সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ডেভিল স্প্রেড বা শয়তানের নিঃশ্বাস কি ? এটা কতটা ভয়ানক ড্রাগ ?

হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার গল্পের কথা কেনা না জানে। ইঁদুর নিয়ে কি সংকটেই না ছিল হ্যামিলানবাসী। পরের কাহিনী নিশ্চয়ই মনে আছে? না আমরা আজকে বাঁশিয়ালার গল্প বলবো না। কিন্তু সেই গল্প অনায়াসেই সত্য হয়ে যেতে পারে আমার ভাবনার সাথে । আসলে ঘটছে ও তাই আজকাল অহরহ। আর এজন্য প্রয়োজন কেবলমাত্র এক চিমটি স্কোপোলামিন। 

 কি এই স্কোপোলামিন? বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ড্রাগস কি ? অনেকেই হয়তো বলবেন কোকেন বা ক্রিস্টাল ম্যাথের কথা । কিন্তু না বিশ্বের সবচাইতে ভয়ঙ্কর ড্রাগস ও স্কোপোলামিন যা পরিচিত ডেভিল স্প্রেড বা শয়তানের নিঃশ্বাস নামে। 

এর শুধুমাত্র এক চিমটি পরিমাণ পাউডার পারে আপনাকে নিজের ওপরে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণহীন করে দিতে। ধরুন আপনি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। এমন সময় একজন লোক এসে আপনাকে এক টুকরো কাগজ দেখিয়ে কোন একটা ঠিকানার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন। এবং আপনি সাথে সাথেই আপনার চিন্তা শক্তি হারিয়ে ফেললেন। হারিয়ে ফেলেন স্ব-ইচ্ছায় নড়াচড়া করার শক্তি টুকু। কিভাবে সম্ভব? বুড়া চেরো নামে এক গাছের ফুলের বীজ থেকে স্কোপিং ড্রাগ বা ডেভিল স্প্রেড তৈরি হয়। এই গাছকেও বলা হয় ডেভিলস প্লান্ট বা শয়তানের গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো দাঁতুরা।

গাছের বীজ গুলোকে গুঁড়ো করে কেমিক্যাল প্রসেসের মাধ্যমে তৈরি করা হয় বরুণ দাঙ্গা বা স্কোপাডিক। কোথায় তৈরি হয় এই ড্রাগ তা সহজেই হয়তো আন্দাজ করতে পারছেন আপনি। দক্ষিণ আমেরিকার কলম্বিয়াতে । কলম্বিয়া দেশটি চুরি, ছিনতাই সহ সকল ধরনের অনৈতিক কাজের দিক থেকে পৃথিবীতে সবচেয়ে এগিয়ে আছে। ওয়েলকাম টু কলম্বিয়া। পরিসংখ্যানও বলে বিশ্বের প্রতি তিনটি অপহরণের মাঝে একটি ঘটে কলাম্বিয়াতে। কলম্বিয়াকে ডাকা হয় মাদকের রাজধানী।

স্কোপোলামিন ড্রাগটির ওজন এবং ঘনত্ব একেবারেই কোকেনের মতো। একগ্রামস কোপানোমিন এবং এক গ্রাম কোকেন দেখতে ঠিক একই রকম। কিন্তু পার্থক্য হল মাত্র এই এক গ্রাম স্কোপমিনি পনেরো জন মানুষকে হত্যা করতে সক্ষম। সারা বিশ্বে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ এই ড্রাগের ভিক্টিম যা দিন দিন বাড়ছে ভয়ানকভাবে। স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য ড্রাগের মতো এর ব্যবহারও চিকিৎসার ক্ষেত্রে খুবই অল্প। আর এক মিলিগ্রাম ডুস ব্যবহৃত হয় সি সিগনেসের মেডিসিন হিসেবে। স্কোপোলামিন চামড়ার মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে। ফলে অপরাধ করাও সহজ এই ড্রাগের মাধ্যমে। সাধারণত মহাকাশে ভ্রমণকারী অ্যাস্ট্রোনটদের মরশুম সিগনেস কাটানোর জন্য নাসা তাদের ওপর শূন্য দশমিক তিন তিন মিলিগ্রাম স্কোপোলামিন প্রয়োগ করে। তবে এটির ছয় থেকে সাত মিলিগ্রাম ডোজ যদি কোনো সাধারণ মানুষের ওপরে ব্যবহার করা হয় তবে সে রাতারাতি পরিণত হয়ে যাবে একটা জুম্বিতে। তাকে দিয়ে যা খুশি করানো যাবে । আর যদি দশ মিলিগ্রাম বা তার বেশি ডোজ ব্যবহার করা হয় তাহলে ব্যক্তিটির রেসপিরিটি ফেলিওর হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।


