনার শেষ পরিণতিকে উল্লেখযোগ্য ভাবে পরিবর্তন করতে পারে। পৃথিবীর ইতিহাসে তাকালে আরো অজস্র উদাহরণ দেখা যায়। আপনার নিজের দিকে তাকালেও তা বুঝতে পারবেন খুব সহজে। ভুল বা সঠিক যেই সিদ্ধান্তই নিন না কেন, আপনার জীবন বদলাচ্ছে. প্রতিনিয়ত সেই বিশৃঙ্খলা তত্ত্ব অনুসারে।    


 

মন্তব্যসমূহ

Blog Posts

লুসিড ড্রিম কাকে বলে ? লুসিড ড্রিম কিভাবে দেখতে হয় ?

 স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ করার কথা ভেবেছেন কখনো? নিশ্চয়ই ভাবছেন জেগে জেগে দিবাস্বপ্ন দেখার কথা বলছি না তো? কিন্তু না, রীতিমতো ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্নও নিয়ন্ত্রণের কথাই বলছি, আপনার ইচ্ছামত স্বপ্ন দেখবেন। ইচ্ছা মতো নিয়ন্ত্রণ করবেন। আর পছন্দ না হলে অর্থাৎ দুঃস্বপ্ন দেখা শুরু করলে সেটার গতিপথ পাল্টে দেবেন একেবারে নিমেষে। আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় এটা খুবই সম্ভব একে বলা হয় লুসিভ ড্রিম। লুসিড ড্রিমিং এর সাথে আপনারা অনেকেই হয়তো পরিচিত আছেন। অনেকে পরিচিত থাকলেও হয়তো এটা কেন হচ্ছে বা কিভাবে হচ্ছে তা নিয়ে বেশ দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছে এসবেরই উত্তর মিলবে আজকের এই লিখাতে।   লুসিড ড্রিম অর্থ কি? সহজ বাংলায় অনুবাদ করতে গেলে বলা যায় লুসিড অর্থ পরিষ্কার. অর্থাৎ স্পষ্ট আর dream মানে তো আমরা সবাই জানি যে স্বপ্ন। লুসিড ডিম হলো সেই স্বপ্ন যে আমাদের স্পষ্ট ভাবে মনে থাকে এবং স্বপ্ন চলাকালীন সময়েও আমরা এ উপলব্ধি করতে পারি যে এটি বাস্তব নয় বরং এটি স্বপ্ন কিন্তু শুধুমাত্র আক্ষরিক অর্থ দিয়ে লুসিড ড্রিম ব্যাখ্যা করলে ভুল হবে একটু অন্যভাবে বলা যাক ।  মনে করুন স্বপ্নে আপনি কি পাহাড়ের উপর থেকে দ্রুত গ...

ন্যানো টেকনোলজি কিভাবে কাজ করে ?

  যদি বলি আপনার চোখ দেখতে পারে না এমন গভীর ও প্রায় অনাবিষ্কৃত একটা পৃথিবী আছে. হয়তো বলতে পারেন যে মহাবিশ্বে কত গ্রহই তো আছে? সব খোঁজ কি আমরা পেয়েছি? কিন্তু যদি বলি আমাদের এই পৃথিবীর ভেতরে আরো একটি জগত আছে এবং যে জগৎ ছড়িয়ে আছে আমাদের গোটা বিশ্ব জুড়ে. এইবার হয়তো নড়েচড়ে বসবেন. হ্যাঁ আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে এমন এক রাজ্য যে আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না. এটাকে বলা হয় অণুবীক্ষণিক বিশ্ব. এই অণুবীক্ষণই বিশ্ব প্রচন্ড আকর্ষণীয় ও চমকে দেওয়ার মতো. কি কি ঘটছে এখানে তা আমার আপনার কল্পনারও বাইরে. এটা যেন কোনো ভিন গ্রহ বাসীদের রাজ্য. সম্ভাবনার দুয়ার খুলে রাখা আছে এই অণুবীক্ষণিক বা nano বিশ্বে.  ন্যানো কি ন্যানো হলো পরিমাপের একক। এক মিটারের একশো কোটি ভাগের এক ভাগ হচ্ছে এক ন্যানো। আর ন্যানো টেকনোলজি হলো বিজ্ঞানের এই অতি ক্ষুদ্র স্তরে একটা কিছু তৈরী করা আসলে শুধু তৈরি করা না. ন্যানোমিটার স্কেলে পরিবর্তন, পরিবর্তন, ধ্বংস বা সৃষ্টি সম্পর্কিত টেকনোলজিকেই ন্যানো টেকনোলজি বলে. অর্থাৎ ন্যানোমিটার স্কেলে পরিমিত যেকোনো বিষয়ে বহুমাত্রিক টেকনোলজিকে ন্যানো প্রযুক্তি বা ন্যানো টেকনোলজি বলা যে...

