সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সৌন্দর্যের অন্ধকার দিকটা ? মাইকা উৎপাদনের সাথে জড়িত যত কলঙ্ক।

দূর থেকে দেখলে বড়সড় ইঁদুরের গর্ত বলে মনে হবে। কাছে গেলেই বোঝা যাবে এইখান দিয়ে কোনোভাবে মাঝেরই আকারের একজন মানুষকে ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া সম্ভব ।মাটির বেশ খানিকটা নিচে নেমে গেছে এই গর্ত, ভেতরে ঘুটঘুটে অন্ধকার, ঠিক যতটা অন্ধকার এখানকার বাসিন্দাদের জীবন । যে অন্ধকার বর্ণবাদে ঠাসা এক পৃথিবীকে উজ্জ্বল করার কাজে নিয়োজিত. যে অন্ধকার আমাদের মুখে হাজারো ওয়াটের ঝলমলে আলো ছড়ায়. যে অন্ধকার আমাদের শারীরিক সৌন্দর্য বাড়ায় আর মনের কুৎসিত রূপটা তুলে আনে প্রকাশে । 


মাইকা স্বচ্ছ এক ধরনের ধাতব পদার্থ. বাংলায় একে ডাকা হয় অভ্র নামে । নানা রকমের কাজে এর ব্যবহার. টুথপেস্ট তৈরিতে এই জিনিসের প্রয়োজন হয় উজ্জ্বল রং বানাতেও লাগে মাইকা. তবে সবচেয়ে বেশি কোথায় ব্যবহার হয় জানেন? মেকআপ তৈরী. হ্যা. যে মেকআপ বা প্রসাধনী সামগ্রী ছাড়া আমাদের দিন চলে না. সেই কসমেটিকস ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে বড় কাঁচামালের নাম হচ্ছে মাইকা।  আর এই মাইকা সংগ্রহের আড়ালেই লুকিয়ে আছে কসমেটিকস ইন্ডাস্ট্রি সবচেয়ে বীভৎস সত্যিটা । যে সত্যিটা বিলিয়ন ডলারের এই ইন্ডাস্ট্রি চেপে রাখতে চায় সবসময় ।চায় অস্বীকার করতে। আপনি বা আপনার পরিবারের কোনো সদস্য যখন নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনার জন্য চামড়ার উপর দামি মেকআপের আস্তরণ ব্যবহার করছেন চোখে লাগাচ্ছেন আই শ্যাডো, প্যালেট, ঠোঁট রাঙাচ্ছে লিপস্টিক কিংবা হাইলাইটার ব্যবহার করে ত্বক কে করে তুলছেন মোলায়েম এবং উজ্জ্বল । আপনার কল্পনার ত্রি সীমানাতেও হয়তো নেই এইসব প্রোডাক্টের আড়ালে আপনি আসলে নিজের শরীরে রক্ত মাখছেন। ছোট ছোট অবুঝ কিছু শিশুর রক্ত । জীবনের সবচেয়ে কমল সময়টায় যারা আপনার প্রসাধনীর কাঁচামালের যোগান দিতে গিয়ে লাশ হয়ে যাচ্ছে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে । যেসব মৃত্যুর হিসাব কোন সরকারি পরিসংখ্যানে রাখা হয়নি. পরিবার পরিজন ছাড়া এই হতভাগ্যদের কথা কেউ মনে রাখেনি. দশ বারো বছর আগেও চড়া মেকআপের একটা চলছিল. ইউটিউবেও এখন মেকআপ টিউটোরিয়ালের ছড়াছড়ি। 


মেকআপের জায়গা এখন দখল করেছে হাইলাইটার. চামড়ার রং ফর্সা করার পরিবর্তে এটির ব্যবহারে ক্ষনিকের জন্য চামড়া হয়ে উঠছে দারুন উজ্জ্বল. আর হাইলাইটার তৈরির জন্য মাইকের ব্যবহার তাই অপরিহার্য. এই একই ঘটনা ঘটেছে লিপস্টিক বা আই শ্যাডোর বেলাতেও । নিজস্ব কোনো রঙ নেই। যেকোনো রঙের সঙ্গে এটাকে ব্যবহার করা যায়। এতে করে নির্দিষ্ট সেই রঙের মেকআপটি ব্যবহারের পর অনেক বেশি উজ্জ্বল হয়ে ধরা দেয়। এ কারণেই মাইকা ছাড়া এসব মেকআপ তৈরীর কথা ভাবাও যায় না।  কিন্তু মেকআপে মাইকের ব্যবহারের সঙ্গে রক্তারক্তির কি সম্পর্ক. কুৎসিত যে সত্যের কথা শুরুতে আমরা বলেছিলাম সেটাই বা কি? সেটা জানার জন্য আমাদেরকে যেতে হবে ভারতে. একশো তিরিশ কোটি মানুষের এই দেশটার বুকেই সবচেয়ে বেশি মাইকা পাওয়া যায় । বিশেষ করে বিহার এবং ঝাড়খন্ড এই দুই প্রদেশের মাটির নিচে মাইকের বড়সড় যোগান রয়েছে. এছাড়াও দক্ষিণ ভারতের কিছু জায়গা এবং রাজস্থানেও পাওয়া যায় মাইকা।