 এটি অনৈতিক কাজেই ব্যবহৃত হয় সবচেয়ে বেশি। অপরাধীরা সাধারণত চুরি, ধর্ষণ বা কাউকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে এই ড্রাগ ব্যবহার করে। পাতলা এই পাউডারটি ভিকটিমের শরীরে প্রবেশ করানো হয়। কোন কাগজ বা ভিসিটিং কার্ডের মাধ্যমে। খাবারের মাধ্যমে মুখের ওপর ফু দিয়ে অথবা অনেক সময় হ্যান্ডশেক করার সময় ড্রাগ মেশানো সূক্ষ্ম পিন ভিক্টিমের হাতে ফুটিয়ে। ভিক্টিম কিছু বুঝে ওঠার আগেই এই ড্রাগ দ্রুত মিশে যায় রক্তের সাথে ভিক্টিম তার নিজস্ব চিন্তাশক্তি হারিয়ে ফেলে সে শুধুই অন্যের আদেশে কাজ করতে পারে। অর্থাৎ ভিকটিমকে যদি বলা হয় নিজেকে খুন করে ফেলতে ভিক্টিম ট্রাই করবে। এই ড্রাগটি ব্যবহারের ফলে কিছু সময়ের জন্য ভিক্টিমের মেমোরি সম্পূর্ণ ব্লক হয়ে যায়। 

সে নতুন করে কিছু ভাবতে পারে না এমনকি ড্রাগড অবস্থায় তার সাথে কি ঘটেছে তার কিছুই সে আর মনে করতে পারে না । এমনকি ভিক্টিমদের হিতাহিত জ্ঞান ফিরে আসবার পর তারা মামলাও করতে পারে না কারণ অপরাধী ব্যক্তির চেহারা বা নাম কিছুই তারা মনে করতে পারে না । স্কোপ আলোমিক ড্রাগের শিকার এক কলম্বিয়ান তরুণ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন তার সম্পূর্ণ এপার্টমেন্ট খালি। দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলেন আগের রাতে সেই তরুণ আরো দুইজন যুবক সহ নিজেই তার এপার্টমেন্টের সকল ফার্নিচার বের করে ভ্যানে তুলে দিয়েছেন। কিন্তু তার এসবে কিছুই মরেনি অর্থাৎ এই ড্রাগ ব্যবহার করে যে কেউ দিন দুপুরে আপনার সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে চলে যাবে এবং কেউ সন্দেহ করতে পারবে না। 