স্টকহোম সিন্ড্রম কি ? স্টকহোম সিন্ড্রম কেন হয় ?

ধরুন আপনাকে কেউ অপহরণ করল. আটকে রাখল অজানা কোন জায়গায়. কিংবা জিম্মি করল কোন বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য. হয়তো আপনাকে মেরে ফেলাটাই অপহরণকারীদের লক্ষ্য. পুলিশ আপনার খোঁজ পাচ্ছে না. এদিকে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় অস্থির হয়ে আছে আপনার স্বজনরা. এক পা দুই সপ্তাহ পার হয়ে হয়তো আপনাকে উদ্ধার করা হল. এই কয়েকটা দিন আপনি সূর্যের আলো দেখেননি. বন্দি অবস্থায় এক একটা ঘন্টাকেই আপনার কাছে মনে হয়েছে এক একটা মাসের মতো লম্বা. মুক্তির পর অপহরণকারীদের প্রতি কেমন অনুভূতি কাজ করবে আপনার? হাতের কাছে পেলেই তাদেরকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করবে তাই না? কিন্তু সেটা না করে বাড়ি ফেরার পর আপনি যদি সেই অপহরণকারীদের প্রশংসা শুরু করেন? তাহলে লোকজন আপনার দিকে কুঁচকে তাকাবে বৈকি? আপনি যদি অপরাধের তদন্তে পুলিশকে ঠিকমতো সাহায্য না করেন, আপনাকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটাই কিন্তু স্বাভাবিক. তার চেয়েও অবাক করার মতো ব্যাপার. কখন ঘটবে জানেন? যখন আদালতে গিয়ে আপনি বলবেন. আপনাকে যারা অপহরণ করেছিল তাদের প্রতি আসলে আপনার কোন অভিযোগ নেই. আপনি তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করতে চান. কি ভাবছেন? এমন পাগলামি আপনি কেন করবেন? পাগলামি বলুন আর যাই বলুন. ...

মিনিমালিজম কি ? কিভাবে মিনিমালিস্ট হওয়া যায় ?

মিনিমামলিজম এই ধারণাটি বিগত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং এর যথেষ্ট কারণও আছে. এই পুরো ব্যাপারটা কি? সেটাকে সঙ্গায়িত করা যায় এভাবে যে,  মিনিমালিজম হচ্ছে যা আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সেগুলোকে ধারণ করা এবং বাকি সব কিছু যা আমাদের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে নেয় সেগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করা।   অর্থাৎ কোন কোন বিষয়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন জিনিসগুলোকে আমাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা থাকা এবং বাকি সব ত্যাগ  করে দেয়. সেগুলো নিয়েই জীবন ধারণ করা. কিন্তু এমন সংজ্ঞায়ন সত্ত্বেও minimalism কোন ধরাবাধা জীবন ব্যবস্থা নয় বা মিনিমালিস্ট হতে হলে কোন নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলতে হবে এরকমটিও কিন্তু নয়. মিনিমালিস্ট লাইফ স্টাইল এমন একটি বিষয় যা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য স্বতন্ত্র। এক্ষেত্রে মূল বিষয়টি হচ্ছে সত্যিকার অর্থে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা নিয়ে সেই অনুযায়ী জীবন ধারণ করা. প্রিয় দর্শক চলুন দেখি মিনিমালিজম কিভাবে আপনার জীবনধারা বদলে দিতে পারে।  মিনিমালিস্ট জীবন অবশ...

সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান কি ?

সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান দু হাজার বারো সালের চৌঠা জানুয়ারি। ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ ডট ফোর চ্যান ডট কম নামের ওয়েবসাইটের বুলেটিন বোর্ডে ছবি সহ একটি ম্যাসেজ পোস্ট করা হয়. ওয়েবসাইটের নীতিমালা অনুযায়ী ছবি প্রকাশকারীর নাম পরিচয় গোপন রাখা হয়. অজ্ঞাত পোস্ট করি সেই ছবিতে ব্যবহারকারীদের চিত্রের মাঝেই লুকানো একটি বার্তা উন্মোচন করার জন্য চ্যালেঞ্জ জানান. সেই মেসেজটিতে লেখা ছিল হ্যালো আমরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের খুঁজছি তাদের খোঁজার জন্য আমরা একটা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি । এই ছবিতে একটা মেসেজ লুকানো আছে এটাকে খুঁজে বের করো । এটাই তোমাদের আমাদের কাছে নিয়ে আসবে. আমরা সেসব স্বল্প সংখ্যক ব্যক্তিকে দেখার অপেক্ষায় আছি যারা এটি সম্পূর্ণ করতে পারবে. Good luck । আর নিচে ছিল একটি কোড থ্রি থ্রি জিরো ওয়ান. পুরো ইন্টারনেট দুনিয়া তোলপাড় হয়ে গেল যেন হঠাৎ করে. পৃথিবীর সেরা হ্যাকার এবং কোড সমাধানকারীরা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা প্রমানের জন্য এই পরীক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়লো আর এই রহস্যময় ধাঁধার নাম দেওয়া হলো সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান।  সিকাডা অর্থ মত বা ঘুগরি পোকা. ছবি পোস্ট করার কিছুক্ষণের মাঝেই গ...

সারোগেসি কি ?

সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান ধারণ করা নিয়ে এখনো বহু বিতর্ক আছে. শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বেই এই পদ্ধতি নিয়ে তর্ক বিতর্কের শেষ নেই.  এটার আইনি প্রক্রিয়াও জটিল। কারণ এটি একেক রাষ্ট্রে. শারোগেসি আইন একেক রকম. নারী মা হবেন প্রাকৃতিক নিয়ম সমাজ এমনটাই দেখতে অভ্যস্ত. কিন্তু কোন কারণে মা হবার ক্ষমতা না থাকলে তাকে পরিবার ও আশপাশ থেকে যে পরিমাণ কটু কথা শুনতে হয় তা সাধারণ মানুষের ধারণারও বাইরে.   সরোগেসি বিষয়টি কি? চিকিৎসা শাস্ত্রের অগ্রগতি এমন মায়েদের সামনে এনেছে যারা গর্ভ ভাড়া দিয়ে নিজে বাঁচেন অন্যদের মাতৃ সুখ দেন । একজন নারীর গর্ভে অন্য দম্পতির সন্তান ধারণের পদ্ধতিকে সারোগেসি বলা হয়.সারোগেসির এই  পদ্ধতি বেশ দীর্ঘকালীন. আইভিএফ পদ্ধতিতে স্ত্রী ও পুরুষের ডিম্বাণু শুক্রাণু দেহের বাইরে নিষিক্ত করে তা নারীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়. কিন্তু এখানেও জটিলতা. কেন? সে বিষয়ে পরে আসছি. বাংলাদেশ সহ বহু দেশই এই সারোগেসি একরকম ভাবে নিষিদ্ধ. সুতরাং বিষয় টি  সংবেদনশীল. এমনকি বেশিরভাগ ধর্মেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা. চলুন কথা বলি সারোগেসি মাদার সম্পর্কে। আইভিএফ বা টেস্ট টি...

কিভাবে লিমিটলেস হওয়া যায় ? লিমিটলেস আসলে কিভাবে কাজ করে ?