ঝাড়খন্ড, ভারতের সবচেয়ে দরিদ্র প্রদেশ. এখানকার মানুষের মাথাপিছু আয় প্রতিদিন মাত্র পঞ্চাশ রুপির আশেপাশে. এই টাকা দিয়ে ভরপেট খাওয়াটাই দুঃসাধ্য ব্যাপার. এ প্রদেশের অনেক জায়গাতেই মাটির নিচে পাওয়া যায় এই উজ্জ্বল ধাতু মাইকা. সরকারিভাবে মাইকা আহরণের কোন ব্যবস্থাই নেই. তাই মাটি খুঁড়ে খনি তৈরি করা বা সেখান থেকে মাইকা সংগ্রহের কাজটা পুরোপুরি ভাবে বেসরকারিভাবেই করা হয়. সরকারিভাবে এই কাজটা না করার একটা বড় কারণ হচ্ছে এই মাইকা খনিগুলো স্থানীয় প্রভাবশালীরা নিজেদের দখলে রাখে. সরকারের নানা দপ্তরে তারা টাকা পয়সা দিয়ে ম্যানেজ করে রাখে. এ কারণে কেন্দ্রীয় বা প্রাদেশিক. কোন সরকারই সেখানে তেমন ভাবে একটা নাক গলায় না. মাইকা খনি এলাকাগুলোতে গেলে আপনার মনে হবে অন্য কোনো পৃথিবীতে আপনি চলে এসেছেন. যদিও এসব এলাকায় বাইরের কারোর ঢোকাটা খুব কঠিন. কারণ প্রভাবশালীদের পান্ডারা সারাক্ষণই পাহারা দেয় এইসব জায়গা. খনি থেকে মাইকা সংগ্রহের এই পুরো ব্যাপারটাই তো বেআইনি। সেটাকে ধামাচাপা দিতে আয়োজনের কিন্তু কোনো অন্ত্র নেই. কয়লা বা সোনার খনির অবস্থানও মাটির নিচেই হয়. কিন্তু মাইকা খনির সাথে এসব খনির একটা বড়সড় পার্থক্য আছে. এই খনিগুলো আকারে ছোট. তাছাড়া যন্ত্রপাতির ব্যবহার এখানে হয় না বললেই চলে। পুরো ব্যাপারটা হয় হাতের শক্তিতে. 


গর্ত খুরে খুঁড়ে খনি বানানো হয়. শুরু সেই গর্তে খুব কসরত করে নিচে নামতে হয়. উনিশ থেকে বিশ হলেই বিপদ. মাথার উপর মাটি আর পাথরের আস্ত ধসে পড়তে পারে. হয়ে যেতে পারে জীবন্ত কবর. যদিও ভেতরে যারা ঢোকে দিনে কুড়ি ত্রিশ বার. তাদের এসব গা সহে  গেছে. এরকম ঘটনা এখানে প্রতিদিনই ঘটে বরং কোনদিন মাটি চাপা পরে কেউ আহত বা নিহত না হলেই মনে হয় ভাগ্যটা আজ বড় ভালো। স্বর্ণ বা কয়লা খনির সাথে মায়কা খনির আরো একটা পার্থক্য রয়েছে।  মাইকা খনিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে একদমই বাচ্চা বাচ্চা ছেলে মেয়েরা যাদের বয়স সাত থেকে দশ বছরের বেশি নয় । শিশু শ্রমের এক নগ্ন অধ্যায় প্রতিদিন রচিত হয়। এইসব খুনি এলাকায় যে অনাচার নিয়ে দুনিয়াবাসীর মাথা ব্যথা খুব একটা নেই। ডলার খরচ করে নিজেকে সুন্দর দেখানোর জন্য শরীরে যেসব প্রসাধন সামগ্রী আপনারা ব্যবহার করেন প্রাণ হাতে নিয়ে অন্ধকার খনির ভেতর ঢুকে সেগুলোর কাঁচামালের যোগান দিয়ে এই বাচ্চাগুলো প্রতিদিন কত টাকা আয় করে জানেন? বিশ থেকে তিরিশ রুপি মাত্র ।  যেই টাকায় এক কেজি মোটা চাল কিনতেও হিমশিম খেতে হয় তাদের. কিন্তু এই অঞ্চলে অন্য কোন কাজ নেই. একটাই কাজ. খনি শ্রমিক হিসেবে মাইকা আহরণে যুক্ত হওয়া. তাই বাধ্য হয়েই এই শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজটাতেই নিযুক্ত হতে হয়. দু হাজার ষোলো সালে থমসন রাইটার্স ফাউন্ডেশন এই মাইকা মাইনিং বা মাইকা আহরণ কাজের গোড়াটা খতিয়ে দেখতে চেয়েছিল. একটা ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং অপারেশন তারা চালিয়েছিল ঝাড়খণ্ডের একাধিক অঞ্চলে. যেসব তথ্য সেই রিপোর্টে উঠে এসেছিল সেগুলো শিউরে ওঠার মতই ভয়ঙ্কর. শুধু ঝাড়খণ্ডেই বাইশ হাজারেরও বেশি শিশু অবৈধভাবে মাইকা উত্তোলনের কাজে যুক্ত. এরা স্কুলে যায় না. শিক্ষার আলো থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত. দুই বেলা পেটে ভাতে থাকার জন্য প্রানন্ত সংগ্রাম করে এই অঞ্চলের মানুষ. আর তাই পাঁচ ছয় বছর বয়স হলেই বাড়ির শিশুদের কাজে লাগিয়ে দেয় তাঁরা. জানে কোনো একদিন হয়তো আচমকা সংবাদ আসবে মাটি আর পাথরের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছে তাদের আদরের ধন. কিন্তু কিচ্ছু করার নেই. দুটো বাড়তি টাকা ঘরে এলে জীবনটা যে আরো একটু সহজ হয়.