ড্রাগ রক্তে মিশে যাওয়ার পর আপনাকে যে যা বলবে আপনি বিনা বাক্য ব্যয় করে আপনি তাই করতে বাধ্য। স্কোপোলামিন এতটাই হিপনটাইজ করে ধরা সই করে যে কোন ব্যক্তিকে। স্কোপোলামিন কিন্তু আজকের আবিষ্কার নয়। সেই উনিশশো দশ সালে ডক্টর রবার্ট হোস সর্বপ্রথম লক্ষ্য করেন যে অবচেতনকারী ঔষধ কোপালুমিন রোগীর দেহে প্রবেশ করালে রোগী এমন এক মানসিক অবস্থার মধ্যে প্রবেশ করে। রোগী এক ধরনের ঘরের মধ্যে নিচ থেকে সকল সত্য গল্পের মতো বলতে শুরু করে। অর্থাৎ কোন মানুষের ওপরে স্কোপোলামিন প্রয়োগ করলে মানুষটি আপনা আপনি আপনি সকল সত্য প্রশ্নের উত্তরের প্রেক্ষিতে বলে দেয়। ডক্টর রবার্ট হোস নিরাপরাধ মানুষ ষড়যন্ত্রের শিকার হলে তাকে যন্ত্রণাদায়ক জিজ্ঞাসাবাদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে গোপন তথ্য আদায় করার জন্য সেনাবাহিনীর ডাক্তারগণ শত্রুপক্ষের স্পাইদের ওপর ব্যাপক হারে প্রয়োগ করতে থাকেন এই ওষুধগুলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেই এই ড্রাগ গ্রুপ সিরাম নামে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। বর্তমানে অনেক দেশে এই ট্রাক আইন সঙ্গতভাবে প্রয়োগ করা হয়। ফ্রুট সিরাম মানবদেহে ইনজেকশনের মাধ্যমে সরাসরি প্রবেশ করানো হয়। অথবা ট্যাবলেট হিসেবে মুখে বা বায়ু পথে ব্যবহার করা হয়। পরে এটি রক্তে প্রবেশ করে স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে স্পাইনাল ক্রর্ড এ প্রবেশ করে। স্পাইনাল করর্ড থেকে ওষুধ, মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল কোয়ার্টিক্স এ প্রবেশ করে। মস্তিষ্কের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী অংশগুলো ট্রুপ সিরামের প্রভাবে প্রভাবিত হয়। এর ফলে একই সাথে একাধিক সংকেত মস্তিষ্কে প্রেরিত হলে ড্রাগের প্রভাবে শুধু একটি সংকেত বিশ্লেষিত হয়। বাকি সংকেতগুলো থাকে উপেক্ষিত। ট্রুথ সিরামের প্রভাবে হেলোসিনেশান তৈরি হয়। এ সময় মানুষ কোন কথা বলতে থাকলে স্মৃতি থেকে শুধু সত্য কথাই বলতে থাকে। চিন্তা করে মিথ্যা বলতে পারে না। 

আমরা সবাই জানি, মিথ্যা কথা বলার সময় চিন্তা করে সাজিয়ে গুছিয়ে বলতে হয়। ট্রুথ সিরাম প্রয়োগ করলে মস্তিষ্কের একসাথে একাধিক চিন্তা করার ক্ষমতা লোভ পায়। তাই মানুষ মিথ্যা না বলে শুধুই বলে সত্য কথা। ট্রুথ সিরাম কি সত্যিই কাজ করে? বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় গ্রুপ সিরাম পঁয়তাল্লিশ শতাংশ ক্ষেত্রে বেশ ভালো কেরামতি দেখায়। কিন্তু বাকি ক্ষেত্রে এটি ভালো কাজ করে না। কুৎসি নামের প্রভাবে অপরাধী যে জবানবন্দি দেয় তার সত্যতা. অনেক দেশের আদালত কর্তৃক গৃহীত নয়। আবার তথ্য অনুসন্ধানকারী যখন অপরাধীর কাছ থেকে তথ্য গ্রহণ করে তখন সে বুঝতেই পারে না যে সেই তথ্যটা সত্য না মিথ্যা? অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে সত্যি সত্যি যদি কাজ করে তাহলে কেন সবসময় এই ট্রুপসিরাম ব্যবহার করা হয় না? বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে ট্রুথ সিরামের প্রভাবে যে হ্যালুসিনেশান তৈরি হয় তা অপরাধীর মস্তিষ্ককে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। অনেকে তার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। কেউ বা চিরদিনের মতো পাগল হয়ে যায়। অনেকে কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে। একজন অপরাধীকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে এ ধরনের শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার আইনসংগত নয়। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের পর্যায়ে পরে। আজি আজ এই পর্যন্তই. কেমন লাগলো ডেভিল স্প্রেড বা শয়তানের নিঃশ্বাস তা কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না।

  


মন্তব্যসমূহ

Blog Posts

লুসিড ড্রিম কাকে বলে ? লুসিড ড্রিম কিভাবে দেখতে হয় ?