এনজিটিপিল,  এটা এমন এক পিল যা আপনাকে করবে আল্ট্রা ফোকাসড. দেবে দুর্দান্ত মোটিভেশন. বের করে আনবে আপনার সর্বোচ্চ সম্ভাবনা. আপনি হয়ে উঠবেন আনস্টপল. বাস্তবতা পাবে প্রতিটি স্বপ্ন. কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এমন কোন পিলের অস্তিত্ব নেই. ফলাফল আপনি আটকে আছেন একটি খাদে. সারাক্ষণ ক্লান্তি নিয়ে হয়ে উঠছেন আনপ্রোডাক্টিভ. নষ্ট হচ্ছে ক্রিয়েটিভিটি. সময় গড়িয়ে যায়. ঋতুর পরিবর্তন ঘটে. কিন্তু আপনি ডুবে থাকেন এক হতাশায় যাতে আপনি দিন দিন পিছিয়ে পরছেন. আপনি যা যা এতদিন অর্জন করবেন ভেবেছিলেন তা কিছুই আপনি অর্জন করতে পারেননি । নিজেকে সান্তনা দিচ্ছেন আগামীকাল হবে ভিন্ন। কিন্তু তা কখনোই হয়ে ওঠে না এখন যদি আপনাকে বলি কোনো জাদুকরী পিলের সাহায্যে নয় বাস্তবিক লিমিটলেস হয়ে ওঠা সম্ভব।  একদম প্রমাণিত পদ্ধতিতে যা একেবারে ফ্রিতে ব্যবহার করা সম্ভব.  তো আছেন তো শেষ পর্যন্ত ?  Limit less হওয়ার যাত্রায় ।  স্টেপ ওয়ান : এনার্জি--  মাত্র কয়েক মাস আগে আমি নিজেও আপনার মতো কর্মশক্তিহীন অনুভব করতাম. সামান্য কাজেই আসতো অবসন্নতা, গেয়ে ধরতো ক্লান্তি একদিন হঠাৎ টের পেলাম আমি নিজেই নিজের energy নি...

পেগাসাস স্পাইওয়ার কি ?

গত কিছুদিন ধরেই বিশ্ব রাজনীতি এবং প্রযুক্তি জগৎ এই দুই জায়গাতেই আলোচনার বিষয়বস্তু একটাই। সেটা হচ্ছে পেগাসাস স্পাইওয়ার. বিশ্বজুড়ে নানান দেশের মানবাধিকার কর্মী সাংবাদিক আইনজীবী ও রাজনীতিকদের ফোনের নজরদারি চালানোর ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ইজরায়েলের বেসরকারি কোম্পানি nso গ্রুপের তৈরি করা এই সফটওয়্যার নিয়ে এখন তুমুল তরজা চলছে দুনিয়া জুড়ে । চলুন কথা বলি দুনিয়া ওলট পালট করে দেওয়া স্পাইওয়ার সম্পর্কে । পেগাসাস মূলত একটি নজরদারি বিষয়ক সফটওয়্যার । ইজরাইলের সংস্থা এনএসও ই সফটওয়্যার তৈরি করেছে। যা দিয়ে যে কারো মোবাইলে আড়ি পাতা যায়. এটা কিন্তু সাধারণ কোন নজরদারি নয়. আগে ফোনে আড়ি পেতে শুধু দুই প্রান্তের কথাবার্তা শোনা যেত. আর সফটওয়্যারের মাধ্যমে গোটা ফোনটারই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হ্যাকাররা. ফোনের কথাবার্তা WhatsApp এর চ্যাট, ছবি, ফোনে কি কি তথ্য আছে সবই জানা যায়. আরো ভয়ানক ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল যিনি ব্যবহার করছেন তিনি জানতেই পারেন না যে তার ফোন হ্যাক করা হয়েছে. সমস্ত তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর কাছে. কিন্তু কারো ফোনে পেগাসাস software install করতে হলে তো সেই ফোনটাকে...

রেট রেস কি ?