সেই চাহিদার কাছে প্রাণের মায়া সে তো বড় তুচ্ছ. বেশিরভাগ মাইকা এখনই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে. ভেতরে ভুতুড়ে একটা আবহ. অন্ধকার ভীষণ. টর্চ ছাড়া দেখা যায় না কোন কিছু. নিরাপত্তার কোন কোন বালাই নেই. কোন ধরনের প্রটেকশান ছাড়াই ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে ছেলে মেয়েরা. ঝুড়িতে করে তুলে আনছে বালু আর মাটি. সেই মাটিতে মিশে আছে খনিজ মাইকা. সেগুলো চালুনী দিয়ে চেলে বা হাত দিয়ে পরিষ্কার করে মাটি থেকে মাইকা আলাদা করা হচ্ছে. সারাদিনে এভাবে বারবার খনিতে ঢোকে. মোটামুটি এক কেজি মাইকা পাওয়া যায় । তাও যদি আট নয় ঘন্টা টানা কাজ করা হয় তাহলে । সেই এক কেজি মাইকা পঁচিশ থেকে তিরিশ রুপিতে কিনে নেয় খুনির লোকজন । এটাই এই বাচ্চাগুলোর সারাদিনের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের দাম । ওদের জীবনে কোনো ছুটি নেই নেই ঈদ, পুজা, আনন্দ, কিচ্ছু নেই । আছে শুধু হাড়ভাঙা পরিশ্রম. এই মাইকা শ্রমিকদের মধ্যে ভাগ্যবনে যারা বেঁচে থাকে তাদের জীবনটাও মরে যাওয়ার চেয়ে ভালো কিছু হয় না । আহত হলে তো সারা জীবনের জন্য পঙ্গু. আর যারা গুরুতর আহত হয় না তাদের মধ্যেও বেশিরভাগ শিশুই খুব অল্প বয়সে head injury তে আক্রান্ত হয়. প্রতিদিন আট থেকে নয় ঘন্টা করে ঝুঁকে বসে কাজ করতে হয় মাইকা খনিতে. আর তাই কয়েক বছরের মধ্যেই মেরুদণ্ড এবং কোমরের হার বিদ্রোহ করে বসে.



 বাকি জীবন কাটাতে হয় এই সমস্ত সমস্যাকে সঙ্গে নিয়ে. শুধু ঝাড়খণ্ডেই প্রতিমাসে বিশ থেকে তিরিশ জন শিশু মারা যায় মাইকা খনিতে কাজ করতে গিয়ে. অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে একজন. কোনদিন কার পালা আসবে? কেউ জানে না কিন্তু মৃত্যুর এসব সংখ্যাকে কাগজে কলমে ধামাচাপা দেওয়া হয় সুনিপুণভাবে । এগারো বছরের পূজা বার্নার চোখের সামনে নিজের প্রিয় বান্ধবীকে মাটি চাপা পড়তে দেখেছে । এরপর কি হয়েছে সে আর যাব না ।অনেক লোকের ভিড় আর বান্ধবীর রক্তাক্ত দেহটা ভেতর থেকে বের করে নিয়ে আসার দৃশ্যটাই শুধু মনে আছে তার। একবার ভাবুন তো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সারাদিন কাজ করে মাত্র তিরিশ রুপি পারিশ্রমিক পেয়ে যে মাইকা তুলে আনছে পূজার মতো শিশুরা সেই মাইকাই আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করছে বাড়াচ্ছে আপনার সৌন্দর্য । আপনি কি প্রসাধনী মাখছেন? নাকি নিজের শরীরে মেখে নিচ্ছেন এই অবুঝ শিশুদের রক্ত. এই প্রশ্নটা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে একবার করুন. আর ততক্ষনে আমরা মেকআপ ইন্ডাস্ট্রির যে অন্ধকার চোরাগুলিতে ঢুকেছি সেটার শেষটা দেখে আসি. খনি থেকে শিশু শ্রমিকদের দিয়ে সব মাইকা সংগ্রহের পর সেগুলো পরিষ্কার করা হয়. তারপর জাহাজে করে সেগুলো চলে যায় অন্য দেশে বিশেষ করে চীনে. সেখানে আরো কয়েক দফার প্রসেসিং করার পর এই মাইকাকে গুঁড়ো করা হয়. সেগুলোকে ব্যবহার করা হয় নানা ধরনের মেকআপের মধ্যে. উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য নামিদামি প্রায় সমস্ত মেকআপ ব্র্যান্ডই তাদের প্রোডাক্টে মাইকা ব্যবহার করে.