 স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ করার কথা ভেবেছেন কখনো? নিশ্চয়ই ভাবছেন জেগে জেগে দিবাস্বপ্ন দেখার কথা বলছি না তো? কিন্তু না, রীতিমতো ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্নও নিয়ন্ত্রণের কথাই বলছি, আপনার ইচ্ছামত স্বপ্ন দেখবেন। ইচ্ছা মতো নিয়ন্ত্রণ করবেন। আর পছন্দ না হলে অর্থাৎ দুঃস্বপ্ন দেখা শুরু করলে সেটার গতিপথ পাল্টে দেবেন একেবারে নিমেষে। আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় এটা খুবই সম্ভব একে বলা হয় লুসিভ ড্রিম। লুসিড ড্রিমিং এর সাথে আপনারা অনেকেই হয়তো পরিচিত আছেন। অনেকে পরিচিত থাকলেও হয়তো এটা কেন হচ্ছে বা কিভাবে হচ্ছে তা নিয়ে বেশ দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছে এসবেরই উত্তর মিলবে আজকের এই লিখাতে।   লুসিড ড্রিম অর্থ কি? সহজ বাংলায় অনুবাদ করতে গেলে বলা যায় লুসিড অর্থ পরিষ্কার. অর্থাৎ স্পষ্ট আর dream মানে তো আমরা সবাই জানি যে স্বপ্ন। লুসিড ডিম হলো সেই স্বপ্ন যে আমাদের স্পষ্ট ভাবে মনে থাকে এবং স্বপ্ন চলাকালীন সময়েও আমরা এ উপলব্ধি করতে পারি যে এটি বাস্তব নয় বরং এটি স্বপ্ন কিন্তু শুধুমাত্র আক্ষরিক অর্থ দিয়ে লুসিড ড্রিম ব্যাখ্যা করলে ভুল হবে একটু অন্যভাবে বলা যাক ।  মনে করুন স্বপ্নে আপনি কি পাহাড়ের উপর থেকে দ্রুত গ...

ন্যানো টেকনোলজি কিভাবে কাজ করে ?

  যদি বলি আপনার চোখ দেখতে পারে না এমন গভীর ও প্রায় অনাবিষ্কৃত একটা পৃথিবী আছে. হয়তো বলতে পারেন যে মহাবিশ্বে কত গ্রহই তো আছে? সব খোঁজ কি আমরা পেয়েছি? কিন্তু যদি বলি আমাদের এই পৃথিবীর ভেতরে আরো একটি জগত আছে এবং যে জগৎ ছড়িয়ে আছে আমাদের গোটা বিশ্ব জুড়ে. এইবার হয়তো নড়েচড়ে বসবেন. হ্যাঁ আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে এমন এক রাজ্য যে আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না. এটাকে বলা হয় অণুবীক্ষণিক বিশ্ব. এই অণুবীক্ষণই বিশ্ব প্রচন্ড আকর্ষণীয় ও চমকে দেওয়ার মতো. কি কি ঘটছে এখানে তা আমার আপনার কল্পনারও বাইরে. এটা যেন কোনো ভিন গ্রহ বাসীদের রাজ্য. সম্ভাবনার দুয়ার খুলে রাখা আছে এই অণুবীক্ষণিক বা nano বিশ্বে.  ন্যানো কি ন্যানো হলো পরিমাপের একক। এক মিটারের একশো কোটি ভাগের এক ভাগ হচ্ছে এক ন্যানো। আর ন্যানো টেকনোলজি হলো বিজ্ঞানের এই অতি ক্ষুদ্র স্তরে একটা কিছু তৈরী করা আসলে শুধু তৈরি করা না. ন্যানোমিটার স্কেলে পরিবর্তন, পরিবর্তন, ধ্বংস বা সৃষ্টি সম্পর্কিত টেকনোলজিকেই ন্যানো টেকনোলজি বলে. অর্থাৎ ন্যানোমিটার স্কেলে পরিমিত যেকোনো বিষয়ে বহুমাত্রিক টেকনোলজিকে ন্যানো প্রযুক্তি বা ন্যানো টেকনোলজি বলা যে...