      আপনি ঠিক কখন ইঁদুর দৌড়ে যোগ দিয়েছেন এটা হিসাব করা কঠিন. কিন্তু নিশ্চিত থাকুন আপনি এই দৌড়ে আছেন. ক্লাস eight এ পড়ার সময়ের কথা মনে আছে? সামনে বৃত্তি পরীক্ষা পাটিগণিত বীজগণিতের অংক প্যাঁচ লাগাচ্ছে বিজ্ঞানের জটিল সব সূত্র ভোরে ওঠে প্রাইভেট টিউটরের বাসায় ছোটা রাত জেগে পড়াশোনা. বয়সের তুলনায় অনেক বেশি কর্ম ব্যস্ত একটা সময় নিশ্চয়ই কাটিয়েছেন তখন? আমরা সবাই কাটিয়েছি. সেই সময় নিশ্চয়ই অভিভাবক বলেছে এই তো আর কটা দিন. বৃত্তি পরীক্ষা শেষ হলেই জীবন শান্তি আর শান্তি. জীবনের নানা এপিসোডে আপনি এই কথাগুলো শুনেছেন অনেকবার অনেকের মুখে. এসএসসি পরীক্ষাটা দাও, কলেজে উঠলেই তো স্বাধীনতা. একবার ভার্সেটিতে উঠতে পারলেই জীবন হবে আনন্দে ভরপুর. একবার জব লাইফে ঢোকো. নিজের টাকায় আয়েশ করার মজাই অন্যরকম. শুনেছেন না এসব?  বয়স ঘড়ির ত্রিশের প্রান্তে দাঁড়িয়ে হিসেবগুলো মেলাতে পারেন কি? কি মনে হয়? এই এপিসোডগুলোর কোনোটা পার হবার সময় জীবন খানিকটা হলেও সহজ হয়েছে? সুন্দর হয়েছে? হয়নি, হবেও না, মিথ্যা একটা মরীচিকার আশায় আমরা ছুটেছি ঠিকই আমাদের ছোটানো হয়েছে, কিন্তু হিসাব মেলেনি ছুটত...

ডাচ ডিজিজ কি ? অর্থনীতি কিভাবে রোগে ভুগতে পারে ?

সো হোয়াট দ্য হেল দিস ডাচ ডিজিজ? ডাচ ডিজিজ শব্দটা শুনলে আপনার স্বাভাবিক ভাবেই মনে হবে এটা কোন রোগের নাম । হ্যাঁ এটা একটা রোগ. তবে মানুষের নয়. কোন প্রাণীরও নয়. তাহলে? এটা মূলত অর্থনীতির একটা সিন্ড্রোম. কিন্তু অর্থনীতির টার্মের সঙ্গে ডিজিজ কথাটা যুক্ত হল কেন? ডাচ বা নেদারল্যান্ড দেশটারই বা কি ভূমিকা এতে?  না এটা বুঝতে আপনাকে অর্থনীতির ছাত্র হতে হবে না ।কিন্তু বিষয়টা বেশ মজার দু হাজার সতেরো সালে বুকিং ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত ডাচ ডিজিজ এন্ড ইকোনমিক ইলনেস ইজি টু ক্যাচ ডিফিকাল্ট টু কিওর শিরোনামের আর্টিকেলের শুরুতেই বলা হয়ে ছিল- what a persistantly low oil price, dose to oil richan prises like what a long cold winter dust to people একথার তাৎপর্য কি?  সহজ বাংলায় বুঝিয়ে বলা যায় যদি বিশ্ববাজারে ক্রমাগতভাবে তেলের দাম কমতে থাকে তখন তেল সমৃদ্ধ তেলের ওপর ভাবে নির্ভরশীল দেশগুলোর অর্থনীতি নানান সমস্যায় ভুগতে পারে. এখানে তেল একটা রূপক মাত্র. তেলের জায়গায় চাল, ডাল, লবণ, চিনি যেকোনো কিছুই হতে পারে. হতে পারে কোন শিল্প যেমন টেক্সটাইল গার্মেন্টস বা ইনফরমেশন টেকনোলজিও. মূল বিষয়টা হচ্ছে...