 প্রতিযোগিতার এই বাজারে কেউই কি তার কম্পিটিটারের চেয়ে পিছিয়ে থাকতে চাইবে বলুন? মজার ব্যাপার হচ্ছে ভারত সরকার কিন্তু জানেই না এসব মাইকা এখনিতে কাজ করা শিশুদের সংখ্যা কত? কেমন মানবেতর ও পরিবেশে তারা বেঁচে আছে. কতটা অনিরাপদ পরিস্থিতিতে তাদের কাজ করতে হচ্ছে. দু হাজার উনিশ সালে একটা সার্ভে চালানো হয়েছিল মাইকা খনিতে কত শিশু কাজ করে সেটা জানার জন্য. এখনো সেই সার্ভের রিপোর্ট কোথাও প্রকাশিত হয় নি. মেকআপ ইন্ডাস্ট্রিটা কয়েক বিলিয়ন ডলারের. বিশ্বজুড়ে এসব প্রোডাক্টের তুমুল চাহিদা. ক্রেতারা অকাতরে খরচ করছে নিজেদের ত্বককে একটু উজ্জ্বল দেখানোর জন্য ।নিজেদেরকে একটু সুন্দরভাবে সবার সামনে উপস্থাপনের বিষয়. অথচ সেই সৌন্দর্যের উৎস যেখানে সেই জায়গাটা ঢেকে আছে গাঢ় অন্ধকারে । দারিদ্রতা সেখানে নিত্যদিনের চিত্র. পৃথিবীর দুই প্রান্তে বিভেদ আর শ্রেণী বৈষম্যের দুই রকম গল্প রোজ লেখা হয়. এই beauty industry ও তার ব্যতিক্রম নয় মোটেও. দেরিতে হলেও চিত্রটা এখন একটু একটু করে বদলাচ্ছে. যদিও সেই বদলের গতিটা খুবই কম. বিখ্যাত প্রসাধনী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লরিয়ল এসটি লর্ডাল সহ বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা তাদের প্রোডাক্টে অথেন্টিক মাইকার ব্যবহার কমিয়ে কৃত্রিম মাইকের ব্যবহার করবে. দু হাজার বাইশ সালের পর তাদের প্রোডাক্টে তারা আর কোন অথেন্টিক মাইকে ব্যবহার না করার পরিকল্পনা করছে ।

 রেস্পনসেবল মাইকা ইনিশিয়েটিভ বা এমআরআই নামের একটা মুভমেন্টও চালু করেছে তারা। শিশু শ্রমের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে তারা আর ব্যবসা করবে না বেশি দিন। এমনটাই আপাতত জানিয়েছে এই ব্র্যান্ডগুলো। আর যদি তারা অথেন্টিক মাইকা ব্যবহার করেও সেক্ষেত্রে মাইকার প্রাপ্তি স্থানে শ্রমিকদের যথাযথ মজুরি দেওয়া হচ্ছে কিনা শ্রম অধিকার রক্ষা করা বা শিশু শ্রম বন্ধ করার মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখবে তারা।  কিন্তু এখানেও একটা বড়ো সমস্যা আছে কয়েক একদিন পর যদি ব্র্যান্ড গুলো প্রাকৃতিক মাইকার ব্যবহার বন্ধ করে দেয় তাহলে ঝাড়খণ্ডের বেশিরভাগ অঞ্চলের মানুষ বিপদে পড়বে. কারণ এই এলাকায় কৃষিকাজ হয় না. ব্যবসাও নেই. কয়লাখনিতে পুরুষেরা কাজ করে আর মাইকা আর খনিতে শিশুরা. এভাবেই জীবিকা আয় হয় এখানকার পরিবারগুলো. তাই এখানে করণীয় আছে সরকারের করণীয় আছে প্রসাধনী নির্মাতা ব্র্যান্ড গুলোরও । 

বেআইনিভাবে সংগৃহীত মাইকা আর না কিনে শ্রমিক অধিকার রক্ষার ওপর ব্র্যান্ড গুলো জোর দিলেই এখানে একটা ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠবে বাড়বে কর্মসংস্থান শিশু শ্রমও কমতে কমতে নেমে আসবে শূন্যের কোঠায় । কিন্তু মাইকা খনি ব্যবসায়ীদের এই সিন্ডিকেট ভাঙা আর বেড়ালের গলায় ঘন্টি বাঁধা দুটোই একই রকমের কাজ । তাই সেই পথে হাঁটতে সবার বড্ড আপত্তি । এই অঞ্চলে আর একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে চলেছে নোবেল বিজয়ী ভারতীয় কৈলাস সত্যার্থী । তার প্রতিষ্ঠিত কৈলাশ সত্যার্থী চিলড্রেনস ফাউন্ডেশন গত পনেরো বছর ধরে কাজ করছে মাইকা খনিতে কাজ করা শিশুদের নিয়ে. এই পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার চারশো শিশুকে এই খনি মাফিয়ার কবল থেকে উদ্ধার করে স্কুলে নিয়ে গেছে এই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা. ঝাড়খণ্ডের বুকে তারা বানিয়েছে child friendy ভিলেজ। সেই গ্রামে শিশুদের একচ্ছত্র আধিপত্য. শুধু তাই নয় শিশুদের বাবা মায়েরা এই ফাউন্ডেশন থেকে একটা মাসিক ভাতাও পান. নইলে টাকার লোভে বা অভাবের কারণে অনেকেই নিজেদের সন্তানকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সবার অলক্ষ্যে আবারও খুনির কাজে লাগিয়ে দেবেন. মজার ব্যাপার হচ্ছে সরকারি বেসরকারি অনুদানের পাশাপাশি কৈলাশর সত্যার্থী ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগে টাকা ঢালছে একটি বিউটি প্রোডাক্ট ব্র্যান্ডও. আমেরিকান কোম্পানির এসটি লডার. যারা নিজেরাই তাদের প্রোডাক্টে মাইকা ব্যবহার করে ।তাঁরাই এই শিশুদের জীবন উন্নয়নের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা ডোনেশন দিচ্ছে এই প্রোজেক্টে. এটা হয় তো  তাদের পাপ মোচনের সামান্য একটা চেষ্টা. 