স্টকহোম সিন্ড্রম কি ? স্টকহোম সিন্ড্রম কেন হয় ?

ধরুন আপনাকে কেউ অপহরণ করল. আটকে রাখল অজানা কোন জায়গায়. কিংবা জিম্মি করল কোন বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য. হয়তো আপনাকে মেরে ফেলাটাই অপহরণকারীদের লক্ষ্য. পুলিশ আপনার খোঁজ পাচ্ছে না. এদিকে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় অস্থির হয়ে আছে আপনার স্বজনরা. এক পা দুই সপ্তাহ পার হয়ে হয়তো আপনাকে উদ্ধার করা হল. এই কয়েকটা দিন আপনি সূর্যের আলো দেখেননি. বন্দি অবস্থায় এক একটা ঘন্টাকেই আপনার কাছে মনে হয়েছে এক একটা মাসের মতো লম্বা. মুক্তির পর অপহরণকারীদের প্রতি কেমন অনুভূতি কাজ করবে আপনার? হাতের কাছে পেলেই তাদেরকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করবে তাই না? কিন্তু সেটা না করে বাড়ি ফেরার পর আপনি যদি সেই অপহরণকারীদের প্রশংসা শুরু করেন? তাহলে লোকজন আপনার দিকে কুঁচকে তাকাবে বৈকি? আপনি যদি অপরাধের তদন্তে পুলিশকে ঠিকমতো সাহায্য না করেন, আপনাকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটাই কিন্তু স্বাভাবিক. তার চেয়েও অবাক করার মতো ব্যাপার. কখন ঘটবে জানেন? যখন আদালতে গিয়ে আপনি বলবেন. আপনাকে যারা অপহরণ করেছিল তাদের প্রতি আসলে আপনার কোন অভিযোগ নেই. আপনি তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করতে চান. কি ভাবছেন? এমন পাগলামি আপনি কেন করবেন? পাগলামি বলুন আর যাই বলুন. ...

মিনিমালিজম কি ? কিভাবে মিনিমালিস্ট হওয়া যায় ?

মিনিমামলিজম এই ধারণাটি বিগত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং এর যথেষ্ট কারণও আছে. এই পুরো ব্যাপারটা কি? সেটাকে সঙ্গায়িত করা যায় এভাবে যে,  মিনিমালিজম হচ্ছে যা আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সেগুলোকে ধারণ করা এবং বাকি সব কিছু যা আমাদের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে নেয় সেগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করা।   অর্থাৎ কোন কোন বিষয়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন জিনিসগুলোকে আমাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা থাকা এবং বাকি সব ত্যাগ  করে দেয়. সেগুলো নিয়েই জীবন ধারণ করা. কিন্তু এমন সংজ্ঞায়ন সত্ত্বেও minimalism কোন ধরাবাধা জীবন ব্যবস্থা নয় বা মিনিমালিস্ট হতে হলে কোন নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলতে হবে এরকমটিও কিন্তু নয়. মিনিমালিস্ট লাইফ স্টাইল এমন একটি বিষয় যা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য স্বতন্ত্র। এক্ষেত্রে মূল বিষয়টি হচ্ছে সত্যিকার অর্থে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা নিয়ে সেই অনুযায়ী জীবন ধারণ করা. প্রিয় দর্শক চলুন দেখি মিনিমালিজম কিভাবে আপনার জীবনধারা বদলে দিতে পারে।  মিনিমালিস্ট জীবন অবশ...

সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান কি ?

সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান দু হাজার বারো সালের চৌঠা জানুয়ারি। ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ ডট ফোর চ্যান ডট কম নামের ওয়েবসাইটের বুলেটিন বোর্ডে ছবি সহ একটি ম্যাসেজ পোস্ট করা হয়. ওয়েবসাইটের নীতিমালা অনুযায়ী ছবি প্রকাশকারীর নাম পরিচয় গোপন রাখা হয়. অজ্ঞাত পোস্ট করি সেই ছবিতে ব্যবহারকারীদের চিত্রের মাঝেই লুকানো একটি বার্তা উন্মোচন করার জন্য চ্যালেঞ্জ জানান. সেই মেসেজটিতে লেখা ছিল হ্যালো আমরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের খুঁজছি তাদের খোঁজার জন্য আমরা একটা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি । এই ছবিতে একটা মেসেজ লুকানো আছে এটাকে খুঁজে বের করো । এটাই তোমাদের আমাদের কাছে নিয়ে আসবে. আমরা সেসব স্বল্প সংখ্যক ব্যক্তিকে দেখার অপেক্ষায় আছি যারা এটি সম্পূর্ণ করতে পারবে. Good luck । আর নিচে ছিল একটি কোড থ্রি থ্রি জিরো ওয়ান. পুরো ইন্টারনেট দুনিয়া তোলপাড় হয়ে গেল যেন হঠাৎ করে. পৃথিবীর সেরা হ্যাকার এবং কোড সমাধানকারীরা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা প্রমানের জন্য এই পরীক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়লো আর এই রহস্যময় ধাঁধার নাম দেওয়া হলো সিকাডা থ্রী থ্রী জিরো ওয়ান।  সিকাডা অর্থ মত বা ঘুগরি পোকা. ছবি পোস্ট করার কিছুক্ষণের মাঝেই গ...

সারোগেসি কি ?

সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান ধারণ করা নিয়ে এখনো বহু বিতর্ক আছে. শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বেই এই পদ্ধতি নিয়ে তর্ক বিতর্কের শেষ নেই.  এটার আইনি প্রক্রিয়াও জটিল। কারণ এটি একেক রাষ্ট্রে. শারোগেসি আইন একেক রকম. নারী মা হবেন প্রাকৃতিক নিয়ম সমাজ এমনটাই দেখতে অভ্যস্ত. কিন্তু কোন কারণে মা হবার ক্ষমতা না থাকলে তাকে পরিবার ও আশপাশ থেকে যে পরিমাণ কটু কথা শুনতে হয় তা সাধারণ মানুষের ধারণারও বাইরে.   সরোগেসি বিষয়টি কি? চিকিৎসা শাস্ত্রের অগ্রগতি এমন মায়েদের সামনে এনেছে যারা গর্ভ ভাড়া দিয়ে নিজে বাঁচেন অন্যদের মাতৃ সুখ দেন । একজন নারীর গর্ভে অন্য দম্পতির সন্তান ধারণের পদ্ধতিকে সারোগেসি বলা হয়.সারোগেসির এই  পদ্ধতি বেশ দীর্ঘকালীন. আইভিএফ পদ্ধতিতে স্ত্রী ও পুরুষের ডিম্বাণু শুক্রাণু দেহের বাইরে নিষিক্ত করে তা নারীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়. কিন্তু এখানেও জটিলতা. কেন? সে বিষয়ে পরে আসছি. বাংলাদেশ সহ বহু দেশই এই সারোগেসি একরকম ভাবে নিষিদ্ধ. সুতরাং বিষয় টি  সংবেদনশীল. এমনকি বেশিরভাগ ধর্মেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা. চলুন কথা বলি সারোগেসি মাদার সম্পর্কে। আইভিএফ বা টেস্ট টি...

কিভাবে লিমিটলেস হওয়া যায় ? লিমিটলেস আসলে কিভাবে কাজ করে ?

এনজিটিপিল,  এটা এমন এক পিল যা আপনাকে করবে আল্ট্রা ফোকাসড. দেবে দুর্দান্ত মোটিভেশন. বের করে আনবে আপনার সর্বোচ্চ সম্ভাবনা. আপনি হয়ে উঠবেন আনস্টপল. বাস্তবতা পাবে প্রতিটি স্বপ্ন. কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এমন কোন পিলের অস্তিত্ব নেই. ফলাফল আপনি আটকে আছেন একটি খাদে. সারাক্ষণ ক্লান্তি নিয়ে হয়ে উঠছেন আনপ্রোডাক্টিভ. নষ্ট হচ্ছে ক্রিয়েটিভিটি. সময় গড়িয়ে যায়. ঋতুর পরিবর্তন ঘটে. কিন্তু আপনি ডুবে থাকেন এক হতাশায় যাতে আপনি দিন দিন পিছিয়ে পরছেন. আপনি যা যা এতদিন অর্জন করবেন ভেবেছিলেন তা কিছুই আপনি অর্জন করতে পারেননি । নিজেকে সান্তনা দিচ্ছেন আগামীকাল হবে ভিন্ন। কিন্তু তা কখনোই হয়ে ওঠে না এখন যদি আপনাকে বলি কোনো জাদুকরী পিলের সাহায্যে নয় বাস্তবিক লিমিটলেস হয়ে ওঠা সম্ভব।  একদম প্রমাণিত পদ্ধতিতে যা একেবারে ফ্রিতে ব্যবহার করা সম্ভব.  তো আছেন তো শেষ পর্যন্ত ?  Limit less হওয়ার যাত্রায় ।  স্টেপ ওয়ান : এনার্জি--  মাত্র কয়েক মাস আগে আমি নিজেও আপনার মতো কর্মশক্তিহীন অনুভব করতাম. সামান্য কাজেই আসতো অবসন্নতা, গেয়ে ধরতো ক্লান্তি একদিন হঠাৎ টের পেলাম আমি নিজেই নিজের energy নি...

পেগাসাস স্পাইওয়ার কি ?

গত কিছুদিন ধরেই বিশ্ব রাজনীতি এবং প্রযুক্তি জগৎ এই দুই জায়গাতেই আলোচনার বিষয়বস্তু একটাই। সেটা হচ্ছে পেগাসাস স্পাইওয়ার. বিশ্বজুড়ে নানান দেশের মানবাধিকার কর্মী সাংবাদিক আইনজীবী ও রাজনীতিকদের ফোনের নজরদারি চালানোর ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ইজরায়েলের বেসরকারি কোম্পানি nso গ্রুপের তৈরি করা এই সফটওয়্যার নিয়ে এখন তুমুল তরজা চলছে দুনিয়া জুড়ে । চলুন কথা বলি দুনিয়া ওলট পালট করে দেওয়া স্পাইওয়ার সম্পর্কে । পেগাসাস মূলত একটি নজরদারি বিষয়ক সফটওয়্যার । ইজরাইলের সংস্থা এনএসও ই সফটওয়্যার তৈরি করেছে। যা দিয়ে যে কারো মোবাইলে আড়ি পাতা যায়. এটা কিন্তু সাধারণ কোন নজরদারি নয়. আগে ফোনে আড়ি পেতে শুধু দুই প্রান্তের কথাবার্তা শোনা যেত. আর সফটওয়্যারের মাধ্যমে গোটা ফোনটারই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হ্যাকাররা. ফোনের কথাবার্তা WhatsApp এর চ্যাট, ছবি, ফোনে কি কি তথ্য আছে সবই জানা যায়. আরো ভয়ানক ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল যিনি ব্যবহার করছেন তিনি জানতেই পারেন না যে তার ফোন হ্যাক করা হয়েছে. সমস্ত তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর কাছে. কিন্তু কারো ফোনে পেগাসাস software install করতে হলে তো সেই ফোনটাকে...

রেট রেস কি ?