ফ্যাশন ডিজাইনার এবং বিউটি এক্সপার্ট ক্যারি হ্যামার একটা কথা বলেছিলেন. দা বিজনেস অফ বিউটি ইজ ভেরি অ্যাঙ্গিল.  beauty production এর ব্যবসার আড়ালে লুকিয়ে থাকা অন্ধকার জগতের গল্পটা জানলে এই কথাটাকে ধ্রুব সত্যি বলে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক. নিজেকে সুন্দর দেখানোর জন্য যে মেকআপটাই আপনি ব্যবহার করেন না কেন? Google করে দেখুন সেটার উপাদানের মধ্যে মাইকার উপস্থিতি থাকবেই. যে আমরা এসব প্রোডাক্ট ব্যবহারের সময় দু ফোঁটা রক্তের উপস্থিতি হয়তো আপনি টের পাচ্ছেন না কারণ এসব ঘটনা খুব সন্তর্পনে লুকিয়ে রাখা হয়েছে আপনার কাছ থেকে । বিলিয়ন ডলারের এই ইন্ডাস্ট্রিতে কালো কোনো দাগ পড়ুক সেটা তো রাঘব বোয়ালরা চাইবে না । কিন্তু এই দাগ এমনই অন্ধকারে ঠাসা দুনিয়ার কোন বিউটি প্রোডাক্ট বা মেকআপ দিয়ে সেটা ঢেকে রাখা যাবে না কোনোদিনও কখনোও।  





 

মন্তব্যসমূহ

Blog Posts

লুসিড ড্রিম কাকে বলে ? লুসিড ড্রিম কিভাবে দেখতে হয় ?

 স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ করার কথা ভেবেছেন কখনো? নিশ্চয়ই ভাবছেন জেগে জেগে দিবাস্বপ্ন দেখার কথা বলছি না তো? কিন্তু না, রীতিমতো ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্নও নিয়ন্ত্রণের কথাই বলছি, আপনার ইচ্ছামত স্বপ্ন দেখবেন। ইচ্ছা মতো নিয়ন্ত্রণ করবেন। আর পছন্দ না হলে অর্থাৎ দুঃস্বপ্ন দেখা শুরু করলে সেটার গতিপথ পাল্টে দেবেন একেবারে নিমেষে। আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় এটা খুবই সম্ভব একে বলা হয় লুসিভ ড্রিম। লুসিড ড্রিমিং এর সাথে আপনারা অনেকেই হয়তো পরিচিত আছেন। অনেকে পরিচিত থাকলেও হয়তো এটা কেন হচ্ছে বা কিভাবে হচ্ছে তা নিয়ে বেশ দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছে এসবেরই উত্তর মিলবে আজকের এই লিখাতে।   লুসিড ড্রিম অর্থ কি? সহজ বাংলায় অনুবাদ করতে গেলে বলা যায় লুসিড অর্থ পরিষ্কার. অর্থাৎ স্পষ্ট আর dream মানে তো আমরা সবাই জানি যে স্বপ্ন। লুসিড ডিম হলো সেই স্বপ্ন যে আমাদের স্পষ্ট ভাবে মনে থাকে এবং স্বপ্ন চলাকালীন সময়েও আমরা এ উপলব্ধি করতে পারি যে এটি বাস্তব নয় বরং এটি স্বপ্ন কিন্তু শুধুমাত্র আক্ষরিক অর্থ দিয়ে লুসিড ড্রিম ব্যাখ্যা করলে ভুল হবে একটু অন্যভাবে বলা যাক ।  মনে করুন স্বপ্নে আপনি কি পাহাড়ের উপর থেকে দ্রুত গ...

ন্যানো টেকনোলজি কিভাবে কাজ করে ?

  যদি বলি আপনার চোখ দেখতে পারে না এমন গভীর ও প্রায় অনাবিষ্কৃত একটা পৃথিবী আছে. হয়তো বলতে পারেন যে মহাবিশ্বে কত গ্রহই তো আছে? সব খোঁজ কি আমরা পেয়েছি? কিন্তু যদি বলি আমাদের এই পৃথিবীর ভেতরে আরো একটি জগত আছে এবং যে জগৎ ছড়িয়ে আছে আমাদের গোটা বিশ্ব জুড়ে. এইবার হয়তো নড়েচড়ে বসবেন. হ্যাঁ আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে এমন এক রাজ্য যে আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না. এটাকে বলা হয় অণুবীক্ষণিক বিশ্ব. এই অণুবীক্ষণই বিশ্ব প্রচন্ড আকর্ষণীয় ও চমকে দেওয়ার মতো. কি কি ঘটছে এখানে তা আমার আপনার কল্পনারও বাইরে. এটা যেন কোনো ভিন গ্রহ বাসীদের রাজ্য. সম্ভাবনার দুয়ার খুলে রাখা আছে এই অণুবীক্ষণিক বা nano বিশ্বে.  ন্যানো কি ন্যানো হলো পরিমাপের একক। এক মিটারের একশো কোটি ভাগের এক ভাগ হচ্ছে এক ন্যানো। আর ন্যানো টেকনোলজি হলো বিজ্ঞানের এই অতি ক্ষুদ্র স্তরে একটা কিছু তৈরী করা আসলে শুধু তৈরি করা না. ন্যানোমিটার স্কেলে পরিবর্তন, পরিবর্তন, ধ্বংস বা সৃষ্টি সম্পর্কিত টেকনোলজিকেই ন্যানো টেকনোলজি বলে. অর্থাৎ ন্যানোমিটার স্কেলে পরিমিত যেকোনো বিষয়ে বহুমাত্রিক টেকনোলজিকে ন্যানো প্রযুক্তি বা ন্যানো টেকনোলজি বলা যে...

স্টকহোম সিন্ড্রম কি ? স্টকহোম সিন্ড্রম কেন হয় ?

ধরুন আপনাকে কেউ অপহরণ করল. আটকে রাখল অজানা কোন জায়গায়. কিংবা জিম্মি করল কোন বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য. হয়তো আপনাকে মেরে ফেলাটাই অপহরণকারীদের লক্ষ্য. পুলিশ আপনার খোঁজ পাচ্ছে না. এদিকে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় অস্থির হয়ে আছে আপনার স্বজনরা. এক পা দুই সপ্তাহ পার হয়ে হয়তো আপনাকে উদ্ধার করা হল. এই কয়েকটা দিন আপনি সূর্যের আলো দেখেননি. বন্দি অবস্থায় এক একটা ঘন্টাকেই আপনার কাছে মনে হয়েছে এক একটা মাসের মতো লম্বা. মুক্তির পর অপহরণকারীদের প্রতি কেমন অনুভূতি কাজ করবে আপনার? হাতের কাছে পেলেই তাদেরকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করবে তাই না? কিন্তু সেটা না করে বাড়ি ফেরার পর আপনি যদি সেই অপহরণকারীদের প্রশংসা শুরু করেন? তাহলে লোকজন আপনার দিকে কুঁচকে তাকাবে বৈকি? আপনি যদি অপরাধের তদন্তে পুলিশকে ঠিকমতো সাহায্য না করেন, আপনাকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটাই কিন্তু স্বাভাবিক. তার চেয়েও অবাক করার মতো ব্যাপার. কখন ঘটবে জানেন? যখন আদালতে গিয়ে আপনি বলবেন. আপনাকে যারা অপহরণ করেছিল তাদের প্রতি আসলে আপনার কোন অভিযোগ নেই. আপনি তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করতে চান. কি ভাবছেন? এমন পাগলামি আপনি কেন করবেন? পাগলামি বলুন আর যাই বলুন. ...

মিনিমালিজম কি ? কিভাবে মিনিমালিস্ট হওয়া যায় ?

মিনিমামলিজম এই ধারণাটি বিগত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং এর যথেষ্ট কারণও আছে. এই পুরো ব্যাপারটা কি? সেটাকে সঙ্গায়িত করা যায় এভাবে যে,  মিনিমালিজম হচ্ছে যা আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সেগুলোকে ধারণ করা এবং বাকি সব কিছু যা আমাদের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে নেয় সেগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করা।   অর্থাৎ কোন কোন বিষয়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন জিনিসগুলোকে আমাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা থাকা এবং বাকি সব ত্যাগ  করে দেয়. সেগুলো নিয়েই জীবন ধারণ করা. কিন্তু এমন সংজ্ঞায়ন সত্ত্বেও minimalism কোন ধরাবাধা জীবন ব্যবস্থা নয় বা মিনিমালিস্ট হতে হলে কোন নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলতে হবে এরকমটিও কিন্তু নয়. মিনিমালিস্ট লাইফ স্টাইল এমন একটি বিষয় যা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য স্বতন্ত্র। এক্ষেত্রে মূল বিষয়টি হচ্ছে সত্যিকার অর্থে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা নিয়ে সেই অনুযায়ী জীবন ধারণ করা. প্রিয় দর্শক চলুন দেখি মিনিমালিজম কিভাবে আপনার জীবনধারা বদলে দিতে পারে।  মিনিমালিস্ট জীবন অবশ...

সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান কি ?

সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান দু হাজার বারো সালের চৌঠা জানুয়ারি। ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ ডট ফোর চ্যান ডট কম নামের ওয়েবসাইটের বুলেটিন বোর্ডে ছবি সহ একটি ম্যাসেজ পোস্ট করা হয়. ওয়েবসাইটের নীতিমালা অনুযায়ী ছবি প্রকাশকারীর নাম পরিচয় গোপন রাখা হয়. অজ্ঞাত পোস্ট করি সেই ছবিতে ব্যবহারকারীদের চিত্রের মাঝেই লুকানো একটি বার্তা উন্মোচন করার জন্য চ্যালেঞ্জ জানান. সেই মেসেজটিতে লেখা ছিল হ্যালো আমরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের খুঁজছি তাদের খোঁজার জন্য আমরা একটা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি । এই ছবিতে একটা মেসেজ লুকানো আছে এটাকে খুঁজে বের করো । এটাই তোমাদের আমাদের কাছে নিয়ে আসবে. আমরা সেসব স্বল্প সংখ্যক ব্যক্তিকে দেখার অপেক্ষায় আছি যারা এটি সম্পূর্ণ করতে পারবে. Good luck । আর নিচে ছিল একটি কোড থ্রি থ্রি জিরো ওয়ান. পুরো ইন্টারনেট দুনিয়া তোলপাড় হয়ে গেল যেন হঠাৎ করে. পৃথিবীর সেরা হ্যাকার এবং কোড সমাধানকারীরা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা প্রমানের জন্য এই পরীক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়লো আর এই রহস্যময় ধাঁধার নাম দেওয়া হলো সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান।  সিকাডা অর্থ মত বা ঘুগরি পোকা. ছবি পোস্ট করার কিছুক্ষণের মাঝেই গ...