      আপনি ঠিক কখন ইঁদুর দৌড়ে যোগ দিয়েছেন এটা হিসাব করা কঠিন. কিন্তু নিশ্চিত থাকুন আপনি এই দৌড়ে আছেন. ক্লাস eight এ পড়ার সময়ের কথা মনে আছে? সামনে বৃত্তি পরীক্ষা পাটিগণিত বীজগণিতের অংক প্যাঁচ লাগাচ্ছে বিজ্ঞানের জটিল সব সূত্র ভোরে ওঠে প্রাইভেট টিউটরের বাসায় ছোটা রাত জেগে পড়াশোনা. বয়সের তুলনায় অনেক বেশি কর্ম ব্যস্ত একটা সময় নিশ্চয়ই কাটিয়েছেন তখন? আমরা সবাই কাটিয়েছি. সেই সময় নিশ্চয়ই অভিভাবক বলেছে এই তো আর কটা দিন. বৃত্তি পরীক্ষা শেষ হলেই জীবন শান্তি আর শান্তি. জীবনের নানা এপিসোডে আপনি এই কথাগুলো শুনেছেন অনেকবার অনেকের মুখে. এসএসসি পরীক্ষাটা দাও, কলেজে উঠলেই তো স্বাধীনতা. একবার ভার্সেটিতে উঠতে পারলেই জীবন হবে আনন্দে ভরপুর. একবার জব লাইফে ঢোকো. নিজের টাকায় আয়েশ করার মজাই অন্যরকম. শুনেছেন না এসব?  বয়স ঘড়ির ত্রিশের প্রান্তে দাঁড়িয়ে হিসেবগুলো মেলাতে পারেন কি? কি মনে হয়? এই এপিসোডগুলোর কোনোটা পার হবার সময় জীবন খানিকটা হলেও সহজ হয়েছে? সুন্দর হয়েছে? হয়নি, হবেও না, মিথ্যা একটা মরীচিকার আশায় আমরা ছুটেছি ঠিকই আমাদের ছোটানো হয়েছে, কিন্তু হিসাব মেলেনি ছুটত...

ডাচ ডিজিজ কি ? অর্থনীতি কিভাবে রোগে ভুগতে পারে ?

সো হোয়াট দ্য হেল দিস ডাচ ডিজিজ? ডাচ ডিজিজ শব্দটা শুনলে আপনার স্বাভাবিক ভাবেই মনে হবে এটা কোন রোগের নাম । হ্যাঁ এটা একটা রোগ. তবে মানুষের নয়. কোন প্রাণীরও নয়. তাহলে? এটা মূলত অর্থনীতির একটা সিন্ড্রোম. কিন্তু অর্থনীতির টার্মের সঙ্গে ডিজিজ কথাটা যুক্ত হল কেন? ডাচ বা নেদারল্যান্ড দেশটারই বা কি ভূমিকা এতে?  না এটা বুঝতে আপনাকে অর্থনীতির ছাত্র হতে হবে না ।কিন্তু বিষয়টা বেশ মজার দু হাজার সতেরো সালে বুকিং ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত ডাচ ডিজিজ এন্ড ইকোনমিক ইলনেস ইজি টু ক্যাচ ডিফিকাল্ট টু কিওর শিরোনামের আর্টিকেলের শুরুতেই বলা হয়ে ছিল- what a persistantly low oil price, dose to oil richan prises like what a long cold winter dust to people একথার তাৎপর্য কি?  সহজ বাংলায় বুঝিয়ে বলা যায় যদি বিশ্ববাজারে ক্রমাগতভাবে তেলের দাম কমতে থাকে তখন তেল সমৃদ্ধ তেলের ওপর ভাবে নির্ভরশীল দেশগুলোর অর্থনীতি নানান সমস্যায় ভুগতে পারে. এখানে তেল একটা রূপক মাত্র. তেলের জায়গায় চাল, ডাল, লবণ, চিনি যেকোনো কিছুই হতে পারে. হতে পারে কোন শিল্প যেমন টেক্সটাইল গার্মেন্টস বা ইনফরমেশন টেকনোলজিও. মূল বিষয়টা হচ্ছে...