সারোগেসি কি ?

সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান ধারণ করা নিয়ে এখনো বহু বিতর্ক আছে. শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বেই এই পদ্ধতি নিয়ে তর্ক বিতর্কের শেষ নেই.  এটার আইনি প্রক্রিয়াও জটিল। কারণ এটি একেক রাষ্ট্রে. শারোগেসি আইন একেক রকম. নারী মা হবেন প্রাকৃতিক নিয়ম সমাজ এমনটাই দেখতে অভ্যস্ত. কিন্তু কোন কারণে মা হবার ক্ষমতা না থাকলে তাকে পরিবার ও আশপাশ থেকে যে পরিমাণ কটু কথা শুনতে হয় তা সাধারণ মানুষের ধারণারও বাইরে.   সরোগেসি বিষয়টি কি? চিকিৎসা শাস্ত্রের অগ্রগতি এমন মায়েদের সামনে এনেছে যারা গর্ভ ভাড়া দিয়ে নিজে বাঁচেন অন্যদের মাতৃ সুখ দেন । একজন নারীর গর্ভে অন্য দম্পতির সন্তান ধারণের পদ্ধতিকে সারোগেসি বলা হয়.সারোগেসির এই  পদ্ধতি বেশ দীর্ঘকালীন. আইভিএফ পদ্ধতিতে স্ত্রী ও পুরুষের ডিম্বাণু শুক্রাণু দেহের বাইরে নিষিক্ত করে তা নারীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়. কিন্তু এখানেও জটিলতা. কেন? সে বিষয়ে পরে আসছি. বাংলাদেশ সহ বহু দেশই এই সারোগেসি একরকম ভাবে নিষিদ্ধ. সুতরাং বিষয় টি  সংবেদনশীল. এমনকি বেশিরভাগ ধর্মেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা. চলুন কথা বলি সারোগেসি মাদার সম্পর্কে। আইভিএফ বা টেস্ট টি...

কিভাবে লিমিটলেস হওয়া যায় ? লিমিটলেস আসলে কিভাবে কাজ করে ?

এনজিটিপিল,  এটা এমন এক পিল যা আপনাকে করবে আল্ট্রা ফোকাসড. দেবে দুর্দান্ত মোটিভেশন. বের করে আনবে আপনার সর্বোচ্চ সম্ভাবনা. আপনি হয়ে উঠবেন আনস্টপল. বাস্তবতা পাবে প্রতিটি স্বপ্ন. কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এমন কোন পিলের অস্তিত্ব নেই. ফলাফল আপনি আটকে আছেন একটি খাদে. সারাক্ষণ ক্লান্তি নিয়ে হয়ে উঠছেন আনপ্রোডাক্টিভ. নষ্ট হচ্ছে ক্রিয়েটিভিটি. সময় গড়িয়ে যায়. ঋতুর পরিবর্তন ঘটে. কিন্তু আপনি ডুবে থাকেন এক হতাশায় যাতে আপনি দিন দিন পিছিয়ে পরছেন. আপনি যা যা এতদিন অর্জন করবেন ভেবেছিলেন তা কিছুই আপনি অর্জন করতে পারেননি । নিজেকে সান্তনা দিচ্ছেন আগামীকাল হবে ভিন্ন। কিন্তু তা কখনোই হয়ে ওঠে না এখন যদি আপনাকে বলি কোনো জাদুকরী পিলের সাহায্যে নয় বাস্তবিক লিমিটলেস হয়ে ওঠা সম্ভব।  একদম প্রমাণিত পদ্ধতিতে যা একেবারে ফ্রিতে ব্যবহার করা সম্ভব.  তো আছেন তো শেষ পর্যন্ত ?  Limit less হওয়ার যাত্রায় ।  স্টেপ ওয়ান : এনার্জি--  মাত্র কয়েক মাস আগে আমি নিজেও আপনার মতো কর্মশক্তিহীন অনুভব করতাম. সামান্য কাজেই আসতো অবসন্নতা, গেয়ে ধরতো ক্লান্তি একদিন হঠাৎ টের পেলাম আমি নিজেই নিজের energy নি...

পেগাসাস স্পাইওয়ার কি ?

গত কিছুদিন ধরেই বিশ্ব রাজনীতি এবং প্রযুক্তি জগৎ এই দুই জায়গাতেই আলোচনার বিষয়বস্তু একটাই। সেটা হচ্ছে পেগাসাস স্পাইওয়ার. বিশ্বজুড়ে নানান দেশের মানবাধিকার কর্মী সাংবাদিক আইনজীবী ও রাজনীতিকদের ফোনের নজরদারি চালানোর ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ইজরায়েলের বেসরকারি কোম্পানি nso গ্রুপের তৈরি করা এই সফটওয়্যার নিয়ে এখন তুমুল তরজা চলছে দুনিয়া জুড়ে । চলুন কথা বলি দুনিয়া ওলট পালট করে দেওয়া স্পাইওয়ার সম্পর্কে । পেগাসাস মূলত একটি নজরদারি বিষয়ক সফটওয়্যার । ইজরাইলের সংস্থা এনএসও ই সফটওয়্যার তৈরি করেছে। যা দিয়ে যে কারো মোবাইলে আড়ি পাতা যায়. এটা কিন্তু সাধারণ কোন নজরদারি নয়. আগে ফোনে আড়ি পেতে শুধু দুই প্রান্তের কথাবার্তা শোনা যেত. আর সফটওয়্যারের মাধ্যমে গোটা ফোনটারই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হ্যাকাররা. ফোনের কথাবার্তা WhatsApp এর চ্যাট, ছবি, ফোনে কি কি তথ্য আছে সবই জানা যায়. আরো ভয়ানক ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল যিনি ব্যবহার করছেন তিনি জানতেই পারেন না যে তার ফোন হ্যাক করা হয়েছে. সমস্ত তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর কাছে. কিন্তু কারো ফোনে পেগাসাস software install করতে হলে তো সেই ফোনটাকে...

রেট রেস কি ?

      আপনি ঠিক কখন ইঁদুর দৌড়ে যোগ দিয়েছেন এটা হিসাব করা কঠিন. কিন্তু নিশ্চিত থাকুন আপনি এই দৌড়ে আছেন. ক্লাস eight এ পড়ার সময়ের কথা মনে আছে? সামনে বৃত্তি পরীক্ষা পাটিগণিত বীজগণিতের অংক প্যাঁচ লাগাচ্ছে বিজ্ঞানের জটিল সব সূত্র ভোরে ওঠে প্রাইভেট টিউটরের বাসায় ছোটা রাত জেগে পড়াশোনা. বয়সের তুলনায় অনেক বেশি কর্ম ব্যস্ত একটা সময় নিশ্চয়ই কাটিয়েছেন তখন? আমরা সবাই কাটিয়েছি. সেই সময় নিশ্চয়ই অভিভাবক বলেছে এই তো আর কটা দিন. বৃত্তি পরীক্ষা শেষ হলেই জীবন শান্তি আর শান্তি. জীবনের নানা এপিসোডে আপনি এই কথাগুলো শুনেছেন অনেকবার অনেকের মুখে. এসএসসি পরীক্ষাটা দাও, কলেজে উঠলেই তো স্বাধীনতা. একবার ভার্সেটিতে উঠতে পারলেই জীবন হবে আনন্দে ভরপুর. একবার জব লাইফে ঢোকো. নিজের টাকায় আয়েশ করার মজাই অন্যরকম. শুনেছেন না এসব?  বয়স ঘড়ির ত্রিশের প্রান্তে দাঁড়িয়ে হিসেবগুলো মেলাতে পারেন কি? কি মনে হয়? এই এপিসোডগুলোর কোনোটা পার হবার সময় জীবন খানিকটা হলেও সহজ হয়েছে? সুন্দর হয়েছে? হয়নি, হবেও না, মিথ্যা একটা মরীচিকার আশায় আমরা ছুটেছি ঠিকই আমাদের ছোটানো হয়েছে, কিন্তু হিসাব মেলেনি ছুটত...

ডাচ ডিজিজ কি ? অর্থনীতি কিভাবে রোগে ভুগতে পারে ?

সো হোয়াট দ্য হেল দিস ডাচ ডিজিজ? ডাচ ডিজিজ শব্দটা শুনলে আপনার স্বাভাবিক ভাবেই মনে হবে এটা কোন রোগের নাম । হ্যাঁ এটা একটা রোগ. তবে মানুষের নয়. কোন প্রাণীরও নয়. তাহলে? এটা মূলত অর্থনীতির একটা সিন্ড্রোম. কিন্তু অর্থনীতির টার্মের সঙ্গে ডিজিজ কথাটা যুক্ত হল কেন? ডাচ বা নেদারল্যান্ড দেশটারই বা কি ভূমিকা এতে?  না এটা বুঝতে আপনাকে অর্থনীতির ছাত্র হতে হবে না ।কিন্তু বিষয়টা বেশ মজার দু হাজার সতেরো সালে বুকিং ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত ডাচ ডিজিজ এন্ড ইকোনমিক ইলনেস ইজি টু ক্যাচ ডিফিকাল্ট টু কিওর শিরোনামের আর্টিকেলের শুরুতেই বলা হয়ে ছিল- what a persistantly low oil price, dose to oil richan prises like what a long cold winter dust to people একথার তাৎপর্য কি?  সহজ বাংলায় বুঝিয়ে বলা যায় যদি বিশ্ববাজারে ক্রমাগতভাবে তেলের দাম কমতে থাকে তখন তেল সমৃদ্ধ তেলের ওপর ভাবে নির্ভরশীল দেশগুলোর অর্থনীতি নানান সমস্যায় ভুগতে পারে. এখানে তেল একটা রূপক মাত্র. তেলের জায়গায় চাল, ডাল, লবণ, চিনি যেকোনো কিছুই হতে পারে. হতে পারে কোন শিল্প যেমন টেক্সটাইল গার্মেন্টস বা ইনফরমেশন টেকনোলজিও. মূল বিষয়টা হচ্ছে...